ফাইল চিত্র।
রাষ্ট্রপতি পদে রামনাথ কোবিন্দ প্রার্থী হওয়ার পরে নীতীশ কুমার ‘ইতিবাচক’ সাড়া দিলেও তাঁর জোটসঙ্গী লালু প্রসাদ সটান খারিজ করেছেন। সমাজবাদী নেতা মুলায়ম সিংহ যাদব সমর্থনের কথা বললেও তাঁর ছেলে অখিলেশ যাদব বলেননি। কাকতালীয় হলেও সেই লালুর পরিবার আর অখিলেশ জমানার দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্তেই গতি বাড়িয়েছে কেন্দ্রের সংস্থাগুলি।
লালু প্রসাদের পরিবারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযানে নেমেছে আয়কর দফতর। বেনামি সম্পত্তি রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। দিল্লি ও বিহারে বেশ কিছু সম্পত্তি বাজেয়াপ্তও করেছে আয়কর দফতর।
স্বাভাবিক ভাবেই বিরোধী শিবিরে প্রশ্ন উঠছে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সমর্থনের জন্যই কি চাপ বাড়াচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার?
আগামিকাল আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। ভারতের মূল অনুষ্ঠানটিতে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী আজই পৌঁছে গিয়েছেন লখনউতে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে নৈশভোজে হাজির ছিলেন মুলায়ম সিংহ যাদব। তিনি আগেই সরাসরি রামনাথ কোবিন্দকে রাষ্ট্রপতি পদে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁর ছেলে উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ এখনও রাহুল গাঁধীর সঙ্গেই থাকতে আগ্রহী। আর এমনই এক সময়ে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার অখিলেশ জমানার ‘গোমতী রিভার ফ্রন্ট’ প্রকল্পে দেড় হাজার কোটি টাকার অনিয়মের তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে। বিজেপির মতে, এক বার সিবিআই তদন্ত শুরু হলে অখিলেশ সরকারের রাঘববোয়ালরা জালে পড়বে।
আরও পড়ুন: পাশে শিবসেনাও, নিশ্চিন্ত রামনাথ
একই ভাবে বিহারেও যে লালু গতকালই রামনাথ কোবিন্দকে ‘আরএসএসের লোক’ বলে সমর্থনের প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন, আজ আয়কর দফতর তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ করেছে। ১ হাজার কোটি টাকার বেনামি সম্পত্তি এবং কর ফাঁকির মামলায় লালুর মেয়ে মিসা ভারতীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছিল আয়কর দফতর। কিন্তু তিনি না যাওয়ায় আয়কর দফতর ১৬৫ কোটি টাকার ‘বেনামি’ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। আয়কর দফতরের অভিযোগ, বাজেয়াপ্ত সম্পত্তিগুলি বিভিন্ন সংস্থার নামে থাকলেও আসল মালিক লালুর মেয়ে মিসা, লালুর স্ত্রী রাবড়ী দেবী, রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও লালু-পুত্র তেজস্বী-সহ যাদব পরিবারের সদস্যেরা। বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে দিল্লির পালাম ফার্মসের খামারবাড়ি, ফ্রেন্ডস কলোনির বাড়ি, বিহারের জালালপুরের বেশ কিছু জমি।
তেজস্বীর দাবি, পুরো ঘটনাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।
বিহারের বিজেপি নেতা সুশীল মোদীর অবশ্য দাবি, লালুর পরিবারের আরও বেনামি সম্পত্তি রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে পটনা শহরে রাবড়ী দেবীর ১৮টি ফ্ল্যাট ও ১৮টি পার্কিং। সব মিলিয়ে ওই সম্পত্তির দাম প্রায় ২০ কোটি টাকা। বিজেপির অভিযোগ, ২০০৪ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে চাকরি দিয়ে অনেকের কাছ থেকে জমি লিখিয়ে নিয়েছিলেন লালু। সেই জমিতেই তৈরি হয়েছে ফ্ল্যাট। সেখানেই ১৮টি ফ্ল্যাট রয়েছে রাবড়ী দেবীর নামে।
আওয়ামি কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে লালু প্রসাদ ও রাবড়ী দেবীর অ্যাকাউন্ট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সুশীল। পটনা শহরে লালু প্রসাদের মা মরছিয়া দেবীর নামেও ১০টি ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানান তিনি। তাঁর দাবি, ওই অ্যাপার্টমেন্টের জমির দাম আওয়ামি ব্যাঙ্কের টাকা থেকে দেওয়া হয়েছে। টাকা দিয়েছেন আনোয়ার আহমেদ নামের এক ব্যক্তি। লালুর বাড়িতে কাবাব তৈরি করতেন আনোয়ার। সে কারণে সকলে তাঁকে ‘কাবাব মন্ত্রী’ নামেই চিনতেন। পরে আরজেডির বিধান পরিষদের
সদস্য হন। নোটবন্দির সময়ে আওয়ামি ব্যাঙ্কে অভিযান চালিয়েছিল আয়কর দফতর।
বাজেয়াপ্ত বেনামি
দিল্লির পালাম ফার্মসে খামারবাড়ি- বাজার মূল্য ৪০ কোটি
দিল্লির নিউ ফ্রেন্ডস কলোনিতে বাড়ি- বাজার মূল্য ৪০ কোটি
বিহারের জালালপুরে ন’টি প্লট- বাজার মূল্য ৬৫ কোটি
বিহারের জালালপুরে তিনটি প্লট- বাজার মূল্য ২০ কোটি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy