মুলায়ম সিংহ যাদব
বাবার থেকে দলের জাতীয় সভাপতির পদ ছিনিয়ে নিয়ে কথা দিয়েছিলেন, ভোটে জিতে আবার তা ফিরিয়ে দেবেন। উত্তরপ্রদেশের ভোটে সমাজবাদী পার্টির ভরাডুবির পর ফের দলের রাশ অখিলেশের থেকে মুলায়মের হাতে যাচ্ছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গেল।
আজ লখনউতে সপা-র জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের পর অখিলেশ যাদব নিজেই সেই জল্পনা উসকে দিয়ে মন্তব্য করেছেন, দলীয় সংগঠন ঢেলে সাজতে বিভিন্ন পদে নির্বাচন হবে। জাতীয় সভাপতির পদেও ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হয়ে যাবে। আজকের বৈঠকে অখিলেশের আমন্ত্রণ সত্ত্বেও হাজির হননি মুলায়ম সিংহ যাদব। গরহাজির ছিলেন তাঁর ভাই শিবপাল যাদব এবং আজম খানও। দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীরা অবশ্য চাইছিলেন, নেতারা এ বার বিবাদ ভুলে এককাট্টা হোন। কিন্তু মুলায়ম-শিবপালের গরহাজিরা দেখে সপা-নেতারা মনে করছেন, ক্ষমতা ফিরে না পেলে দলীয় দফতরমুখো হবেন না মুলায়ম।
দলের সংগঠনকে চাঙ্গা করতে, বিশেষত নিজস্ব যাদব-ভোটব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে আজ দলীয় বৈঠকের পরেই যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে নিশানা করেছেন অখিলেশ। অভিযোগ তুলেছেন, জাতপাতের ভিত্তিতে পুলিশবাহিনীতে সাসপেন্ড-বদলি করা হচ্ছে। নিশানা করা হচ্ছে শুধু মাত্র যাদবদের। আজই যোগী-সরকার আইপিএস অফিসার হিমাংশু কুমারকে সাসপেন্ড করেছে। বিহারের মোতিহারির বাসিন্দা হিমাংশু ২০১০ সালের আইপিএস। তিন দিন আগে তিনি টুইট করে অভিযোগ তোলেন, যোগী-সরকারের আমলে শুধু মাত্র যাদব পদবীর অফিসারদের বেছে বেছে বদলি করা হচ্ছে। হিমাংশুর সেই টুইট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। বিষয়টি নিয়ে সংসদে সরব হন বিরোধীরা। বিষয়টি নিয়ে বয়ান দিতে হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে। তার পরেই হিমাংশুকে রাজ্য পুলিশের সদর দফতরে ডিজিপি-র অফিসে বদলি করা হয়। আজ তাঁকে সাসপেন্ড করার পর হিমাংশু টুইট করেন, ‘একমাত্র সত্যেরই জয় হবে’।
আরও পড়ুন: জুলুমে বন্ধ পাঁঠা, মুরগিও
অখিলেশের অভিযোগ, ‘‘এখনও পর্যন্ত সরকারি দফতরে সাফাই অভিযান ও ইভটিজিং রুখতে অ্যান্টি-রোমিও বাহিনী ছাড়া আর কোনও কাজ হয়নি।’’ বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সরকারে এলে প্রথম মন্ত্রিসভাতেই কৃষি ঋণ মকুব হবে। অখিলেশ আজ কটাক্ষ করেছেন, ‘‘এখনও মন্ত্রিসভার বৈঠকই হল না!’’ ভোটে জয়ের পর লোকসভায় দাঁড়িয়ে যোগী মন্তব্য করেছিলেন, তিনি অখিলেশের থেকে এক বছরের বড়, রাহুলের থেকে এক বছরের ছোট বলেই দু’জনের জোটের মাঝখানে চলে এসেছেন। অখিলেশ এ দিন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বয়সে বড় হতেই পারেন। কিন্তু কাজে এখনও অনেক পিছিয়ে।’’
ফের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী অখিলেশ আজ জানান, ২০২২-এ ক্ষমতায় ফিরলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের শুদ্ধিকরণ করাবেন। যেমন যোগী করিয়েছেন। সপা-নেতারা বলছেন, ফের মুখ্যমন্ত্রীর গদি দখলের আগে দলের সভাপতির গদি দখলে রাখতে হবে অখিলেশকে। কারণ ভোটের পরে সভাপতির পদ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বললেও ভোটে জিতলে যে অখিলেশের হাতেই দলের রাশ থাকত, তা কারও অজানা ছিল না। কিন্তু বিজেপির কাছে হারের পরে ফের মুলায়মকে ফিরিয়ে আনার দাবি উঠতে শুরু করেছে দলের একাংশের মধ্যে। এ বারে অখিলেশ কী করেন, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy