খারাপ যোগাযোগ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়েই করিমগঞ্জের রাঙ্খল বস্তিতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে জঙ্গিরা। গত রাতে দুর্গাবাজার এলাকায় চারজনকে অপহরণের পর এই অভিযোগ করছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকার লোকজন এমনিতেই দরিদ্র। কিন্তু জঙ্গিরা প্রতি বছরই সেখানকার বাসিন্দাদের অপহরণ করে জঙ্গিরা মুক্তিপণ আদায় করে। কিন্তু দুর্গম রাস্তার জন্য কখনও পুলিশবাহিনী সেখানে টহল দেয় না।
গতকাল রাতেও ২৫-৩০ জন জঙ্গি দুর্গাবাজারের রাংখল বস্তিতে আসে। অনেকের হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। শুধু চারজনকে অপহরণ করাই নয়, অন্যদের থেকে টাকা, মোবাইল ফোন এমনকী টর্চলাইট পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়ে গিয়েছে তারা। স্থানীয়দের ধারণা অপহরণের নেপথ্যে রয়েছে ‘উদলা’ গোষ্ঠীর ধন্যরাম বাহিনী। জঙ্গিদের হাতে মোবাইল ফোন খোয়ানো সজল দে জানান, গত কাল রাতে রাংখলবস্তির হোম খাশিয়ার ছেলের বিয়ের নিমন্ত্রণ খেয়ে আসছিলেন তাঁরা। হঠাৎ করে জলপাই রঙের পোশাক পরিহিত জঙ্গিরা পথ আগলে দাঁড়ায়। প্রথমে সজলবাবুরা ভেবেছিল তারা সেনাবাহিনীর লোক। কিন্তু লুঠপাট শুরু হতেই ভুল ভাঙে। সজলবাবুর মোবাইল নেওয়ার পরে, হাসান আলির পকেট থেকে ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় তেরা। সঙ্গে থাকা প্রভাত বৈষ্ণবকে অপহরণ করে। মোবাইল দিতে দেরি হওয়ার ‘অপরাধে’ লব বৈষ্ণবের দাঁতগুলো জঙ্গিরা গুঁড়িয়ে দেয়। বর্তমানে তিনি শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পাগলাছড়া পুঞ্জির ‘হেডম্যান’ সাইনিং খাসিয়াকে অপহরণ করতে চেয়েছিল জঙ্গিরা। কিন্তু বয়স্ক ওই ব্যক্তির হাঁটার ক্ষমতা না থাকায় তাঁকে সঙ্গে নেয়নি তারা। তবে হেমেন্দ্র বৈষ্ণব, রাখাল বৈষ্ণব ও আলতাফ হোসেনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
গত রাতেই করিমগঞ্জের এসপি প্রদীপরঞ্জন কর এলাকায় অভিযান চালিয়েছিলেন। কিন্তু অপহৃতদের কোনও হদিশ পাননি। অবশ্য জেলা থেকে অপহৃতদের সকলকেই মুক্তিপণ দিয়েই মুক্ত হতে হয়। তাই অপহৃতদের পরিবার ধরেই নিয়েছে পুলিশ কাউকে উদ্ধার করতে পারবে না। স্থানীয় জনগণ ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত থাকায় পুলিশ নিতান্ত বাধ্য না হলে এ সব এলাকা মাড়ায় না। ফলে দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে এলাকাটি। বিধায়ক বা রাজনৈতিক নেতারাও ভোটের সময় ছাড়া এই এলাকার কথা মনে রাখেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy