Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

সরকারি কাজে নাক গলাচ্ছেন লালু, দাবি বিজেপির

নীতীশের হাত ধরে লাভই হল লালুর। উপনির্বাচনে তিনটি আসন জিতলেন। দীর্ঘ ৯ বছর পরে সুযোগ পেলেন সরকারি কাজে নাক গলানোরও! দু’দলের জোট নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার উত্তরে কয়েক দিন আগে লালু বলেছিলেন, “নীতীশ আমার ছোটভাই। আমি ওঁকে বাঁচিয়েছি। ও বড়েভাইয়ের (লালু) কোলে বসবে না তো কোথায় যাবে?”

স্বপন সরকার
পটনা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৪ ০২:৫৫
Share: Save:

নীতীশের হাত ধরে লাভই হল লালুর। উপনির্বাচনে তিনটি আসন জিতলেন। দীর্ঘ ৯ বছর পরে সুযোগ পেলেন সরকারি কাজে নাক গলানোরও!

দু’দলের জোট নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার উত্তরে কয়েক দিন আগে লালু বলেছিলেন, “নীতীশ আমার ছোটভাই। আমি ওঁকে বাঁচিয়েছি। ও বড়েভাইয়ের (লালু) কোলে বসবে না তো কোথায় যাবে?” বিজেপি নেতারা এখন বলছেন, এ বার নীতীশেরই কাঁধে ‘চাপবেন’ লালু। জেডিইউকে সমর্থনের বিনিময়ে রাজ্য সরকারের কিছু কিছু ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করবেন আরজেডি প্রধান। নীতীশ-লালুর বন্ধুত্বে সেটাই অলিখিত চুক্তি।

এ নিয়ে কানাঘুষো শুরু হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের অন্দরমহলেও। সরকারের উচ্চপদস্থ অনেক কর্তার আশঙ্কা, প্রশাসনের কাজকর্মে রাজনীতির ছোঁয়া এ বার আরও বেশি হতে পারে। সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের ডিজি অভয়ানন্দকে সরিয়ে দেওয়ার পিছনে তেমন কোনও কারণই তাঁরা খুঁজছেন। পুলিশমহল থেকে সাধারণ মানুষের কাছে সদর্থক ভাবমূর্তি ছিল অভয়ানন্দের। অবসরের ছ’মাস আগে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তত দিনে কাছাকাছি এসেছেন নীতীশ, লালু। মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঁঝি জানিয়েছিলেন, ডিজি নিজেই সরে যেতে চেয়েছিলেন।

কিন্তু বিরোধীদের বক্তব্য, লালু-জমানায় বেতিয়ায় এসপি ছিলেন অভয়ানন্দ। সেই সময় যাদব গোষ্ঠীর কয়েক জন মাফিয়ার বিরুদ্ধে তিনি তদন্ত শুরু করেন। অভয়ানন্দকে বদলি করে গুরুত্বহীন দায়িত্ব দেন লালু। ক্ষমতা দখলের এক বছরের মধ্যেই অভয়ানন্দকে আইজি (সদর) করেন নীতীশ। পরে তিনি রাজ্য পুলিশের ডিজি হন। তবে, লালুর সঙ্গে নীতীশের জোট তৈরির পরই ছবিটা বদলাতে শুরু করে। পুলিশ দফতরে আরজেডি-র লোকজনের যাতায়াত বেড়ে যায়। এ নিয়ে ক্ষোভ ছড়ায়। কয়েকটি জেলার এসপি অভয়ানন্দকে নালিশ জানান। সদ্য-প্রাক্তন ডিজি সেই সময় ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন, এর পর রাজ্যে প্রশাসনিক কাজ করা কঠিন হয়ে উঠতে পারে। সেটা বুঝেই কি সরে দাঁড়ালেন? উত্তর দেননি অভয়ানন্দ। লালুর সঙ্গে তাঁর সদ্ভাব না-থাকার জন্য কি সরকার তাঁকে সরিয়ে দিল? জবাব মেলেনি সে প্রশ্নেরও।

সিওয়ানের প্রাক্তন আরজেডি সাংসদ, লালু-ঘনিষ্ঠ সাহাবুদ্দিন জেলে বসে জনতা-দরবার করছেন বলেও খবর রটেছে। যদিও তা মানতে নারাজ আইজি (কারা) প্রেম সিংহ মিনা। লালুর কাছের লোক হিসেবে পরিচিত আইপিএস গুপ্তেশ্বর পাণ্ডে নীতীশের আমলে গুরুত্ব হারিয়েছিলেন। আরজেডির সমর্থন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার পর তাঁকে আইজি (সদর) করেন জিতনরাম।

বিহারের বিরোধী দলনেতা, বিজেপির নন্দকিশোর যাদব বলেন, “বক্তিয়ারপুরে আরজেডি বিধায়কের বিরুদ্ধেও তোলা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ।” বিজেপির অভিযোগ, লালুকে সন্তুষ্ট রাখতে তাঁর অনুগামীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে জেডিইউ নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার। এ কথা মানতে চাননি আরজেডির মুখপাত্র মনোজ ঝা। তিনি বলেন, “ঈর্ষায় এ সব বলছে বিজেপি। মানুষকে তারা আর ভুল বোঝাতে পারবে না।” জেডিইউয়ের রাজ্য সভাপতি বশিষ্ঠ নারায়ণ সিংহেরও বক্তব্য, “বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নতুন পথ মিলেছে। তা নষ্ট করতে তৎপর বিরোধীরা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE