Advertisement
০৬ মে ২০২৪

জলঘোলা বিজেপির, ক্ষমাপ্রার্থী ফিরদৌস

বিতর্কের মধ্যেই তৃণমূলের প্রচারে যোগদানের কথা স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন ফিরদৌস।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৫৬
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গের ভোটে তৃণমূলের হয়ে বাংলাদেশি অভিনেতা ফিরদৌস আহমেদের প্রচারের অভিযোগকে ঘিরে বুধবার দিল্লিতে হাওয়া গরম করতে নেমে পড়েছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার ভারত ছাড়ার নোটিস দেওয়ার পরে ওই বিদেশি অভিনেতা অবশ্য রাতের বিমানেই বাংলাদেশে ফিরে গিয়েছেন।

বিতর্কের মধ্যেই তৃণমূলের প্রচারে যোগদানের কথা স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন ফিরদৌস। বুধবার ঢাকা থেকে এক বিবৃতিতে ওই অভিনেতা জানান, ভারতের নির্বাচন নিয়ে বিশ্ব জুড়ে যে-কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে, তিনিও তার অংশীদার। আবেগের বশে প্রচারে যোগ দিয়েছিলেন। সেটা যে ভুল, মেনে নিয়েছেন অভিনেতা।

ফিরদৌস-কাণ্ড নিয়ে এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করেন বিজেপির মুখপাত্র তথা সাংসদ জিভিএল নরসিংহ রাও। তিনি প্রশ্ন তোলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনী প্রচারের জন্য বাংলাদেশ থেকে অভিনেতাদের আনছেন কেন? ভারতে কি বাংলাভাষী অভিনেতা কম পড়েছে? নাকি, তৃণমূল-সমর্থক তারকা নেই? মমতার উদ্দেশে ওই বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘আপনারা অভিনেতাদের লোকসভার টিকিট দিচ্ছেন। সাংসদ বানাচ্ছেন। তার পরেও কেন বাংলাদেশ যাচ্ছেন আর্টিস্ট খুঁজতে? এর কারণ একটাই। আপনারা একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে তুষ্ট করতে চাইছেন।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিতর্কে ইতি টানতে বিবৃতি দিয়েছেন ফিরদৌস। তিনি লিখেছেন: ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা অগাধ।...বুঝতে পেরেছি, আবেগের বশবর্তী হয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে এই নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করাটা আমার ভুল ছিল। যেটা থেকে অনেক বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।...একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে অন্য একটি দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ কোনও ভাবেই উচিত নয়। আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’’

অন্য এক বাংলাদেশি অভিনেতাও বাংলায় শাসক দলের হয়ে প্রচার করছেন বলে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে রাজ্য বিজেপি। ওই দলের সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘দমদমের তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায়ের হয়ে আর এক জন বাংলাদেশি অভিনেতাও প্রচার করছিলেন। তাঁর নাম গাজি নুর। মদন মিত্র তাঁকে প্রচারের বিষয়ে বোঝাচ্ছিলেন। অভিযোগ জানিয়েছি তাঁর বিরুদ্ধেও।’’ জয়প্রকাশবাবুর অভিযোগ, নুরও ভিসা-বিধি লঙ্ঘন করেছেন। ফিরদৌসের মতো তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। ‘‘যাঁরা নুরকে ডেকে এনেছেন, তাঁদেরও উপযুক্ত এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। সৌগতবাবু এবং কানাইয়ালাল আগরওয়াল (রায়গঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী, যাঁর হয়ে ফিরদৌস প্রচার করছিলেন বলে অভিযোগ)-এর প্রার্থী-পদ বাতিল করা হোক,’’ দাবি ওই বিজেপি নেতার। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও)-এর অফিসের দাবি, এ বিষয়ে রিপোর্ট নির্বাচন সদনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম অবশ্য বলেন, ‘‘আমার মনে হয় না, গাজি নুর কারও প্রচারে গিয়েছিলেন। আমরা ধারণা, উনি ওঁর পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। বিজেপি এটা নিয়ে অপপ্রচার করছে। আর বেচারা ফিরদৌস শুটিংয়ে এসেছিলেন। বন্ধুরা যাচ্ছেন দেখে উনিও তাঁদের সঙ্গে যান। সিপিএম সারা জীবন বিদেশি মার্ক্স-লেনিনের মুখ দেখিয়ে ভোটে জিতল, কিছু হল না! আর এখন দু’জন চিত্রতারকাকে নিয়ে যত হইচই!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE