ছবি: পিটিআই।
মালাবার উপকূলে চিরকালের লড়াই বাম ও কংগ্রেসের। কিন্তু এ বার সেখানে বিজেপির অনুপ্রবেশের ভয় পাচ্ছিল কংগ্রেস। রাহুল গাঁধীর আগমনে সেই আতঙ্ক কাটিয়ে এখন জোড়া ফায়দার আশা করছেন কেরল কংগ্রেসের নেতৃত্ব। যদিও কংগ্রেসের এই যুক্তির সঙ্গে সহমত নয় সিপিএম।
নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের বিজেপিকে রুখতে সর্বাত্মক লড়াইয়ের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস, বাম-সহ সব বিরোধী দলই। কিন্তু তামিলনাড়ুর মতো হাতে গোনা দু-একটা রাজ্য ছাড়া কোথাওই বিজেপির বিরুদ্ধে সার্বিক ঐক্য হয়নি। তার উপরে কেরলেসিপিএমের নেতৃত্বাধীন এলডিএফের শক্ত ঘাঁটিতে স্বয়ং কংগ্রেস সভাপতি প্রার্থী হয়ে যাওয়ায় তাঁদের ‘লক্ষ্য’ নিয়েই প্রশ্ন তুলছে বামেরা। এমতাবস্থায় কেরলের কংগ্রেস নেতৃত্ব বিজেপি-বিরোধিতাকেই সামনে রেখে পরিস্থিতি সামাল দিতে চাইছেন।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালা থেকে শুরু করে কোঝিকোড় ও ওয়েনাড জেলা কংগ্রেসের সভাপতি টি সিদ্দিক এবং আই সি বালকৃষ্ণন, সকলেরই যুক্তি— শবরীমালা-বিতর্কের সুযোগ নিয়ে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার কেরলে প্রভাব বাড়াতে মরিয়া। তাঁদের দাবি, রাহুল নিজে কেরলে গিয়ে প্রার্থী হওয়ায় সংখ্যালঘু মুসলিম ও খ্রিস্টানদের ঢালাও সমর্থন কংগ্রেস পাবে। আবার তাঁর মতো ‘ওজনদার’ নেতার ভাল প্রভাব হিন্দু ভোটেও থাকবে। এর ফলে কেরল তো বটেই, গোটা দক্ষিণ ভারতেই কংগ্রেসের আসন বাড়বে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
নানা মহল থেকেই প্রশ্ন উঠেছে, দক্ষিণ ভারতে দলের পক্ষে হাওয়া তুলতে হলে কর্নাটকের মতো রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে কোনও আসনে কংগ্রেস সভাপতি দাঁড়াতে পারতেন। কেরল থেকে মোট ২০ আসনই তো ভোটের পরে ইউপিএ-র দিকে থাকার সম্ভাবনা। তা হলে ধর্মনিরপেক্ষ শিবিরে বামেদের সঙ্গে ব্যবধান চওড়া করে লাভ কী? চেন্নিথালার যুক্তি, ‘‘কংগ্রেস সভাপতি নিজে এখানে প্রার্থী হওয়ায় দলের আসন বাড়বে। কংগ্রেসের আসন বাড়লে সহযোগী দল বা শরিকদের উপরে নির্ভরতা কমে যাবে। তা হলে বামেদের সঙ্গে লড়াই নিয়ে বিতর্ক করে লাভ কী?’’
চেন্নিথালাদের এই যুক্তি খারিজ করে সিপিএম নেতারা উদহারণ দিচ্ছেন, শবরীমালা-কাণ্ডের পরে স্থানীয় স্তরে যত নির্বাচন হয়েছে, কোথাও দাঁত ফোটাতে পারেনি বিজেপি। তা হলে তাদের নিয়ে কংগ্রেস এত চিন্তিত কেন যে, রাহুলকে এসে প্রার্থী হতে হচ্ছে? তাঁরা আরও দেখাচ্ছেন, ওয়েনাড আসনে গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার ভোটের পরে দ্বিতীয় স্থানে সিপিআই পেয়েছিল ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার। সে বার দেশ জুড়ে মোদী হাওয়াতেও বিজেপির ছিল ৮০ হাজার ভোট। বরং, ২০০৯ সালে কংগ্রেসের জয়ের ব্যবধান দেড় লক্ষ থেকে ২০১৪ সালে ২০ হাজারে কমিয়ে এনেছিল বামেরাই। রাজ্যের মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা কে সুরেন্দ্রনের কথায়, ‘‘কোনও যুক্তিতেই এখানে কংগ্রেসের বিজেপি-বিরোধিতার লক্ষ্য স্পষ্ট হচ্ছে না। বিজেপির বদলে কংগ্রেস নিশানা করেছে বামেদেরই!’’
কেরলে কংগ্রেসের শরিক মুসলিম লিগ। ওয়েনাডের সংলগ্ন মলপ্পুরম তাদের শক্ত ঘাঁটি। কেরলের ঘটনাপ্রবাহের মধ্যেই মুসলিম লিগের বাংলা শাখা সোমবার রাজ্যের ৪২টি আসনে কংগ্রেসকেই সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy