Advertisement
E-Paper

ঊহ্য আবেদনই অস্ত্র হ্যাশট্যাগে

ফেসবুক-টুইটারে কি-বোর্ডের ‘হ্যাশ’(#) চিহ্ন দিয়ে কিছু লিখলে সেই শব্দটি যে যে পোস্টে রয়েছে, সেই সবই একসঙ্গে হাজির হয়।

সুজিষ্ণু মাহাতো

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৩১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ভোট-বাজারে স্বপ্ন ফেরির বিরাম নেই কোনও দলের। আর নিজেদের দিকে সেই স্বপ্নের ‘খদ্দের’, অর্থাৎ ভোটারদের টানতে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের হাতিয়ার হ্যাশট্যাগ। আকর্ষক হ্যাশট্যাগের আবেদনের বিজ্ঞাপনী কৌশলেই নিজেদের প্রচারে নেট-জনতাকে জড়িয়ে নিতে চাইছে শাসক-বিরোধী দু’পক্ষই।

ফেসবুক-টুইটারে কি-বোর্ডের ‘হ্যাশ’(#) চিহ্ন দিয়ে কিছু লিখলে সেই শব্দটি যে যে পোস্টে রয়েছে, সেই সবই একসঙ্গে হাজির হয়। আদতে হ্যাশট্যাগ এমনই একটি ‘সার্চ টুল’ হলেও বহু বিবর্তনের পরে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার। আগে যেমন ছিল বিজ্ঞাপনী স্লোগান, এখন সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে সেই জায়গাই নিয়েছে হ্যাশট্যাগ। সোশ্যাল মিডিয়ার বাড়বাড়ন্তের যুগে এখন ডিজিটাল প্রচারে পেশাদার বিজ্ঞাপন নির্মাতাদেরই সাহায্য নেয় রাজনৈতিক দলগুলি। সেই বিজ্ঞাপন বিশেষজ্ঞরাই জানাচ্ছেন, হ্যাশট্যাগই এখন যে কোনও দলের প্রচারে নেট-জনতাকে টানার অস্ত্র। তাই হ্যাশট্যাগ তৈরিতে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় সব রাজনৈতিক দলই। এমন শব্দবন্ধ বাছা হয় যা সহজে মানুষের পছন্দ হয়, সহজে মানুষের মনকে নাড়া দেয়। বিজেপির ডিজিটাল প্রচারের কাজ করা মুম্বইয়ের একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার কর্ণধার বলছেন, ‘‘একেবারে সরাসরি কিছু না বলে, হ্যাশট্যাগে বেশির ভাগ সময়ে একটা সামগ্রিক বিষয় ধরে স্লোগান তৈরির চেষ্টা হয়। যাতে যে জনতা ওই স্লোগানের লক্ষ্য, তারা ছাড়াও অন্য আরও অনেকে সেই হ্যাশট্যাগের সঙ্গে জুড়তে পারেন।’’

অর্থাৎ, সরাসরি ‘আমাকে ভোট দিন’ না বলে ঘুরিয়ে জনগণের কাছে আবেদন পৌঁছে দেওয়া। এ বারের সোশ্যাল মিডিয়ায় ভোট-প্রচারে যুযুধান দু’পক্ষের অন্যতম দু’টি হ্যাশট্যাগে নজর দিলেই তার প্রমাণ মেলে। বিজেপির ডিজিটাল প্রচারের হ্যাশট্যাগ #ম্যায়ভিচৌকিদার-এ কোথাও বিজেপির নাম নেই। ‘বিজেপিকে ভোট দিন’-এর মতো গোদা বার্তাও নেই। আবার কংগ্রেসের #অবহোগান্যায়-তেও কোথাও কংগ্রেসের নাম নেই। কেবল দলই নয়, প্রার্থীরাও অনুসরণ করছেন এই ‘ট্রেন্ড’। কানহাইয়া কুমার ইনস্টাগ্রামে ভোট প্রচারের ছবিতে হ্যাশট্যাগ দিচ্ছেন, #নেতানহিবেটা। সেখানেও কোথাও সরাসরি ভোট দেওয়ার কথা বলা নেই।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এমন ‘ঊহ্য’ আবেদনই আসলে হ্যাশট্যাগের সাফল্যের রহস্য, জানাচ্ছেন বিপণন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের ব্যাখ্যা, ভোট-ময়দানে নামা সব পক্ষই নিজের নিজের সমর্থকদের ‘টার্গেট’ করলেও তার বাইরের যে কেউও যাতে তাঁদের স্লোগানের সঙ্গে একাত্ম বোধ করতে পারেন, সে জন্যই এমন করা হয়। বিজ্ঞাপন স্রষ্টা শৌভিক মিশ্র বলছেন, ‘‘সরাসরি কোনও দলের নাম করে কোনও হ্যাশট্যাগের চেয়ে এমন হ্যাশট্যাগের সুবিধে হল, এমন হ্যাশট্যাগের আবেদন, প্রতিক্রিয়া অনেক বিস্তৃত। সব পক্ষের জনগণই সেই প্রচারের লক্ষ্য হতে পারেন।’’ এ ভাবেই গত লোকসভা ভোটে #অচ্ছেদিন হ্যাশট্যাগের আবেদন কেবল বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ছিল না, তার বাইরেও ছড়িয়েছিল। তাই তা সফল হয়েছিল বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

আবেদনের এমন বিস্তৃতির কারণেই সফল হয় বিপণন, সফল হতে পারে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও সামাজিক আন্দোলনও। যৌন হেনস্থার প্রতিবাদে সাম্প্রতিক #মিটু আন্দোলনেই তার প্রমাণ মিলেছে বলে মনে করিয়ে দিলেন একটি ডিজিটাল বিপণন সংস্থার কর্ণধার অনন্যা বিশ্বাস। তাঁর কথায়, ‘‘#মিটু হ্যাশট্যাগ দিয়ে কোনও এক জন মহিলা তাঁর নিজের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু ওই স্লোগানের অভিঘাত এমনই ছিল যে সেই হ্যাশট্যাগ গোটা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। সবাই ওই স্লোগানের সঙ্গে একাত্ম বোধ করেছিলেন বলেই তা অনুসরণ করেছিলেন।’’

Lok Sabha Election 2019 লোকসভা ভোট ২০১৯ Hashtag Social Media
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy