Advertisement
১৬ মে ২০২৪

মোদীকে নিয়ে কী ব্যবস্থা, চার দিনের মধ্যে জানাতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

শুধু এপ্রিল মাসেই মোদী ও শাহের বিরুদ্ধে কমিশনে গোটা দশেক অভিযোগ জমা পড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তি ও তাঁদের শাস্তি শোনানো হলেও, মোদী ও শাহের ব্যাপারে গা-ছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছে কমিশন।

প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাব দিতে গড়ে এক মাস সময় লাগিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ফাইল চিত্র।

প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাব দিতে গড়ে এক মাস সময় লাগিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৯ ০১:৪৪
Share: Save:

সুপ্রিম কোর্টের আতস কাচের তলায় এ বার নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা।

এ যাবৎ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাব দিতে গড়ে এক মাস সময় লাগিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেখানে আজ প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণবিধি ভাঙার সব ক’টি অভিযোগ চার দিনের মধ্যে খতিয়ে দেখে নিষ্পত্তি করার জন্য কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মামলার পরের শুনানি সোমবার। তার মধ্যে মোদী-শাহের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলির নিষ্পত্তি হল কি না, তা শীর্ষ আদালতকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।

শুধু এপ্রিল মাসেই মোদী ও শাহের বিরুদ্ধে কমিশনে গোটা দশেক অভিযোগ জমা পড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তি ও তাঁদের শাস্তি শোনানো হলেও, মোদী ও শাহের ব্যাপারে গা-ছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছে কমিশন। কংগ্রেসের অভিযোগ, ভোট প্রচারে সেনাকে টেনে আনা নিয়ে কমিশনের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী পুলওয়ামা কিংবা বালাকোট নিয়ে মন্তব্য করেছেন এবং ক্লিনচিটও পেয়েছেন। অরুণ জেটলি অবশ্য পাল্টা বলেন, ‘‘আদর্শ আচরণবিধি জারি হলে কথা বলার স্বাধীনতা চলে যাবে, এমন হতে পারে না।’’

বিজেপি ওই যুক্তি দিলেও, গত মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতের কাছে কমিশনের দু’মুখো মনোভাবের উল্লেখ করে একটি আবেদন জানানো হয়। কংগ্রেস নেত্রী সুস্মিতা দেব এতে বলেন, ‘‘মোদী-শাহের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্ত্বেও ব্যবস্থা নেয়নি কমিশন। নিরপেক্ষতার পরিবর্তে পক্ষপাতিত্ব করছে তারা।’’ এর পরেই কমিশনকে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। ঘটনাচক্রে সুস্মিতার আবেদনের পরেই একটি ও গত কাল আচরণবিধি ভাঙার আরও একটি অভিযোগ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে রেহাই দেয় কমিশন। যদিও গত কালই মোদীর বিরুদ্ধে কমিশনে ফের অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। মোদী-শাহের বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে এখন ১০-১১টি অভিযোগ জমা রয়েছে।

অভিযোগের নিষ্পত্তির জন্য সময় প্রয়োজন, এই যুক্তি দেখিয়ে কমিশনের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী জানান, আপত্তিকর বক্তব্যের অভিযোগ এলে সংশ্লিষ্ট রাজ্য থেকে রিপোর্ট নেওয়া হয়। কমিশনের শীর্ষ কর্তারা অভিযোগ যাচাই করেন। এই প্রক্রিয়া চালাতে সময়ের প্রয়োজন। ফলে চার দিনে সবক’টি অভিযোগের ফয়সালা করা কার্যত অসম্ভব বলে যুক্তি দেন দ্বিবেদী। কমিশনের বক্তব্যকে খারিজ করে দিয়ে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেন, ‘‘আপনাদের হাতে রবিবার পর্যন্ত সময় রয়েছে। তার মধ্যে আপনারা সেরে ফেলতে পারবেন।’’

সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের দিনই আচরণবিধি ভঙ্গের একটি অভিযোগে মোদীকে ক্লিনচিট দিয়েছে কমিশন। গত ২১ এপ্রিল রাজস্থানে মোদী বলেন, ‘‘ভারতের পরমাণু বোমা কি দিওয়ালিতে ফাটানোর জন্য রাখা আছে?’’ এ নিয়ে কমিশনে অভিযোগ জানায় কংগ্রেস।

কমিশন আজ জানিয়েছে, মোদী আচরণবিধি ভাঙেননি। আর এ দিনই রাহুল গাঁধীকেও ছাড় দিয়েছে কমিশন। মধ্যপ্রদেশের একটি সভায় রাহুল বলেছিলেন, অমিত শাহ খুনের মামলায় অভিযুক্ত। কমিশন আজ বলেছে, এতে আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE