প্রস্তুতি: ইভিএম নিয়ে বুথের পথে। শনিবার ইলাহাবাদে। ছবি: এএফপি।
রাজনীতির প্রাচীন প্রবাদ, দিল্লি জয়ের রাস্তা উত্তরপ্রদেশের মধ্যে দিয়েই যায়। সেই উত্তরপ্রদেশের জমিতে রবিবার সবথেকে শক্ত লড়াইয়ের মুখে বিজেপি।
রবিবার লোকসভা নির্বাচনের ষষ্ঠ দফার ভোটগ্রহণ। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ, বিহার, দিল্লি, ঝাড়খণ্ড, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশের মোট ৫৯টি লোকসভা কেন্দ্রে পরীক্ষা। তার মধ্যে উত্তরপ্রদেশের ১৪টি আসনে অখিলেশ-মায়াবতীর মহাজোট সবথেকে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ-যোগী আদিত্যনাথকে।
২০১৪-র লোকসভা ভোটে রবিবার ভোটে যাওয়া ৫৯টি আসনের মধ্যে ৪৩টিই বিজেপি দখল করেছিল। দু’টি জিতেছিল বিজেপির শরিক দল। উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলের ১৪টি আসনের মধ্যে ১৩টিই জিতেছিল বিজেপি ও তার শরিক দল। একমাত্র আজমগড় আসনে বিজেপি হেরেছিল। পরে উপনির্বাচনে এসপি-বিএসপি জোটের কাছে ফুলপুর আসনটিও হারায় বিজেপি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ বার সেই আজমগড় থেকে ভোটে লড়ছেন খোদ অখিলেশ যাদব। অখিলেশের জয় প্রায় নিশ্চিত। সুলতানপুর, প্রতাপগড়ে আবার বিজেপি, এসপি-বিএসপি জোট এবং কংগ্রেসের ত্রিমুখী লড়াই। কিন্তু বাকি সব আসনেই বিজেপির সঙ্গে সরাসরি মহাজোটের লড়াই। একদিকে জোটের অঙ্ক, অন্য দিকে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের বিরুদ্ধে আমজনতার ক্ষোভ। এই দুইকে কাজে লাগিয়ে অখিলেশ যাদব ও মায়াবতী পূর্বাঞ্চলে খেলা ঘোরাতে বদ্ধপরিকর। উল্টো দিকে পাঁচ বছর আগের জেতা আসনের যত বেশি সম্ভব ধরে রাখতে মোদীকেই প্রধান বাজি করছে বিজেপি।
উত্তরপ্রদেশে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বিজেপি বেশ কিছু আসন খোয়ানোর আশঙ্কা করলেও রাজধানী দিল্লির ৭টি-র মধ্যে অন্তত ৬টি তারা ধরে রাখতে পারবে বলে আশা করছে। বিজেপির অঙ্ক হল, আম আদমি পার্টি ও কংগ্রেসের মধ্যে ভোট বিভাজনের সুবিধা মিলবে। ২০১৪-য় দিল্লিতে সাতে সাত করলেও ৩৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির মিলিত ভোটের হার তার থেকে বেশি ছিল। ২০১৫-র বিধানসভা ভোটে আম আদমি পার্টি ৭০টির মধ্যে ৬৭টি আসনে জিতে ক্ষমতায় এলেও বিজেপি নিজের ভোটের ভাগ ধরে রেখেছিল। কেজরাবীল মূলত কংগ্রেসের ভোটে ভাগ বসিয়েছিলেন। এ বার বিজেপি নেতাদের আশা, সেই ভোটটুকু ধরে রাখতে পারলেই কংগ্রেস-আপ ভোট বিভাজনে কাজ হাসিল হবে। বিজেপির সহজ জয় ঠেকাতে উপরে জোট না হলেও দিল্লির কিছু আসনে নিচুতলায় কংগ্রেস ও আপ কর্মীদের মধ্যে বোঝাপড়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে। কিন্তু শেষবেলায় তাতে কতখানি লাভ হবে, বলা মুশকিল।
রবিবার বিহারের যে আটটি আসনে ভোট, তার সবগুলিই ২০১৪-র মোদী-ঝড়ে বিজেপি ও শরিকদের দখলে এসেছিল। অন্য দিকে কংগ্রেসের আশা, এ বারে মধ্যপ্রদেশ এবং হরিয়ানায় তাদের আসন বাড়বে। মধ্যপ্রদেশের ভোপালে বিজেপির সাধ্বী প্রজ্ঞা বনাম কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহের লড়াই উগ্র হিন্দুত্ব বনাম নরম হিন্দুত্বের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। তার সঙ্গে রাজ্যে পালাবদলের পর মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস বাকি আসনগুলি মিলিয়ে সাংসদ সংখ্যা বাড়ানোর আশায় রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy