দু’জনে পাশাপাশি আসছেন। তবে বন্ধুত্ব নয়, একেবারে প্রতিযোগিতার মন নিয়েই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মানিক সরকার। প্রতিবেশী দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েও তাঁদের এক মঞ্চে আসতে দেখা যায় না। কিন্তু এ মাসের ২৯ তারিখ দিল্লিতে ঘটতে চলেছে সেই বিরল ঘটনা, যেখানে পাশাপাশি দেখা যাবে মমতা-মানিককে। কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগকে সামনে রেখে একটি আলোচনাচক্রের আয়োজন করছে অরবিন্দ কেজরীবালের দিল্লি সরকার। সেখানে সিপিএম ও তৃণমূলের নেতা নেত্রীর যোগ দেওয়া নিয়ে রাজধানীর রাজনীতিতে এখন তুমুল জল্পনা। কেউ বলছেন, তা হলে কি মোদী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়ে আসলে হাত ধরার রাস্তা খুলে রাখলেন দু-পক্ষ! নবান্নে সিপিএম নেতাদের ডেকে মুখ্যমন্ত্রীর ফিশ ফ্রাই আতিথেয়তার প্রসঙ্গ টানছেন কেউ কেউ। কিন্তু মমতা-মানিকের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে কিন্তু শোনা যাচ্ছে অন্য সুর। বোঝা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে যুযুধান দুই পক্ষ এ বার একই মঞ্চে দাঁড়িয়েও আসলে প্রতিযোগিতাতেই নামতে চলেছেন। রাজ্যের হাতে অধিক ক্ষমতার দাবিতে কে কত বেশি আন্তরিক, সেটা দেখানোই আসল উদ্দেশ্য।
আয়োজকরা যদিও জানাচ্ছেন, আলোচনাচক্রের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য মূলত দু’টি। এক, খোদ নরেন্দ্র মোদীর ডেরায় বসে, কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ তৈরি করা। রাজ্যগুলির আর্থিক দাবিদাওয়া এবং অধিকারের প্রশ্নে কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করানো।
দুই, সমমনস্ক আঞ্চলিক দলগুলিকে একই ছাতার তলায় নিয়ে আসার চেষ্টা।
সূত্রের খবর, গত মাসে দিল্লিতে মমতা-কেজরীবাল বৈঠকের সময় কিন্তু সম্মেলনে সিপিএমের থাকা না থাকা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। কিন্তু মমতা কলকাতা ফিরে যাওয়ার পরেই সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে আলোচনা হয় কেজরীবালের। এর পর মানিকও দেখা করেন কেজরীবালের সঙ্গে। স্থির হয়, তিনিও থাকবেন ওই বৈঠকে।
বিষয়টিকে কী ভাবে দেখছে পরষ্পর যুযুধান দুই পক্ষ? সিপিএমের এক শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, এটি কোনও রাজনৈতিক দলের সম্মেলন নয়, দিল্লি সরকার আয়োজিত মুখ্যমন্ত্রী সম্মেলন। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় মুখ্যমন্ত্রী এমন বৈঠকে যেতেই পারেন। পাশাপাশি সিপিএমের দাবি, বহু আগে থেকেই রাজ্যের হাতে অধিক ক্ষমতার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন বাম নেতৃত্ব। ফলে এই বিষয়ে মমতা বা কেজরীবালকে ফাঁকা মঞ্চ ছেড়ে দিয়ে চলে আসা মুর্খামি হবে। আর তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, কেজরীবাল যে কেন্দ্র-বিরোধিতার রাজনীতি করছেন এবং আঞ্চলিক দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছেন, তার ভিত গত মাসে দিল্লি এসে তৈরি করে দিয়ে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। তাঁর ব্যাখ্যা, রাজ্য সরকারগুলি যেমন বহু ব্যাপারে কেন্দ্র মুখাপেক্ষী, তেমনি কেন্দ্রকেও অনেক বিষয়ে রাজ্যের উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। ফলে পারস্পরিক নির্ভরশীলতার এই দিকটিই তৃণমূল নেত্রী কেন্দ্রকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাইছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy