Advertisement
০৫ মে ২০২৪

‘পর্ন’ দেখিয়ে ধর্ষণ করে খুন মনিকাকে

খুন করার আগে সুগন্ধী বিশেষজ্ঞ মনিকা ঘুর্দেকে ‘পর্ন’ দেখতে বাধ্য করেছিল রাজকুমার সিংহ। তার পর তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। ধৃত রাজকুমারকে জেরা করে এই তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে গোয়া পুলিশ।

মনিকা ঘুর্দে। ফাইল চিত্র।

মনিকা ঘুর্দে। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
পানজিম শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:১৪
Share: Save:

খুন করার আগে সুগন্ধী বিশেষজ্ঞ মনিকা ঘুর্দেকে ‘পর্ন’ দেখতে বাধ্য করেছিল রাজকুমার সিংহ। তার পর তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। ধৃত রাজকুমারকে জেরা করে এই তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে গোয়া পুলিশ।

কেন? পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিহিংসার কারণেই ধর্ষণ করে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে মনিকাকে খুন করে রাজকুমার।

গত ৬ অক্টোবর গোয়ার স্বপ্না রাজ ভ্যালি আবাসনে নিজের ঘর থেকে উদ্ধার হয় ৩৯ বছরের মনিকার নগ্ন দেহ। তাঁর দেহ খাটের উপর পড়েছিল। দুই হাত বাঁধা ছিল। এই খুনের ঘটনায় রবিবার বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করা হয় আবাসনের প্রাক্তন নিরাপত্তারক্ষী রাজকুমারকে। নিজস্বী তুলে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে আপলোড করেছিল সে। সেখান থেকেই রাজকুমার পুলিশের জালে পড়ে। গোয়ার আদালত তাকে পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে।

গোয়া পুলিশেরর ডিআইজি বিমল গুপ্তর দাবি, ছক কষে ঠান্ডা মাথায় মনিকাকে খুন করেছে রাজকুমার।

পুলিশ জানিয়েছে, পঞ্জাবের ভাটিন্ডার বাসিন্দা রাজকুমার ওই আবাসনে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করত। কিন্তু মনিকা-সহ আবাসনের আরও অনেক বাসিন্দা তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ জানিয়েছিলেন। মনিকার হারানো ছাতা উদ্ধার হয়েছিল রাজকুমারের কাছ থেকে। তাই মনিকা রাজকুমারের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ জানিয়েছিলেন। এই সব অভিযোগের ভিত্তিতে ২২ জুলাই তাকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেওয়া হয়। এমনকী সে দু’মাসের বেতন পায়নি বলেও দাবি করেছে রাজকুমার। সেই রাগ থেকেই ধর্ষণ করে মনিকাকে খুন করে রাজকুমার।

পুলিশি জেরায় রাজকুমার জানিয়েছে, ৩ অক্টোবর সে মনিকাদের আবাসনে যায়। এর পর তিন দিন-দু’রাত সে আবাসনের ছাদে লুকিয়ে ছিল। রাজকুমার জানত, মনিকা ফ্ল্যাটে একাই থাকেন। কিন্তু তিনি বাড়িতে আছেন কি না, তা নিশ্চিত করতে পারছিল না রাজকুমার। আবাসনে মণিকার গাড়ি দেখতে পাওয়ার পরেই ৫ অক্টোবর সন্ধে সাড়ে ছ’টায় রাজকুমার নীচে নেমে এসে মনিকার ফ্ল্যাটের বেল বাজায়। ‘আই হোল’ দিয়ে রাজকুমারকে দেখে দরজা খুলে দেয় মনিকা। দরজা খুলতেই জোর করে ঘরে ঢুকে পড়ে রাজকুমার। তার হাতে ছিল ছুরি। মনিকা চিৎকার করতে গেলে হাত দিয়ে তার মুখ চেপে ধরে তাঁকে শৌচাগারে নিয়ে যায় সে। জ্ঞান হারান মনিকা। এর পরে তাঁকে খাটে শুইয়ে তার হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। জ্ঞান ফিরতেই মনিকার কাছ থেকে টাকা দাবি করে রাজকুমার। মনিকা ব্যাগ থেকে নিয়ে নিতে বলেন। ব্যাগ থেকে চার হাজার টাকা নেওয়ার পরেও রাজকুমার আরও টাকা দাবি করতে থাকে। মনিকা রাজকুমারকে তাঁর এটিএম কার্ডটি নিয়ে নিতে বলেন। জানিয়ে দেন কার্ডের পিনও। এর পরেই মনিকার মোবাইলটি নিয়ে নেয়। জোর করে জেনে নেয় মোবাইলের পাসওয়ার্ড। মনিকাকে মোবাইলে তিনটি ‘পর্ন’ ক্লিপ দেখতে বাধ্য করে রাজকুমার। এর পর মনিকার পা দু’টি খুলে দিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করে রাজকুমার। ধর্ষণের পরে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে মনিকাকে খুন করা হয়। ৬ অক্টোবর ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ রাজকুমার মনিকার ফ্ল্যাট ছেড়ে বেরিয়ে যায়। সে দিনই রাতে উদ্ধার হয় মনিকার দেহ।

পুলিশ জানিয়েছে, আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীর চাকরি যাওয়ার পরে দু’জায়গায় শ্রমিকের কাজ করে রাজকুমার। সেই কাজে সুবিধা করতে না পেরে সে মনিকার সঙ্গে দেখা করে তার অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে বলে। যাতে সে আবাসনের নিরাপত্তাকর্মীর কাজটি ফেরত পায়। কিন্তু তা হয়নি। এর পর কাজের খোঁজে সে গোয়ার বাইরে চলে যায়। কিন্তু কোনও সুবিধে করতে না পেরে ২ অক্টোবর গোয়ায় ফিরে আসে রাজকুমার। ডিআইজির কথায়, ‘‘রাজ্যের বাইরেও কোনও রকম কাজ না পেয়ে এবং হাতে টাকা না থাকায় হতাশায় ভুগতে থাকে রাজকুমার। নিজের দুর্দশার জন্য সে দায়ী করে মনিকাকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

porn movie rape
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE