ফাইল চিত্র
উচ্চবর্ণের মন জয়ে সংরক্ষণের অস্ত্র ব্যবহার করে নরেন্দ্র মোদী সরকার নিজেরই বিপদ ডেকে আনল বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
আজ এই সংক্রান্ত বিলটি পেশ হয়েছে সংসদে। কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষেই এর সরাসরি বিরোধিতা করা সম্ভব নয়, তা করেওনি কেউ। তবে অনেকেই বলছেন, মোদীর এই সিদ্ধান্ত আসলে ‘জুমলা’। অনেকে বলছেন, দলিত-তফসিলিদের জনসংখ্যাও বহুগুণ বেড়েছে। সংরক্ষণ যখন সুপ্রিম কোর্ট অনুমোদিত ৫০ শতাংশের লক্ষণরেখা পেরিয়েই যাচ্ছে, তা হলে তাদেরও শিক্ষা এবং চাকরি ক্ষেত্রে কোটা বাড়ানো হোক।
মোদী জমানায় দলিত-তফসিলিরা বারেবারে হেনস্থার শিকার হয়েছেন। এ নিয়ে ক্ষোভ দমন করতে সম্প্রতি বিষয়টিতে নজর দিয়েছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। ফলে সম্প্রতি উচ্চবর্ণের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। দেখা গিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের এগারোটি আসনে যে ব্যবধানে বিজেপি প্রার্থীরা হেরেছেন, তার থেকে বেশি ভোট গিয়েছে নোটায়। মনে করা হচ্ছে, ব্রাহ্মণ, রাজপুত-সহ উচ্চবর্ণের অসন্তোষের ফল এটি।
এ বার সেই উচ্চবর্ণের ক্ষোভ কমাতে সক্রিয় হলেন মোদী। কিন্তু তা নিয়ে বিজেপির অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে। ২০১৪-র লোকসভা
ভোটের আগে মোদী নিজেকে ওবিসি-সন্তান হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। মোহন ভাগবতও গোটা হিন্দু ভোট এককাট্টা করতে উচ্চবর্ণের সঙ্গে দলিত মন জয়ের চেষ্টা করেছেন। উত্তরপ্রদেশে গত বিধানসভা ভোটে সেই অঙ্কেই বাজিমাত করেছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব।
উচ্চবর্ণের সংরক্ষণের অঙ্ক সেই গণিতকেই নড়িয়ে দিয়েছে। বিএসপি সুপ্রিমো তথা দলিত নেত্রী মায়াবতী এই সংরক্ষণের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও একে ‘রাজনৈতিক চাল’ বলতে ছাড়েননি। তিনি বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত ভাল। কিন্তু এর পিছনে যে উদ্দেশ্য রয়েছে, তা ভাল নয়।’’ মায়াবতীর দাবি, ধর্মের ভিত্তিতে সমস্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দরিদ্র মানুষকেই এই সংরক্ষণের আওতায় আনা উচিত। ‘‘গরিব, দলিত, আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষণ শুধু মাত্র চাকরি অথবা শিক্ষাক্ষেত্রে আটকে রাখলে চলবে না। আরও অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। তা ছাড়া দলিত, তফসিলি সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। আমি তো দাবি করছি, তাদের জন্য ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের।’’ সপা নেতা রামগোপাল যাদব বলেছেন, ‘‘সরকার যখন ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের লক্ষণরেখা পারই করছে, তখন তা ৫৪ শতাংশ করে ওবিসি-র কোটা বাড়ানো উচিত।’’ তেজস্বী যাদবের কথায়, ‘‘সংরক্ষণের ধারণাটি তৈরি হয়েছিল সামাজিক অগ্রগতি, অস্পৃশ্যতা, সামাজিক বৈষম্যকে দূর করার জন্য। আর্থিক অগ্রগতি কখনও সংরক্ষণের উদ্দেশ্য ছিল না।’’ পাতিদার আন্দোলনের নেতা হার্দিক পটেল একে ‘রাজনৈতিক জুমলা’ বলে জানিয়েছেন, সংরক্ষিত এবং অসংরক্ষিত শ্রেণির মধ্যে বিভেদ তৈরি করবে এই সিদ্ধান্ত।
কিছু দিন আগে কেন্দ্র আর্থ-সামাজিক ভিত্তিতে জাতিগত জনগণনা করিয়েছে। কিন্তু সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনেনি সরকার। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, চলতি পরিস্থিতিতে ওই রিপোর্টের নামোচ্চারণও করবে না মোদী সরকার!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy