লোকসভা ভোটের মুখে ফের টেলি-যোগাযোগের স্পেকট্রাম বণ্টনের পদ্ধতি নিয়ে অস্বস্তিতে কেন্দ্রীয় সরকার। সৌজন্যে সেই কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)-এর রিপোর্ট। যেখানে রয়েছে ৫৬০ কোটি টাকা রাজস্ব খতির হিসেব।
শুধু পাল্টে গিয়েছে শাসক দল। ২০১৪-য় মনমোহন সিংহের ইউপিএ সরকার। ২০১৯-এ নরেন্দ্র মোদীর এনডিএ। রাফাল চুক্তির পরে ‘পাইয়ে দেওয়া’-র নতুন অভিযোগ মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বিজেপির। টেলিকম মন্ত্রী মনোজ সিন্হা গত কাল আত্মপক্ষ সমর্থনে সিএজি-র ঘাড়েই দোষ ঠেলে বলেছেন, ‘‘অনেক সময়ে পুরোটা না-জেনেই রিপোর্ট দিয়ে দেওয়া হয়। আমরা সিএজি-কে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছি। তারাও জবাব দিয়েছে। দুর্নীতির যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা দুর্বল, ভিত্তিহীন।’’
কিন্তু চিঁড়ে ভিজছে না এই যুক্তিতে। আজ কংগ্রেস সাংসদ আহমেদ পটেল টুইটারে লিখেছেন, ‘‘সিএজি প্রশ্ন তোলার পরে টেলিকম মন্ত্রী নিলামের বদলে ‘আগে এলে আগে পাবে’ নীতির হয়ে সওয়াল করছেন। ২০১৪-র ভোটের আগে এটা নিশ্চয়ই বিজেপির অবস্থান ছিল না! আবার একটা ইউ-টার্ন?’’
ইউপিএ জমানায় ‘আগে এলে আগে পাবে’ নীতিতে টু-জি স্পেকট্রাম বণ্টন নিয়েই হইচই করেছিল বিজেপি। তৎকালীন সিএজি বিনোদ রাই বলেছিলেন, এর ফলে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা হারিয়েছে সরকার। মোদী জমানায় অবশ্য চর্চার কেন্দ্রে ‘মাইক্রোওয়েভ’ বা ‘ব্যাকহল’ স্পেকট্রাম। কংগ্রেসের অভিযোগ, ‘আগে এলে আগে পাবে’ নীতির ভিত্তিতে মোদী সরকার তা পাইয়ে দিয়েছে মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স জিয়ো এবং সিস্টেমা শ্যাম সংস্থাকে।
কংগ্রেসের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্ট তাদের ২০১২ সালের রায়ে স্পষ্ট বলেছিল, নিলাম ছাড়া স্পেকট্রাম বণ্টন করা যাবে না। গত সপ্তাহে সংসদে জমা পড়া রিপোর্টে সিএজি-ও বলেছে, আরও ১০১টি আবেদন সরকারের টেবিলে পড়ে থাকা সত্ত্বেও টেলিকম মন্ত্রকের কমিটির সুপারিশ এড়িয়ে ‘আগে এলে আগে পাবে’ ভিত্তিতে স্পেকট্রাম বণ্টন হয়েছে।
সরকারের পাল্টা দাবি, এই ধরনের স্পেকট্রামের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রযোজ্য নয়। কারণ ব্যাকহল বা মাইক্রোওয়েভ স্পেকট্রাম সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। শীর্ষ আদালত বলেছিল ‘অ্যাকসেস স্পেকট্রাম’-এর কথা, অর্থাৎ যে সর্বশেষ পর্যায়ে গ্রাহকের যন্ত্রে টেলি-যোগাযোগ এসে পৌঁছয়। আর ওই পর্যায়ের আগে পর্যন্ত সংযোগ এনে দিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থার যে নেপথ্য পরিকাঠামো, সেখানেই ব্যাকহল স্পেকট্রামের ব্যবহার। কল ও ইন্টারনেটের মান বাড়ানো এবং কল-ড্রপ এড়ানো— এই দুই লক্ষ্যে টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ট্রাই)-এর নীতি মেনেই ব্যাকহল স্পেকট্রাম বণ্টনের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে মন্ত্রকের বক্তব্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy