বিহার বিধানসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী সরকারের স্ব-রোজগার প্রকল্পগুলিকেই তুরুপের তাস করতে চাইছে বিজেপি। আগামিকাল আনুষ্ঠানিক ভাবে পটনায় এনডিএ-র প্রচার শুরুর সময় এটিকেই হাতিয়ার করতে চলেছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।
আজই দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দক্ষ ভারত প্রকল্প শুরু করেছেন। আগামী সাত বছরে দেশের ৪০ কোটি যুবককে হাতের কাজে দক্ষ করানোই তাঁর লক্ষ্য। এই কাজ শিখে শুধু দেশে নয়, বিদেশেও রোজগারের সুযোগের কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে মুদ্রা ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ব্যবসায় ঋণ দেওয়ার প্রকল্পও ঘোষণা করেছেন তিনি। বিজেপি নেতারা বলছেন, এই প্রকল্পগুলিই বিহারের নির্বাচনের আগে দলের তুরুপের তাস। বিহারের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষজনকে স্ব-রোজগারের পথ করে দেওয়ার প্রচার চালানো হচ্ছে জোরকদমে। সেখানে মানুষের কাছে আবেদন করা হচ্ছে, মোদীর প্রকল্পে সামিল হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে। আর সেই সঙ্গে আরও মানুষকে এর সঙ্গে জুড়তে। এ ভাবেই মোদীর প্রতি সমীহ আদায় করিয়ে ভোটব্যাঙ্ক প্রসারিত করতে চাইছে বিজেপি।
বিজেপি সূত্রের মতে, আগামিকাল বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ পটনার গাঁধী ময়দানে যাচ্ছেন এই প্রচারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করতে। সেখানে পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করবেন। ১৬০টি রথ তৈরি করা হয়েছে, যেগুলি দিনে ১০টি করে গ্রাম ঘুরবে। ভোটের আগে রাজ্যের সব কটি নির্বাচনী কেন্দ্র ঘুরবে এই রথগুলি। সেই রথগুলিতে ভিডিও, অডিও-র ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিভিন্ন ‘জনমুখী’ প্রকল্প প্রচার করে মানুষকে তাতে সামিল করা হবে। বিজেপি নেতাদের মতে, বিহারের সাধারণ মানুষ এখনও অনেক দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে। সম্প্রতি বিধান পরিষদের নির্বাচনে যে এক লক্ষ মানুষের ভোট হয়েছে, তাতে অর্ধেক পিছিয়ে পড়া ও অতি পিছিয়ে পড়া মানুষ সামিল রয়েছেন। তাঁরাও যদি বিজেপি-কে সমর্থন করেন, তা হলে স্পষ্ট বিজেপির পক্ষে হাওয়া রয়েছে। সেটিকেই আরও কাজে লাগানো হবে।
তবে তাই বলে নীতীশ কুমার, লালুপ্রসাদ যাদব, কংগ্রেসকেও ছেড়ে কথা বলবেন না অমিত শাহ। লালুর জঙ্গলরাজ স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নীতীশের জমানায় ‘অচলাবস্থা’ও তুলে ধরা হবে। রাজ্যের প্রতিটি মন্ত্রক ধরে ধরে বলা হবে, বিজেপি ক্ষমতায় থাকার সময় মন্ত্রকের কী হাল ছিল, নীতীশের জমানায় কতটা অবনতি হয়েছে। কিন্তু শুধু নেতিবাচক নয়, নরেন্দ্র মোদী সরকারের সাফল্য তুলে ধরে ইতিবাচক রাজনীতিতেই বেশি জোর দিতে চাইছে বিজেপি। এখনও পর্যন্ত কাউকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ করছে না দল। ফলে নরেন্দ্র মোদীই বিহার নির্বাচনে বিজেপি-র মুখ। আর তাঁর সরকারের প্রকল্পগুলিকে সামনে রেখেই কী করে লালু-নীতীশের ভোটব্যাঙ্ক ছিনিয়ে নেওয়া যায়, তারই কৌশল রচনায় এখন ব্যস্ত বিজেপি নেতৃত্ব।
আগামিকাল অমিত শাহের ভোট প্রচার শুরুর পর এ মাসের ২৫ তারিখ খোদ নরেন্দ্র মোদী বিহারের মুজফ্ফরপুর থেকে প্রচার শুরু করছেন। তার আগে প্রধানমন্ত্রী আজ বলেন, তাঁর সরকারে এমন সব প্রকল্প শুরু করা হচ্ছে, যা সমাজের গরিবদের কাজে লাগবে। এই দক্ষতার প্রকল্পও তাঁদের জন্য যাঁরা বেশি পড়াশোনা করতে পারেননি। অথচ তাঁদেরও রোজগার দরকার। বড়লোকের ছেলেমেয়েদের কোনও সমস্যা হয় না। তাঁদের কিছু না কিছু ব্যবস্থা হয়েই যায়। কিন্তু সমস্যায় পড়ে গরিবের ছেলেমেয়েরা। তাঁদের কথাই ভাবছে সরকার। বিজেপি নেতৃত্ব এখন বিহারের গ্রামে-গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তাই পৌঁছে দিতে চাইছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy