ফাইল ছবি
ভোটমুখী গোয়ায় ফের জওহরলাল নেহরু ও বল্লভভাই পটেলের মধ্যে বিভাজন টানতে সক্রিয় হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ গোয়ার মুক্তিদিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি সর্দার পটেল আরও কিছু দিন বেঁচে থাকতেন, তা হলে অনেক আগেই স্বাধীন ভারতের অন্তর্ভুক্ত হত গোয়া। যা দেখে কংগ্রসের মন্তব্য, বিজেপি যে আইকনের অভাবে ভুগছে, তা ফের প্রমাণ করে দিলেন মোদী নিজেই।
১৯৬১ সালে জওহরলাল নেহরুর প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়েই আজকের দিনে গোয়ায় পর্তুগিজ শাসনের অবসান হয়। ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় গোয়া। আজ মুক্তিদিবসের অনুষ্ঠানে মোদী বলেন, “পটেল আরও কিছু দিন বেঁচে থাকলে অনেক আগেই গোয়া স্বাধীন হতে পারত।’’ বিজেপি নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, ১৯৫০ সালের ডিসেম্বরে পটেল মারা যান। স্বাধীনতার সময়ে ছোট ছোট রাজ্যগুলিকে এক করে বর্তমান ভারতের যে চেহারা, তার অনেকটাই রূপ দিতে সক্ষম হয়েছিলেন পটেল। কিন্তু পটেল মারা যাওয়ায় গোয়া, দমন দিউয়ের মতো পর্তুগিজ শাসনে থাকা অংশগুলি কেবল নেহরুর সদিচ্ছার অভাবে স্বাধীন ভারতের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হতে এক দশকের বেশি সময় লেগে যায়। যদিও তথ্য বলে, সে সময় আমেরিকার নেতৃত্বাধীন নেটো-র ভ্রুকুটিকে উপেক্ষা করেই গোয়াকে পর্তুগিজদের শাসনমুক্ত করেছিলেন নেহরু। কিন্তু সে প্রসঙ্গ এড়িয়েই ‘দেরির দায়’ নেহরুর দিকে ঠেলে গোয়ার ভোট রাজনীতিতে কংগ্রেসকে অপ্রাসঙ্গিক করতে মরিয়া মোদী।
আজ মোদীর বক্তব্য প্রসঙ্গে কংগ্রেসের ব্যাখ্যা, দীর্ঘ সময় ধরেই বিজেপি নেহরু ও পটেলের মধ্যে বিভাজনরেখা টানতে মরিয়া। আইকনের অভাবে ভোগা বিজেপি আগাগোড়া কংগ্রেসি নেতা পটেলকে যে কোনও ভাবে তাদের নেতা প্রতিপন্ন করতে তৎপর। সেই কারণে প্রায়শই নেহরু ও পটেলের মধ্যে ভুয়ো লড়াই বাধাতে পিছপা হয় না তারা। আজ গোয়ার মুক্তিদিবসের অনুষ্ঠানেও সেই ‘সস্তার রাজনীতি’ই করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
গোয়ায় ২৭ শতাংশ খ্রিস্টান ভোট। রাজ্যের ৪০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে অন্তত ১৫-১৮টি আসনের ফল খ্রিস্টান ভোটের উপরে অনেকাংশে নির্ভরশীল। সেই খ্রিস্টান ভোটব্যাঙ্ককে বার্তা দিতে আজ নিজের ভ্যাটিকান সিটি সফরে গিয়ে পোপের সঙ্গে দেখা করার প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সম্প্রতি ভ্যাটিকান সিটি সফরে গিয়ে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হয়। আমি তাঁকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানালে তিনি জানান, এই আমন্ত্রণ আমার জীবনের অন্যতম সেরা উপহার।’’
সংখ্যালঘু খ্রিস্টান ভোটকে পাশে পেতেই পোপ ফ্রান্সিসের প্রসঙ্গ উত্থাপন করা হলেও মোদীর ওই প্রচেষ্টা সফল হবে না বলেই মত গোয়া কংগ্রেসের সভাপতি গিরীশ রায়া চোডানকরের। তাঁর বক্তব্য, “গোড়া থেকেই গোয়ার ধর্মনিরপেক্ষ ভোট কংগ্রেসের সঙ্গে রয়েছে। গত বারেও সংখ্যালঘুদের সমর্থন কংগ্রেসের পিছনে থাকায় সবথেকে বেশি আসন পেয়েছিল কংগ্রেস। বিজেপি সেই ভোট ব্যাঙ্কে সিঁধ কাটার চেষ্টা করলেও গোয়ার ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ কংগ্রেসের পাশেই থাকবে বলেই আমার বিশ্বাস।’’ তা ছাড়া কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ-সহ বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে খ্রিস্টানদের উপর সঙ্ঘ পরিবারের নির্যাতনও গোয়া ভোটে প্রভাব ফেলবে বলে আশা কংগ্রেসের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy