Advertisement
০৯ ডিসেম্বর ২০২৪

ভোট কাটার অঙ্ক কি চিন্তায় ফেলেছে মোদীকে?

বৃহস্পতিবার প্রথমে দক্ষিণ ত্রিপুরার শান্তিরবাজার ও পরে আগরতলা শহরের স্বামী বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামের (আস্তাবল ময়দান) জনসভায় কংগ্রেসকে তুলোধোনা করলেন প্রধানমন্ত্রী।

আস্তাবল ময়দানে সভার পথে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

আস্তাবল ময়দানে সভার পথে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

তাপস সিংহ
আগরতলা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২০:৩৯
Share: Save:

মাত্র সাত দিনেই কংগ্রেসের গুরুত্ব এতটা বেড়ে গেল! এবং বাড়িয়ে দিলেন কি না স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী!

এই ত্রিপুরায় মাত্র সাত দিন আগে প্রথম দফার নির্বাচনী প্রচারে এসে কংগ্রেসকে কার্যত কোনও গুরুত্বই দেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত ৮ ফেব্রুয়ারি সোনামুড়া ও কৈলাশহরে বিজেপির দলীয় প্রচারে এসে সিপিএমকে আক্রমণের প্রধান লক্ষ্য করলেও কংগ্রেস সম্পর্কে সে ভাবে সরব হননি মোদী।

কিন্তু বৃহস্পতিবার প্রথমে দক্ষিণ ত্রিপুরার শান্তিরবাজার ও পরে আগরতলা শহরের স্বামী বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামের (আস্তাবল ময়দান) জনসভায় কংগ্রেসকে তুলোধোনা করলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস এবং সিপিএমের দিল্লিতে দোস্তি, ত্রিপুরায় কুস্তি। নাটক চলছে।’’ তার পরেই প্রশ্ন ছুড়ে দেন মোদী, ‘‘কংগ্রেসের কোনও নেতা এখানে এসেছেন?’’ উত্তরটাও নিজেই দেন। ‘‘আসেননি। আপনারা বিপুল ভোটে বিজেপিকে জয়ী করুন।’’

রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, বিজেপি প্রথমে ভেবেছিল, কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে এমন ধস নামবে যে ভোট কাটাকাটির ফায়দা বামফ্রন্ট নিতে পারবে না। এবং সেই ভোটটা যাবে বিজেপির দিকে। কিন্তু গত ক’দিনে বিজেপির বোধোদয় হয়েছে যে ক্ষয়িষ্ণু হলেও কংগ্রেসের ঘরে তাদের চিরাচরিত ভোটব্যাঙ্ক আছে। তা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়নি। ফলে কংগ্রেস যত ভোট কাটবে ততই সিপিএমের লাভ, বিজেপির লোকসান।

আরও পড়ুন: সিপিএমের কায়দাতেই ত্রিপুরার বুথে বুথে ঘুঁটি সাজাচ্ছে বিজেপি

আগরতলায় এ দিনের নির্বাচনী সভায় জোটসঙ্গী আইপিএফটি–র (ইন্ডিজেনাস পিপল’স ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা) সাধারণ সম্পাদক মেবার কুমার জামাতিয়া ভাষণ দেন। তাঁর অভিযোগ, এ রাজ্যে উপজাতীয়দের বঞ্চিত করা হয়েছে।

সভায় যাচ্ছেন বিজেপি সমর্থকেরা।

মান্দাইয়ে সাংবাদিক শান্তনু ভৌমিকের খুন হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে মোদী এ দিন বলেন, ‘‘যাঁদের মারা হয়েছে, যে ভাবে মারা হয়েছে, বিজেপি সরকার গড়ার পরেই সে সবের তদন্ত হবে। আগামী ১৮ তারিখ ওই সাংবাদিককে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর দিন। ভোটের মেশিনে বোতাম টিপে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিন।’’

আগরতলার সভায় মানিক পাল্টে হীরা আনার প্রসঙ্গ না তুললেও বামফ্রন্ট সরকারের দুর্নীতি প্রসঙ্গে সরব মোদী বলেছেন, ‘‘১৮ তারিখ এমন সরকার বাছবেন যারা পিছনের ৩০ বছরের দুর্নীতি সরিয়ে ত্রিপুরাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’ তাঁর হুঁশিয়ারি: ‘‘মানিক সরকার গভর্নমেন্টের পর্দা ফাঁস করব।’’ এই প্রসঙ্গেই রোজ ভ্যালির কথা টেনে এনেছেন মোদী। বলেছেন, মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। লুঠ হয়েছে। মেহনতের টাকা চিট ফান্ডে গিয়েছে।’’

আরও পড়ুন: সন্ত্রাসের স্মৃতি, দারিদ্রের যুদ্ধ আর সাগিনা মাহাতো

সপ্তম বেতন কমিশনের প্রসঙ্গ ফের টেনে এনে তিনি বলেন, ‘‘দেশে সাতটি বেতন কমিশন হয়েছে। ভারতের সব রাজ্য সরকার তা রূপায়ণ করেছে। কিন্তু ত্রিপুরা সরকার কর্মচারীদের শোষণ করছে। লজ্জা করছে না?’’

সিপিএমের শেষ মুহূর্তের কৌশল সম্পর্কে বিজেপি বরাবরই সন্দিহান। একান্ত আলাপচারিতায় বিজেপি নেতৃত্বও বলে থাকেন, সিপিএম যে শেষ মুহূর্তে কী করে বসবে বলা মুশকিল। এ দিন সে কথাই কার্যত মান্যতা পায় প্রচারে বিজেপির প্রধান মুখ মোদীর কথায়। তিনি বলেন, ‘‘স্লোগান তুলুন, ‘পহেলে মতদান, বাদ মে জলপান’। সকাল সকাল ভোট দিন।’’

স্টেডিয়ামের ভিড়ের মুঠি তুলে ধরিয়ে মোদী স্লোগান ছুড়ে দিয়েছেন, ‘চলো পাল্টাই।’ স্টেডিয়ামের ভিতরের ও বাইরের ভিড় সে স্লোগানে গলাও মিলিয়েছে।

কিন্তু ব্যালট বাক্সের সুর এই সুরে গলা মেলাবে কি না তা জানতে আরও কয়েক দিনের অপেক্ষা!

ছবি: বাপি রায়চৌধুরী।

অন্য বিষয়গুলি:

Tripura Tripura Election Tripura Assembly Election Narendra Modi CPM CPIM BJP Tripura Assembly Election 2018 ত্রিপুরা নরেন্দ্র মোদী Video
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy