Advertisement
E-Paper

কাশ্মীর-ঝড়ই মোদীর কাঁটা বাদল অধিবেশনে

মন্ত্রিসভার রদবদল সেরে সংসদের বাদল অধিবেশন নিরুপদ্রবে শুরু করতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু কাশ্মীরের সেই পুরনো ক্ষত থেকে ক্রমাগত জারি রয়েছে রক্তপাত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৬ ০৩:৪৭

মন্ত্রিসভার রদবদল সেরে সংসদের বাদল অধিবেশন নিরুপদ্রবে শুরু করতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু কাশ্মীরের সেই পুরনো ক্ষত থেকে ক্রমাগত জারি রয়েছে রক্তপাত। যার জেরে ঘরে ও বাইরে কাশ্মীর কাঁটা নিয়ে আগামী সোমবার সংসদে ট্রেজারি বেঞ্চে বসতে চলেছে মোদী সরকার।

সনিয়া গাঁধী-সহ অন্য বিরোধী দলগুলি জাতীয় নিরাপত্তা ও পাকিস্তানের বিরোধিতার প্রশ্নে মোদীর পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে। তবে জম্মু-কাশ্মীরে প্রশাসনিক গাফিলতির প্রশ্নে কেন্দ্রীয় সরকারকে (বিজেপি সে রাজ্যে সরকারের শরিক দলও বটে) আক্রমণ করার কৌশল নিয়েই এগোচ্ছে তারা। কংগ্রেস সূত্রের মতে, এক জন জঙ্গির মৃত্যুকে ঘিরে কেন এত বড় মাপের অশান্তি, সেই জবাব মোদী সরকারকে দিতেই
হবে। কংগ্রেসের নেতাদের যুক্তি, কাশ্মীরের যুবাদের একটি অংশের মধ্যে ওই জঙ্গির প্রভাব ছিল। এমন নয় সেই তথ্য সরকারের কাছে ছিল না। তার পরেও কেন পরিস্থিতি সামলানো গেল না— সংসদের অধিবেশনে সরকারের কাছে এই প্রশ্ন তোলা হবে।

আজ কার্ফু উপেক্ষা করে শহিদ দিবসের বিক্ষোভ মিছিলে সামিল হওয়ায় গ্রেফতার করা হয় হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি ও মিরওয়াইজ উমর ফারুককে। গ্রেফতারির প্রতিবাদে আগামী দু’দিন কাশ্মীর বন্‌ধের ডাক দিয়েছে হুরিয়ত। আজ সারাদিন উপত্যকা থেকে কোনও অশান্তি বা হামলার খবর পাওয়া যায়নি। তবে সন্ধে নাগাদ হরনাগ এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়িতে ঢিল ছুড়তে থাকে এক দল যুবক। বাহিনী পাল্টা জবাব দিলে আহত হন এক যুবক। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে কাশ্মীরে গত পাঁচ দিনে সংঘর্ষে ৩৫ জনের মৃত্যু হল। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই অনন্তনাগে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ক্ষুব্ধ জনতা বনবিভাগের একটি ঘর জ্বালিয়ে দেয়।

কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে আজও এক প্রস্থ বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে শাসক পিডিপি ও বিরোধী দল ন্যাশনাল কনফারেন্স। জম্মু-কাশ্মীরের আইন-শৃঙ্খলা অবনতির দায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির এখনই ইস্তফা দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লা। একই দাবিতে সরব হয়েছে রাজ্যের কংগ্রেস নেতা গুলাম আহমেদ পির। তাঁর যুক্তি, ‘‘রাজ্য সরকার পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ। গোটাটাই নিয়ন্ত্রণ করছে দিল্লি। ফলে রাজ্য সরকারের টিঁকে থাকার প্রয়োজন নেই।’’

এ সবের মধ্যেই কাশ্মীরের অস্থিরতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে হইচই করার চেষ্টা জারি রেখেছে পাকিস্তান। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের পর আজ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছেও কাশ্মীর নিয়ে সরব হয় নওয়াজ সরকার। ৫৭টি মুসলিম দেশের রাষ্ট্রদূতদের কাছেও কাশ্মীরের অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইসলামাবাদ।

তবে স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মহলে লাগাতার দরবার করলেও, ‘ফাঁদে’ পা দিতে চাইছে না ভারত। ঘরোয়া ভাবে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, পাকিস্তান পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করলেও বারবার প্রতিটি বিষয়ে জবাব দেবে না নয়াদিল্লি। কেননা, জম্মু-কাশ্মীর একান্ত ভাবে ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ’ অংশ। তা নিয়ে বিদেশি কোনও রাষ্ট্রের বলার অধিকার নেই। কাশ্মীরের অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ে দু’ দিন আগেই নওয়াজ শরিফ কড়া বিবৃতি দিয়েছিলেন। নয়াদিল্লি তখনই জানিয়ে দিয়েছিল, পাকিস্তান যেন ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাতে না আসে। সেই অবস্থানেই অনড় নয়াদিল্লি।

Narendra Modi Kashmir issue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy