Advertisement
E-Paper

ডিজিটাল লেনদেনের যুদ্ধেও আধারের নিলেকানি

মানিক সরকার আগেই না করে দিয়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদীর পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েও এলেন না নীতীশ কুমার। নোট বাতিলের পর এ বার ডিজিটাল লেনদেন বাড়ানোর সমান্তরাল যুদ্ধে নামতে চান মোদী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৫৫
নন্দন নিলেকানি।

নন্দন নিলেকানি।

মানিক সরকার আগেই না করে দিয়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদীর পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েও এলেন না নীতীশ কুমার। নোট বাতিলের পর এ বার ডিজিটাল লেনদেন বাড়ানোর সমান্তরাল যুদ্ধে নামতে চান মোদী। সেই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে গড়া মুখ্যমন্ত্রীদের কমিটিতে থেকে শেষ পর্যন্ত মুখরক্ষা করলেন বন্ধু দলের নেতা নবীন পট্টনায়ক। আর ‘উদারতা’ দেখিয়ে কংগ্রেস পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামীকে রাখতে রাজি হয়েছে। কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। বিশ্বের সাইবার মানচিত্রে হায়দরাবাদকে তুলে আনার জন্য অখণ্ড অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যিনি এক সময়ে যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। তবে কমিটিতে সব থেকে বড় চমক হলেন আধার কর্তৃপক্ষের প্রাক্তন প্রধান নন্দন নিলেকানি। গত লোকসভা নির্বাচনে যিনি বর্তমান সংসদীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমারের বিরুদ্ধে ভোটে লড়েছিলেন কংগ্রেসের টিকিটে।

নোট-বাতিল নিয়ে সংসদের ভিতরে-বাইরে প্রবল চাপে রয়েছেন মোদী। তিনি চাইছিলেন যত বেশি সম্ভব অ-বিজেপি মুখকে একজোট করে বিরোধী ঐক্যে ফাটল ধরাতে। আগামী এক বছরের মধ্যে যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে গোটা দেশে ডিজিটাল লেনদেনের আরও প্রসার ঘটানোর লক্ষ্যকে সামনে রেখে অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের পাশে আনতে চাইছিলেন মোদী। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল সরকারের বন্ধু মুখ্যমন্ত্রীই বেশি এই কমিটিতে। গত দু’দিন ধরে হোঁচট খেতে খেতে শেষ পর্যন্ত আজ যে কমিটি তৈরি হল, তাতে নেই নীতীশ, মানিকরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে মোবাইল-ইন্টারনেট ব্যবহারে দড়। তাঁর সরকারের আর্থিক লেনদেনও হয় অনলাইনে। কিন্তু তাঁর দল নোট বাতিলের মতোই মুখ্যমন্ত্রীদের ওই কমিটি গঠনেরই বিরোধিতা করেছে। তাঁকে কমিটিতে সামিল হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়নি।

নীতীশ ক্রমে বিজেপির কাছাকাছি আসছেন বলে জোর গুঞ্জন পটনা থেকে দিল্লি। এখনই সরাসরি এই কমিটিতে সামিল হতে চাননি তিনি। নীতীশ নোট বাতিলের পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও মানুষের ভোগান্তির প্রশ্নে তাঁর দল রয়েছে বিরোধীদের সঙ্গে। যে কারণে সংসদে আজ সংযুক্ত জনতা দলের নেতা শরদ যাদবকে কটাক্ষও করেন অরুণ জেটলি।

সব মিলিয়ে কমিটিতে রয়েছেন ৬ জন মুখ্যমন্ত্রী। অন্ধ্রের চন্দ্রবাবু, ওড়িশার নবীন, পদুচেরির নায়ারণস্বামী, সিকিমের পবনকুমার চামলিং আর বিজেপির দুই মুখ্যমন্ত্রী। মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিংহ চৌহান আর মহারাষ্ট্রের দেবেন্দ্র ফডনবীস। সরকার এই কমিটিতে এমন মুখ্যমন্ত্রীদেরই চাইছিল, তথ্য-প্রযুক্তিতে যাঁদের উৎসাহ আছে। তাই কংগ্রেসের হরীশ রাওয়াত ও নারায়ণস্বামীর নাম প্রস্তাব করা হয়। জানিয়ে দেওয়া হয়, বিজেপির কোনও মুখ্যমন্ত্রী এর নেতৃত্বে থাকবে না। সনিয়া গাঁধী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগেই নারায়ণস্বামীর নাম চূড়ান্ত হয়ে যায়। কংগ্রেসের যুক্তি, কমিটিতে থাকলে বরং সরকারের ফাঁকফোকর ধরা যাবে। সরকারকে আরও চেপে ধরা যাবে। জেটলি মনে করছেন, কংগ্রেস দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে জাতীয় স্বার্থ জড়িত, এমন ক্ষেত্রে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সিদ্ধান্ত নেয়। এটি ডিজিটাল লেনদেন বাড়ানোর বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদি রোডম্যাপ তৈরির কমিটি। বর্তমান রাজনীতির সঙ্গে কোনও লেনাদেনা নেই। তাই দলের কাউকে কমিটিতে রাখা নিয়ে আপত্তি তোলেননি সনিয়া। বিজেপির ধারণা, জয়ললিতা পুরোপুরি সুস্থ ও সক্রিয় থাকলে তিনিও হাত বাড়াতেন।

নীতি আয়োগের ভাইস-চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানাগড়িয়া এবং সিইও অমিতাভ কান্তও রয়েছেন কমিটিতে। বাকি যে বিশেষজ্ঞদের এতে সামিল করা হয়েছে, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ মুখ নিলেকানিই। এই প্রাক্তন ইনফোসিস-কর্তার হাত ধরেই ইউপিএ জমানায় আধার কার্ডের ভিত বাড়িয়েছিলেন মনমোহন সিংহ, পি চিদম্বরম, মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়ারা। আবার এখন অমর্ত্য সেন থেকে কৌশিক বসু, মনমোহন সিংহ থেকে রঘুরাম রাজন— এক ঝাঁক অর্থনীতিবিদ যখন মোদীর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে চলেছেন, একা কুম্ভের মতো দুর্গ সামলাচ্ছিলেন এই নিলেকানিই। তাঁর মতে, নোট বাতিলের পদক্ষেপে স্বল্প মেয়াদে সমস্যা হলেও আখেরে সকলেরই সুবিধে হবে। আর্থিক লেনদেন ডিজিটাল হলে দেশের তথ্যভাণ্ডার সমৃদ্ধ হবে। অসৎ কাজ বা ব্যবস্থার বাইরে লেনদেন কমবে। রাশ টানা যাবে কালো টাকায়।

Nandan NIlekani aadhar card
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy