—ফাইল ছবি।
রাজনৈতিক তরজার আঙিনায় ফের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে টেনে আনল বিজেপি। এ বারও তাঁর নাম না করেই কটাক্ষ করা হল।
বুধবার উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে যে ভাবে অর্থনীতিবিদদের আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তাতে দেশ জুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এ দিন মহারাজগঞ্জের এক সভায় মোদী বলেন, ‘‘এক দিকে ওঁরা রয়েছেন, যাঁরা হার্ভার্ড-এর কথা বলেন, আর অন্য দিকে এই গরিবের সন্তান হার্ডওয়ার্ক করে দেশের অর্থনীতি বদলের কাজে লেগে রয়েছে।’’
কিন্তু, হঠাত্ অর্থনীতিবিদদের উপরে খড়্গহস্ত হলেন কেন মোদী?
বিজেপি-র একটি সূত্রের মতে, এর যথেষ্ট কারণ রয়েছে। গত নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণা করেন। সেই সময় মনমোহন সিংহ, অমর্ত্য সেন-সহ একাধিক অর্থনীতিবিদ তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। তাঁদের মত ছিল, নোটবাতিলের জোরালো প্রভাব পড়বে এ দেশের অর্থনীতিতে। কিন্তু, মঙ্গলবার মোদী সরকারের একটি পরিসংখ্যান অর্থনীতিবিদদের ওই আশঙ্কাকে কার্যত নস্যাত্ করে দিয়েছে। হাতে ‘অস্ত্র’ পেয়ে এ দিন মোদী তারই পাল্টা দিলেন।
আরও পড়ুন
কবর দেওয়া বন্ধ করতে হবে, দেশে অত জমি নেই: বিস্ফোরক সাক্ষী মহারাজ
ওই দিন সরকারের একটি পরিসংখ্যান দেখিয়েছিল, নোট বাতিলের কোনও আঁচ দেশের জাতীয় উত্পাদনের বৃদ্ধির হারের গায়ে লাগেনি। কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অক্টোবর-ডিসেম্বরে বৃদ্ধির ওই হার দাঁড়িয়েছে ৭ শতাংশে। আগের তিন মাসে (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) ৭.৪ শতাংশের তুলনায় কম হলেও, পূর্বাভাসের থেকে বেশি। জানুয়ারিতে পরিসংখ্যান মন্ত্রকের পূর্বাভাস ছিল, চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার হবে ৭.১%। কিন্তু নোট বাতিলের প্রভাব ওই হিসেবে ধরা হয়নি। সেই হিসেব কষেও পূর্বাভাসকে সেই ৭.১% রেখেছে কেন্দ্র। তবে এই পরিসংখ্যানে হিসেবের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ টি সি এ অনন্ত যেমন বলেছিলেন, ‘‘নোট বাতিলের প্রভাব মাপতে আরও তথ্য জরুরি।’’
এর আগে একই ইস্যুতে অমর্ত্য সেনের নাম না করে তাঁকে বিঁধেছিলেন বিজেপি-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। গত ১১ ফেব্রুয়ারি মৌলালি যুব কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে দিলীপবাবু বলেছিলেন, “আমাদের এক জন নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন। বাঙালি।... তিনি কী করেছেন? বাংলার কেউ বোঝে না। দুনিয়ার কেউ বোঝে না। উনি নিজেও বোঝেন কিনা সন্দেহ আছে। কী দিয়েছেন দেশকে? কী করেছেন উনি?” এখানেই থামেননি দিলীপ। রুচির সীমা আরও খানিক অতিক্রম করে বলেছিলেন, “এই ধরনের লোকেদের নিয়েই আমরা আজ গর্ববোধ করি। মেরুদণ্ড নেই, চরিত্র নেই।”
এ বার সেই পথেই হাঁটলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy