Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
National news

দলিত-আদিবাসী নন, তিনি জৈন, বজরঙ্গবলির সঙ্কট বাড়িয়ে সামনে এল নতুন বার্থ সার্টিফিকেট!

আগের জন্মপরিচয়ের সমস্ত হিসেব-নিকেশ উড়িয়ে এ বার তাঁকে নিজেদের ধর্মের বলে দাবি করলেন জৈনরা!

বজরঙ্গবলিকে এ বার জৈন বলে মন্তব্য করলেন মধ্যপ্রদেশের এক জৈন পুরোহিত। প্রতীকী ছবি।

বজরঙ্গবলিকে এ বার জৈন বলে মন্তব্য করলেন মধ্যপ্রদেশের এক জৈন পুরোহিত। প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ১১:০২
Share: Save:

বিড়ম্বনা যেন বেড়েই চলেছে বজরঙ্গবলির! তিনি দলিত নাকি বনবাসী নাকি আদিবাসী নাকি ব্রাহ্মণ বংশীয়, এই নিয়ে বিতর্ক ছিলই। বজরঙ্গবলিও হয়তো বা নিজের ধর্ম পরিচয় নিয়ে ঘোর চিন্তায় মগ্ন ছিলেন। চিন্তা বাড়িয়ে এ বার তাতে নতুন সংযোজন ‘জৈন’! আগের জন্মপরিচয়ের সমস্ত হিসেব-নিকেশ উড়িয়ে এ বার তাঁকে নিজেদের ধর্মের বলে দাবি করলেন জৈনরা!

সম্প্রতি এক জনসভায় বজরঙ্গবলির বার্থ সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা গোরক্ষনাথ মন্দিরের প্রধান পুরোহিত যোগী আদিত্যনাথ। তার পর থেকেই জন্ম পরিচয় নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়। তার ৪ দিনের মাথায় রবিবার বজরঙ্গবলির জন্মতথ্য বিচার করে মধ্যপ্রদেশের ভোপালের এক জৈন পুরোহিত নিদান দেন, ‘দলিতও নয়, আদিবাসীও নয়, বজরঙ্গবলি একজন জৈন’!

ভোপাল থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সমসগড়। এই সমসগড়েরই জৈন মন্দিরের প্রধান পুরোহিত তিনি। আচার্য নির্ভয় সাগর মহারাজ। তিনি বলেন, “জৈন ধর্ম মতে এমন মোট ২৪ জন কামদেব রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে হনুমানও একজন। হনুমান একজন যোদ্ধাও। জৈন ধর্মে হনুমানের প্রচুর উল্লেখ রয়েছে। অন্য জৈনদের মতো তাই হনুমানেরও কোনও জাত নেই। তিনি জৈন।”

আরও পড়ুন: হনুমানও ‘দলিত’! ত্রেতা যুগের বার্থ সার্টিফিকেট কলিতে দিলেন যোগী

সম্প্রতি রাজস্থানে এক জনসভায় হনুমানকে দলিত বলে সম্বোধন করেন যোগী আদিত্যনাথ। তারপর সমাজের বিভিন্ন মহলে তা নিয়ে বিতর্ক, সমালোচনা শুরু হয়। সমালোচনার পাশাপাশি হনুমানজিকে নিয়ে টানাহ্যাঁচড়াও শুরু করে দেন মানুষ। হনুমানকে শুধু ‘দলিত’ বলেই থেমে থাকেননি যোগী, ‘লোকদেবতা’, ‘বঞ্চিত’ও বলেছেন। তাতেও খেপেছেন ব্রাহ্মণরা। রাজস্থানের ব্রাহ্মণ সমাজ যোগীকে আইনি নোটিস পাঠায়। লখনউয়ের দলিত সংগঠন আবার হনুমান মন্দিরের উপরে তাদের অধিকার স্থাপনের দাবি করতে শুরু করে। হনুমানজি যেহেতু দলিত, তাই শুধুমাত্র দলিতদেরই দেশের সমস্ত মন্দিরে বজরঙ্গবলির পূজা-অর্চনার অধিকার রয়েছে, এমন দাবি তুলতে শুরু করেছে দলিত সম্প্রদায়। আবার বজরঙ্গবলিকে এত সহজে হাতছাড়া করার পাত্র নয় জাতীয় তফশিলী উপজাতি উন্নয়ণ পর্ষদও। বজরঙ্গবলি আসলে আদিবাসী, দাবি করেন জাতীয় তফশিলী উপজাতি উন্নয়ণ পর্ষদের চেয়ারপার্সন নন্দকুমার সাই। এর পিছনে যুক্তিও দিয়েছেন চেয়ারপার্সন। তাঁর মতে, ‘‘বছর পর বছর ধরে জঙ্গলই তাঁদের ঘর। রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রামকে সাহায্য করেছিলেন এঁরাই। এমনকী তফশিলী জাতির একটা উপজাতিও রয়েছে হনুমান নামে। আমার সঙ্গে একমত না হলে ইতিহাসটা একবার পড়ে দেখতে পারেন।’’

আরও পড়ুন: রাজ্যে রাজ্যে বিক্ষোভ, পদ্মবনে বাড়ছে কাঁটা

ভোট যুদ্ধে হিন্দুদের একত্রিত করতে গিয়ে যে উল্টো চাল চেলে ফেলেছেন যোগী, তা এখন বেশ ঠারেঠোরে টের পাচ্ছে বিজেপি। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহও এই বিষয়ে বেশ অসন্তুষ্ট। তাঁকে যোগীর ‘বজরঙ্গবলি দলিত’ মন্তব্য নিয়ে জানতে চাওয়া হলে, তিনি সে কারণে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE