Advertisement
E-Paper

মহাপ্রলয়ের অপেক্ষায় মেঘালয়ের ৯টি পরিবার

ওঁদের কেউ ছিলেন সরকারি কর্মী, কেউ শিক্ষক, দোকানদার, কৃষক। কিন্তু আচমকা কাজ ছেড়েছেন সকলে। স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেছে তাঁদের বাড়ির ছোটরাও। মেঘালয়ের পশ্চিম খাসি হিলের প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামের ৯টি পরিবারের জীবন বদলেছে একটি ভবিষ্যৎবাণীতে। সব কিছু ছেড়ে তাঁরা অপেক্ষা করছেন পৃথিবীর শেষ দিনের জন্য! ঘটনার সূত্রপাত বছর দু’য়েক আগে। খাসি পাহাড়ের ছোট্ট গ্রাম নোংথলেউ। মইরাং ব্লকের ওই গ্রামে এক দিন ধর্মপ্রচার করতে যান এক যাজক। গ্রামবাসীদের তিনি জানান, বিশ্বের ধ্বংস আসন্ন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৬

ওঁদের কেউ ছিলেন সরকারি কর্মী, কেউ শিক্ষক, দোকানদার, কৃষক। কিন্তু আচমকা কাজ ছেড়েছেন সকলে। স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেছে তাঁদের বাড়ির ছোটরাও।

মেঘালয়ের পশ্চিম খাসি হিলের প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামের ৯টি পরিবারের জীবন বদলেছে একটি ভবিষ্যৎবাণীতে। সব কিছু ছেড়ে তাঁরা অপেক্ষা করছেন পৃথিবীর শেষ দিনের জন্য!

ঘটনার সূত্রপাত বছর দু’য়েক আগে। খাসি পাহাড়ের ছোট্ট গ্রাম নোংথলেউ। মইরাং ব্লকের ওই গ্রামে এক দিন ধর্মপ্রচার করতে যান এক যাজক। গ্রামবাসীদের তিনি জানান, বিশ্বের ধ্বংস আসন্ন। আর কয়েক দিনে পরেই মহাজাগতিক বিস্ফোরণে প্রাণীজগতের অস্তিত্ব শেষ হবে। এর পর শুরু হবে ঈশ্বরের আদালতে শেষ বিচারের পালা। যে যত জাগতিক মায়াজালে আবদ্ধ থাকবে, তাঁদের স্বর্গবাসের সম্ভাবনা ততই ক্ষীণ। টাকার লোভ, জাগতিক সুখ, চাকরির ছলনায় পা দিলেই নরকের তপ্ত কড়াইয়ে ভাজা হতে হবে। এমনই জানিয়ে দিয়ে যান ওই যাজক।

বেশির ভাগ গ্রামবাসীই সে সব কথা মানেননি। কিন্তু কয়েকটি পরিবার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। গ্রামপ্রধান স্পোর্টিং মাওলং জানান, সরকারি দফতরের দুই কর্মচারী ও গ্রামের স্কুলের তিন শিক্ষক সিদ্ধান্ত নেন— শেষের কয়েকটা দিন কাজ কর্মে নষ্ট না করে পরিবারের সঙ্গে কাটাবেন। তা ছাড়া চাকরি মানেই বেতন, টাকার লেনদেন হবেই।
তাতে পাপ আরও বেড়ে যাবে। তাই সরকারি চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছেন সকলে। আরও ৪টি পরিবার সব কাজকর্ম বন্ধ করে দেন। তাঁরা সন্তানদের বাড়িতে বসিয়ে রেখেছে, রেশন দোকান থেকে কেরোসিন, খাদ্যসামগ্রী নেওয়াও বন্ধ করেছে। শুধু নিজেদের জমির ফসলই তাঁদের সম্বল। টাকার লেনদেন পুরোপুরি বন্ধ করতে ব্যাঙ্ক থেকে সব টাকাও তুলে নিয়েছেন ওই সব পরিবারের কর্তারা। গ্রামপ্রধান জানিয়েছেন, ভোটার পরিচয়পত্র ফেলে দিয়েছেন তাঁরা। গির্জায় যাওয়া বন্ধ করেছেন। গির্জার যাজক ও গ্রামের প্রবীণরা তাঁদের বোঝানোর অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।

জেলাশাসক এস খারলিংডো বলেন, ‘‘যে যাজক এ সব কথা প্রচার করেছেন, তাঁকে চিহ্নিত করা যায়নি. পরিবারগুলি স্বেচ্ছায় এই পথ বেছে নিয়েছেন। তাঁরা কোনও অপরাধ করেননি। তাদের বোঝানোর চেষ্টা করা হবে। তবে, এ ব্যাপারে ধর্মীয় নেতাদেরই বেশি উদ্যোগ নিতে হবে।’’

এ দিকে, মেঘালয় প্রেসবিটেরিয়ান গির্জার তরফে জানানো হয়েছে, তাঁদেরই এক সদস্য বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে ওই উদ্ভট প্রচার চালিয়েছিলেন। গির্জা ওই কথায় বিশ্বাস করে না। গুজব ছড়ানো ও গির্জার ভাবমূর্তি খারাপ করার জন্য দু’বছর আগেই ওই সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

Khasi Hill doomsday prophet guwahati meghalaya bank school
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy