কোনও মুসলিম ১৯৩৪ সালের পর থেকে ‘রামমন্দির’-এ ঢোকেননি। বাবরি মসজিদের অস্তিত্ব কার্যত অস্বীকার করে আজ সুপ্রিম কোর্টে নির্মোহী আখড়া দাবি করল, অযোধ্যার বিতর্কিত জমিই রামের জন্মস্থান। সেখানে বহু বছর ধরেই রামলালার পুজো হয়ে আসছে। নির্মোহী আখড়ার ব্যবস্থাপনাতেই রামলালার পুজো চলছিল। গোটা এলাকাই নির্মোহী আখড়ার নিয়ন্ত্রণে ছিল। ঝাঁসির যুদ্ধের সময় ঝাঁসির রাণী অযোধ্যার মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাঁকে নির্মোহীরাই রক্ষা করেছিলেন। সেই যুক্তিতেই আজ রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদের বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমির পুরোটার দখল চেয়েছে নির্মোহী আখড়া। মঙ্গলবার থেকে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে অযোধ্যার বিতর্কিত জমি নিয়ে রোজ শুনানি শুরু হল। আরএসএস-সঙ্ঘ পরিবার মনে করছে, রামমন্দির তৈরির দামামাও বেজে গেল।
অযোধ্যার জমিতে রামমন্দিরের কথা শুনে আজ প্রধান বিচারপতি গগৈ প্রশ্ন তুলেছেন, বাবরি মসজিদের জমিতে যে রামমন্দির ছিল, তার প্রমাণ কোথায়? ইলাহাবাদ হাইকোর্ট এই নির্মোহী আখড়া, রাম লালা ও সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের মধ্যে অযোধ্যার জমি ভাগ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। তার বিরুদ্ধে সব পক্ষই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। সেই হাইকোর্টের রায় উদ্ধৃত করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ওখানে কোনও মন্দিরের অস্তিত্ব বা মূর্তির প্রমাণ মেলেনি।
নির্মোহী আখড়ার আইনজীবী সুশীল জৈনের যুক্তি, গোটা কাঠামোই ১৯৯২-তে ভেঙে ফেলা হয়েছে। রামের জন্মস্থানে দেবতার পুজোর উপরে গুরুত্ব দেন তিনি। সেই সঙ্গে তাঁর যুক্তি, কোনও স্থানে যদি নমাজ বা প্রার্থনা না হয়, তা হলে তাকে মসজিদ বলা যায় না। মসজিদ হলে সেখানে মুসলিমদের নমাজের আগে হাত-পা ধোয়া বা উজু করার ব্যবস্থা থাকত। বিতর্কিত জমি বা বাবরি মসজিদে তা ছিল না। প্রধান বিচারপতি যুক্তি দেন, ইলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে বলা রয়েছে, ১৯৩৪-এর আগে মুসলিমরা নিয়মিত ওখানে প্রার্থনা করত। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় প্রশ্ন তোলেন, নির্মোহী আখড়া কীসের ভিত্তিতে পুরো জমির নিয়ন্ত্রণ চাইছে? তা দখলে ছিল বলে, না কি মালিকানা ছিল বলে? জৈন বলেন, দখলের ফলে মালিকানার ভিত্তিতে।