বাংলার জন্য ‘একলা চলো’ নীতি নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রিপুরার জন্য সেই নীতিই নিলেন রাহুল গাঁধী!
ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে বাম ও বিজেপি-বিরোধী ভোটের বিভাজন আটকাতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের প্রস্তাব ছিল তৃণমূলের। রাজ্যের মোট ৬০টি আসনের মধ্যে অর্ধেক কংগ্রেসকে ছেড়ে দিয়ে বাকি আসন আইএনপিটি-সহ উপজাতি সংগঠনগুলির সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার প্রস্তাব ছিল তাদের। কিন্তু শুক্রবার কংগ্রেস সভাপতি রাহুলের উপস্থিতিতে এআইসিসি-র কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি ঠিক করেছে, মানিক সরকারের রাজ্যে তারা একাই লড়বে। প্রার্থী দেওয়া হবে ৬০টি আসনেই।
কংগ্রেসের সিদ্ধান্তে সিপিএমের ‘সুবিধা’ই দেখছে তৃণমূল। দলের তরফে ত্রিপুরার পর্যবেক্ষক সব্যসাচী দত্তের মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেস তার মানে সিপিএমকে জায়গা ছেড়ে দিচ্ছে! যদি তারা একাই লড়ে, আমরা আমাদের মতো চলব। আইএনপিটি-র সঙ্গে আমরা সমঝোতা করার চেষ্টা করব।’’ সব্যসাচী আজ, শনিবারই ফের ত্রিপুরা যাচ্ছেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, তারা দু-এক দিনের মধ্যে ১৪টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দেবে। উপজাতি সংরক্ষিত আসনে আইএনপিটি কত আসনে লড়তে পারবে, তা আলোচনা করে দেখা হবে। আইপিএফটি-র একটি বিক্ষুব্ধ অংশ এবং এনসিটি নামে অন্য একটি উপজাতি সংগঠনও এখন বিজয় রাঙ্খলের আইএনপিটি-র সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। সেই অঙ্কও মাথায় রাখতে হচ্ছে তৃণমূলকে।
প্রথমে তৃণমূল এবং পরে বিজেপি-র ধাক্কায় রাজ্যে সংগঠন ভেঙে গেলেও লোকসভা ভোটের আগে নিজেদের জনসমর্থন যাচাই করে নেওয়ার উপরেই জোর দিচ্ছেন রাহুল। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের যুক্তি, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে গোটা দেশের রাজনীতির সমীকরণে অনেক অদল-বদল আসতে পারে। তার আগে ত্রিপুরার মতো রাজ্যে, যেখানে কংগ্রেসের বিরাট কিছু করার কোনও সম্ভাবনা নেই, সেখানে কোনও দলের সঙ্গে জোটের দৃষ্টান্ত খাড়া করার দরকার নেই। তা ছাড়া, ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির যুক্তি, তৃণমূলই প্রথমে ওই রাজ্যে কংগ্রেস ভাঙিয়েছে। এখন আবার তাদের সঙ্গে জোট কী প্রয়োজন? দিল্লিতে এ দিন রাতে রাহুলের বাড়িতে নির্বাচন কমিটির সঙ্গে মুকুল ওয়াসনিকের নেতৃত্বে ত্রিপুরার জন্য এআইসিসি-র স্ক্রিনিং কমিটি এই সব যুক্তি নিয়েই আলোচনা চালিয়েছে। তৃণমূল এবং আইএনপিটি-র সঙ্গে জোটের বদলে একক শক্তিতে লড়ার পক্ষেই এআইসিসি রায় দিয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর।
কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘মূল লক্ষ্য এখন বিজেপি-কে ঠেকানো। ত্রিপুরায় সেই কাজ করতে পারবেন মানিক সরকারই। আমাদের কাজ হবে এই ভোটে নিজেদের শক্তি মেপে নেওয়া।’’ স্ক্রিনিং কমিটির কাছে পাঠানো তালিকা অনুসারে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিংহ ও পরিষদীয় নেতা গোপাল রায় দু’জনেই ফের প্রার্থী হচ্ছেন। অধিকাংশ আসনে তরুণ, নতুন মুখ এনে পরীক্ষা চালানো হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy