Advertisement
০৭ মে ২০২৪

মিলছে ২ হাজারের নোট, হতাশ শিলচর

শিলচরে এটিএম পরিষেবা আজও চালু করা যায়নি। কবে নাগাদ চালু হবে, তা সুনিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ। নোট বদলের ব্যবস্থা হয়েছে শুধু শিলচরের প্রধান ডাকঘরে। সন্ধ্যায় পৌঁছনো হয়েছে শিলকুড়ি শাখায়। তা-ও ছোট নোট নেই। ২ হাজারের নোট হাতে অনেককেই হতাশ হয়ে ফিরতে দেখা গিয়েছে।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর ব্যাঙ্কে মিলল ২ হাজারের নোট। ফের অসহায় গ্রাহকরা। শনিবার শিলচরে। ছবি:  স্বপন রায়।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর ব্যাঙ্কে মিলল ২ হাজারের নোট। ফের অসহায় গ্রাহকরা। শনিবার শিলচরে। ছবি: স্বপন রায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলচর শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:০০
Share: Save:

শিলচরে এটিএম পরিষেবা আজও চালু করা যায়নি। কবে নাগাদ চালু হবে, তা সুনিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ। নোট বদলের ব্যবস্থা হয়েছে শুধু শিলচরের প্রধান ডাকঘরে। সন্ধ্যায় পৌঁছনো হয়েছে শিলকুড়ি শাখায়। তা-ও ছোট নোট নেই। ২ হাজারের নোট হাতে অনেককেই হতাশ হয়ে ফিরতে দেখা গিয়েছে।

২ হাজারের নোট দেওয়া হয়েছে স্টেট ব্যাঙ্কের প্রধান শাখাতেও। তবে সেখানে তাঁদের ৩টি এটিএম-ই আজসকাল থেকে সচল রয়েছে। এটিএমে টাকা ঢুকিয়েছে এক্সিস ব্যাঙ্ক এবং আসাম কো-অপারেটিভ অ্যাপেক্স ব্যাঙ্কও। সবারই ছোট নোট। এটিএমে এখনও ২ হাজার নোট ঢোকায়নি কেউ।

কিন্তু টাকা বিলিয়েও সমস্যার পরিবর্তন হয়নি। যে ৫-৭টি এটিএম চালু হয়েছে, সেগুলি চাহিদার তুলনায় নগণ্য। ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক, ইয়েস ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি-সহ সবাই জানিয়ে দিয়েছে— টাকার অভাবে এটিএম পরিষেবা শুরু করা যাচ্ছে না। আজ সামান্য যা কিছু টাকা তাঁরা পেয়েছেন, তাতে কাউন্টার সামলানোই কঠিন ছিল। তাই লাইনে দাঁড়ানো মানুষগুলিকে ফিরিয়ে দিয়ে এটিএমে টাকা ঢোকানোর ঝুঁকি তাঁরা নেননি। ফলে কোনও এটিএমে কাগজ ঝুলছে, ‘আউট অব অর্ডার’। কোথাও দরজাতেই বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘নো সার্ভিস’। অধিকাংশ এটিএমেরই ঝাঁপ ফেলে রাখা হয়েছে।

কেন টাকা নেই? সবারই এক কথা— স্টেট ব্যাঙ্ক দিচ্ছে না। স্টেট ব্যাঙ্কের বক্তব্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক পাঠাচ্ছে না। নোট বাতিলের নতুন নির্দেশিকা জারির পর এক দিনই কিছু টাকা এসেছিল। তাও শুধু ২ হাজার টাকার নোট। তিন দিন ধরে নিজেদের কাছে যা ছোট নোট ছিল, সব দিয়ে বাতিল টাকা বদলানো হয়। আজ সেই ভাণ্ডারও একেবারে ফাঁকা। ফলে ২ হাজারের নোটই বিলি করতে হয়েছে।

কবে নাগাদ টাকা আসছে, বলতে পারছেন না স্টেট ব্যাঙ্কের কর্তাব্যক্তিরা। তবে ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের চিফ রিজিওনাল ম্যানেজার হীরেন্দ্র নারায়ণ ঘোষাল জানিয়েছেন, তাঁদের টাকা আগামী কাল পেয়ে যেতে পারেন। এখানে দু’টিই চেস্ট ব্যাঙ্ক। স্টেট ব্যাঙ্ক ও ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক। লিড ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার গৌরীকান্ত ভট্টাচার্যেরও আশা, দুই-তিনদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু হবে।

আজ কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই। তবে ডাককর্মীরা আশঙ্কায় ভুগছেন, কখন তাঁদের অশান্তির মুখে পড়তে হয়। কারণ দূরদর্শন-সহ সমস্ত চ্যানেলগুলিতে বারবার বলা হচ্ছে, ডাকঘরেও টাকা বদলানো যাবে। এখানে কোনও ডাকঘরে টাকা নেই। আজ স্টেট ব্যাঙ্ক থেকে ৫০ লক্ষ টাকার মতো পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু প্রধান ডাকঘরেই এর চেয়ে বেশি চাহিদা ছিল। তবু শিলকুড়ি শাখা ডাকঘরে কিছু টাকা পাঠাতে হয়েছে। সেখানে আগামী কাল থেকে বরমবাবার মেলা। চা শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকাটি অনেকটাই ডাকঘর নির্ভর।

এ দিকে, চা বাগানগুলিতে সাপ্তাহিক মজুরি প্রদানের জন্য গতকাল একটি উপায় বের করা হয়েছিল। আজ সেখানেও সমস্যা দেখা দেয়। নতুন নির্দেশিকায় কোনও অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকার বেশি দেওয়া হয় না। অথচ একেকটি বাগানে মজুরি বাবদ প্রয়োজন কয়েক লক্ষ টাকা। জেলাশাসক এস বিশ্বনাথন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে গত কালই চূড়ান্ত করেন, পৃথক শ্রেণির অ্যাকাউন্ট করা হবে চা বাগানগুলির জন্য। সেখানে ১০ হাজার টাকার উর্ধ্বসীমা থাকবে না। ব্যাঙ্কগুলির তাতে কোনও আপত্তি না থাকলেও মুশকিল হল, কোনও ব্যাঙ্কের তহবিলে টাকা নেই। ফলে গৌরীকান্তবাবু জানান, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে চাহিদা মতো টাকা এসে না পৌঁছনো পর্যন্ত কোনও প্রক্রিয়াই সঠিক ভাবে কাজ করবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

2000 notes
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE