বিজোড়ের দিনে জোড় গাড়িতে। সংসদে বিজেপির পরেশ রাওয়াল। ছবি: পিটিআই।
এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছিল সাংসদদের বেতন বাড়ানোর দাবির সময়। সংসদের ক্যান্টিনে খাবারের ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়েও একমত হয়েছিলেন দলমত নির্বিশেষে সাংসদরা।
ফের এক বার রাজনৈতিক মতানৈক্য দূরে সরিয়ে সব সাংসদের এক রা! এ বার উদ্দেশ্য জোড়-বিজোড়ের ফাঁদ থেকে নিষ্কৃতি।
সোমবার সংসদে দলমত নির্বিশেষে সাংসদরা দিল্লির জোড়-বিজোড় নীতি থেকে তাঁদের রেহাই দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
শুধু সংসদে দাবি তোলাই নয়, এ দিন সংসদে আসার পথে জোড়-বিজোড়ের ফাঁদে পড়েছেন বেশ কিছু সাংসদ। বিজোড়ের দিন জোড় সংখ্যার গাড়িতে চেপে সংসদে এসেছেন বিজেপির পরেশ রাওয়াল, উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভুবনচন্দ্র খান্ডুরি, উদিত রাজ, প্রহ্লাদ পটেল। জোড় সংখ্যার গাড়িতে সংসদে আসতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেস সাংসদ কমল নাথকেও। পরেশ তো দিল্লি পুলিশকে দু’হাজার টাকা জরিমানাও দিয়েছেন। পরে অবশ্য টুইটারে ক্ষমা চেয়ে পরেশ লেখেন, ‘‘গুরুতর ভুল হয়ে গিয়েছে। অরবিন্দ (কেজরীবাল) ও দিল্লিবাসীদের কাছে দুঃখিত।’’ পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেও ক্ষমা চেয়েছেন অভিনয় জগৎ থেকে রাজনীতিতে পা রাখা পরেশ।
জোড়-বিজোড় নীতির জন্য এ দিন সাংসদদের সংসদে পৌঁছে দিতে ছ’টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসের ব্যবস্থা করেছিল দিল্লি সরকার। কিন্তু হাতে গুনে দু’-এক জন ছাড়া সেই বাসে কেউই চড়েননি। বরং আইন ভেঙেছেন বেশ কিছু সাংসদ।
জোড়-বিজোড় নীতি বানানোর জন্য সংসদে এ দিন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের তীব্র সমালোচনা করেন সাংসদরা। লোকসভায় কেজরীবালকে ‘মানসিক রোগী’ আখ্যা দেন পাপ্পু যাদব। রাজ্যসভায় নরেশ অগ্রবাল বলেন, ‘‘দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী খামখেয়ালিপনা শুরু করেছেন। এর পর তো এক দিন পুরুষ, আর এক দিন মহিলাদের রাস্তায় বেরোনোর আইন বানাবেন!’’ রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদও বলেন, ‘‘বেসরকারি গাড়ি নিলেও তা সংসদে প্রবেশ করতে পারবে না। যে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা-ও পর্যাপ্ত নয়। সাংসদদের এর থেকে নিষ্কৃতি দেওয়া উচিত।’’
সব শুনে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পি জে কুরিয়েন বলেন, ‘‘আমি শুনেছি জোড়-বিজোড়ের জেরে সাংসদরা সময় মতো সংসদে পৌঁছতে পারছেন না। একটি কমিটির বৈঠকেও এক ঘণ্টা দেরি হয়েছে।’’ তাঁর রসিকতা, ‘‘সাংসদরা সংসদে এসে হল্লা করতে চাইলেও তো সময়ে পৌঁছনো দরকার। দিল্লি সরকারের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত অবিলম্বে এর একটা সমাধান বার করা।’’ সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি আশ্বাস দেন, ‘‘কেন্দ্র উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এর পথ খোঁজার চেষ্টা করবে।’’
আপ অবশ্য ‘মুষ্টিমেয়’ সাংসদদের দাবি মেনে আইন বদলানোর পক্ষপাতী নয়। দলের মুখপাত্র রাঘব চাড্ডা বলেন, ‘‘যেখানে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এই আবেদনে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছেন, তখন সাংসদদেরও উচিত আইন মেনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।’’
আর এই বিতর্কের মধ্যেই নজর কেড়েছেন বিজেপি সাংসদ অনিল দাভে। তিনি একটি সাইকেল কিনে ফেলেছেন। তা-ও সবুজ রঙের। দিল্লির ঠা-ঠা রোদ্দুরে মাথায় টুপি পরে সাইকেল চালিয়ে আজ সংসদে আসেন তিনি। অনিলের কথায়, ‘‘সাইকেলে চেপে এলে কোনও বিধিনিষেধও নেই। আবার পরিবেশের দিক থেকেও মঙ্গল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy