ওবিসি তালিকায় সংরক্ষণ চেয়ে হরিয়ানা-রাজস্থানে আন্দোলনে নেমেছেন জাঠেরা। গুজরাতে পটেলদের জন্য সংরক্ষণ চেয়ে লড়ছেন হার্দিক পটেল। রাজস্থান-গুজরাতে বিধানসভা ভোটের আগে সংরক্ষণ-আন্দোলন ধামাচাপা দিতেই হবে বিজেপিকে। পাশে টানতে হবে জাঠ-পটেলদের। তা ছাড়া উত্তরপ্রদেশে জাঠেদের বড় অংশ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। তার প্রতিদানও দিতে হবে। আর এত কিছু করার লক্ষ্যেই যে কোনও সম্প্রদায়কে ওবিসি-তালিকাভুক্ত করার ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নিতে মরিয়া নরেন্দ্র মোদী সরকার।
একাধিক বিরোধী নেতার বক্তব্য, মোদী সরকারের এই চেষ্টা শুধু সুপ্রিম কোর্টকে এড়ানোর চেষ্টা নয়। রাজ্যের থেকে কিছু ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ারও চেষ্টা। সে কারণেই মোদীর প্রচেষ্টায় বাধ সাধতে এক জোট হচ্ছে বিরোধীরা। আজ লোকসভায় ১২৩-তম সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করিয়ে মোদী সরকার অনগ্রসর শ্রেণির জন্য নতুন সাংবিধানিক মর্যাদাপ্রাপ্ত জাতীয় কমিশন তৈরির রাস্তা তৈরি করেছে। যেমনটা তফসিলি জাতি-উপজাতির কমিশনের জন্য রয়েছে। বিল অনুযায়ী, কেন্দ্র রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা করে সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে পিছিয়ে থাকা শ্রেণিকে অনগ্রসর শ্রেণি হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেন। লোকসভায় শক্তির অভাবে না পারলেও রাজ্যসভায় এই বিল আটকাতে সক্রিয় বিরোধীরা। তাঁরা চান, বিলটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হোক। কংগ্রেসের পাশাপাশি তৃণমূল, সপা-র মতো দলগুলির অভিযোগ, কোন সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকাভুক্ত করা হবে, সেই ক্ষমতা রাজ্যের হাত থেকে কেড়ে নিচ্ছে কেন্দ্র।
আজ লোকসভায় তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শীর্ষ আদালতের রায়ে অনগ্রসর শ্রেণি চিহ্নিত করার ক্ষমতা ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাজ্যকে দেওয়া হয়েছে। সংবিধান সংশোধন করে কেন্দ্র সেই ক্ষমতা কাড়তে চাইছে।’’ সপা সাংসদ ধর্মেন্দ্র যাদব বলেন, ‘‘সংবিধান সংশোধন করে ওবিসি তালিকা থেকে কোনও সম্প্রদায়কে বাদ দেওয়ার ক্ষমতাও কাড়তে চাইছে কেন্দ্র।’’ কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী তাহর চাঁদ গহলৌত রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপের দাবি ওড়ালেও মানতে নারাজ বিরোধীরা। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, ‘‘রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলছেন। আলোচনা ও মতামত নেওয়ার মধ্যে ফারাক রয়েছে।’’ গহলৌত পাল্টা বলেন, ‘‘রাজ্যপাল রাজ্যের মতই কেন্দ্রকে জানাবেন। সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে।’’
২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে ইউপিএ সরকার জাঠেদের ওবিসি হিসেবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলেও সুপ্রিম কোর্ট তা খারিজ করে দেয়। শীর্ষ আদালতের যুক্তি ছিল, জাঠেদের সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থা যথেষ্ট ভাল। এখন কেন্দ্র অনগ্রসর শ্রেণি কমিশনকে সাংবিধানিক মর্যাদা দিলে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে তাদের কোনও সিদ্ধান্ত খারিজ করা সম্ভব হবে না বলেই মনে করছে মোদী সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy