Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ছাত্র বিক্ষোভের পাশে বিরোধীরা

গত কাল দিল্লি এবং আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের উপর পুলিশ চড়াও হওয়ার পরেই, নড়েচড়ে বসেছে কংগ্রেস।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:৩৯
Share: Save:

নাগরিকত্ব আইন সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ মূল সুরটিকে লঙ্ঘন করছে— সংসদের বাইরে ও ভিতরে এই মর্মে বিরোধিতা করেই এত দিন ক্ষান্ত ছিল কংগ্রেস ও বিরোধী দলগুলি। তৃণমূল ও বামেরা ছাড়া অন্যদের রাস্তায় নেমে সে ভাবে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। কিন্তু গত কাল দিল্লি এবং আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের উপর পুলিশ চড়াও হওয়ার পরেই, নড়েচড়ে বসেছে কংগ্রেস। আজ দুপুরে এক দিকে এসপি, বাম, আরজেডি-র মতো বিরোধীদের পাশে নিয়ে ঘটনার নিন্দা করে সাংবাদিক সম্মেলন করেন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ এবং কপিল সিব্বল। তার ঠিক পরেই ইন্ডিয়া গেটের কাছে দু’ঘণ্টার জন্য ধর্নায় বসেন প্রিয়ঙ্কা বঢরা।

আজ দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত থাকতে কংগ্রেস আমন্ত্রণ জানিয়েছিল তৃণমূল-সহ প্রায় সব বিরোধী দলকে। কিন্তু গুলাম নবি নিজেই জানান, তড়িঘড়ি এই বৈঠকের আয়োজন করায় তৃণমূল-সহ অনেক দলের নেতাই আসতে পারেননি। কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছেন, কাল বিকেলে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে যাচ্ছেন বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পুলিশি বর্বরতার’ প্রতিবাদ জানাতেই এই সাক্ষাৎ। বিরোধী বৈঠকে না গেলেও ছাত্রদের ওপর দিল্লি পুলিশের আক্রমণের নিন্দা করেছে তৃণমূল। দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওখানে ছাত্রদের ওপর যে অত্যাচার হয়েছে, তার নিন্দা জানাই।’’

আজ এক মঞ্চে গুলাম নবি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের কপিল সিব্বল, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, আরজেডি-র মনোজ ঝা, এসপি-র জাভেদ আলি প্রমুখ। সিব্বল আজ জানিয়েছেন, সাম্প্রদায়িক অশান্তি যদি শাসক দলের ইন্ধনে ও নির্দেশে হয় তা হলে তা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এখানে মূলত সেটাই হচ্ছে। আর তাই গোটা দেশে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। গুলাম নবির কথায়, ‘‘আমরাও ছাত্র রাজনীতি করেছি। আন্দোলন করার অধিকার আছে ছাত্রদের। কিন্তু পুলিশ যে ভাবে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে ছাত্রদের বেধড়ক পিটিয়েছে তা বর্বরোচিত। অবিলম্বে তার বিচারবিভাগীয় তদন্ত হোক।’’

আরও পড়ুন: মোদীর ‘পোশাক’ মন্তব্যেই কি বেড়েছে পুলিশের সাহস?

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কোথায়— এই প্রশ্নেও সরব হয়েছেন বিরোধী নেতারা। ইয়েচুরির বক্তব্য, ‘‘পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে মারধর করল, কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কেউ খুঁজে পাচ্ছে না। কোথায় তিনি?’’ সিপিআই নেতা ডি রাজাও একই প্রশ্ন তুলে জাবি জানিয়েছেন, ‘‘অমিত শাহ এই ঘটনার জবাব দিন!’’ তাঁর কথায়, দেশে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আরজেডি-র মনোজ ঝা জানিয়েছেন জামিয়া এবং আলিগড়ের ছাত্রদের সঙ্গে সহমর্মিতা জানাতে ২১ তারিখ বিহার বন্‌ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। গুলাম নবির মতে, দেশবাসীকে পাকিস্তানের জুজু দেখিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক অভিষ্ট সিদ্ধ করতে তৎপর সঙ্ঘ-বিজেপি। অথচ পাকিস্তান এখন অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু ও রুগ্ন একটি বাঘ ছাড়া কিছু নয়। অন্য দিকে বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বিরোধীদের সাংবাদিক বৈঠককে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘কিছু বিরোধী দল ছাত্রদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার খেলায় নেমেছে। তারা ঘৃণার রাজনীতি ছড়াতে চাইছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jamia Millia Islamia CAA Citizenship Amendment Act
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE