E-Paper

তৃণমূলের সাকেতকে অভিনন্দন কংগ্রেসের চিদম্বরমের

চিদম্বরম টুইটে বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভায় মনোনীত হওয়ার জন্য সাকেত গোখলেকে অভিনন্দন। তিনি তথ্যের অধিকার আইনকে কাজে লাগিয়ে নতুন ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে পেরেছেন।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৩ ০৫:১২
saket gokhale

সাকেত গোখলে। —ফাইল চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসার জেরে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষে কংগ্রেস কর্মীদের যখন মৃত্যু ঘটেছে, কিছুটা অভূতপূর্ব ভাবেই রাজ্যসভায় তৃণমূলের মনোনীত এক প্রার্থীকে টুইট করে অভিননন্দন জানালেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা পি চিদম্বরম। গত কাল তৃণমূলের মুখপাত্র সাকেত গোখলের নাম রাজ্যসভার প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছে দল। আজ সকালে চিদম্বরমের টুইট, “পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভায় মনোনীত হওয়ার জন্য সাকেত গোখলেকে অভিনন্দন। তিনি তথ্যের অধিকার আইনকে কাজে লাগিয়ে নতুন ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে পেরেছেন।”

স্বাভাবিক ভাবেই চিদম্বরমের এই টুইট ভাল ভাবে নেননি প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। হচ্ছে প্রতিবাদ। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, বেঙ্গালুরুতে বিরোধী বৈঠকের এক সপ্তাহ আগে কংগ্রেস নেতৃত্বের এই মনোভাব যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। শুধু আজ চিদম্বরমই নন। পঞ্চয়েত ভোটের হিংসা নিয়ে যখন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন, তখন তাঁকে সঙ্গ দিতে কিন্তু দেখা যায়নি কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। বরং কংগ্রেসের তিন জন নিহত হওয়ার পরেও কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে তৃণমূলের নাম না করে শুধুমাত্র হিংসার নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, “গণতন্ত্রে হিংসার কোনও জায়গা নেই।” কংগ্রেস মুখপাত্র বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, ‘তৃণমূলকে দেখা যাচ্ছে হিংসার বিরুদ্ধেই কথা বলতে।’

এই পরিস্থিতিতে প্রদেশ যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অমিতাভ চক্রবর্তী কার্যত বিদ্ধ করেছেন চিদম্বরমকে। তাঁর টুইট, “এটা হয়তো সৌজন্যের প্রকাশ। কিন্তু পঞ্চায়েতে বর্বরোচিত হিংসার কোনও নিন্দা আপনি করেছেন কি? যাঁর দল ৪৩টি প্রাণ নিয়েছে, তাঁকে কী করে অভিনন্দন জানান? নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে সমবেদনার বার্তা পাঠিয়েছেন কি?”

গত দু’বছর কংগ্রেসের প্রতি তৃণমূলের যে ‘অ্যালার্জি’ দেখতে অভ্যস্ত জাতীয় রাজনৈতিক শিবির, সেটি কার্যত কমে গিয়ে সম্পর্কে মাধুর্য এসেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। মমতার দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তারা কংগ্রেসের কাছ থেকে ঔদার্য প্রত্যাশা করে। গত পটনা বৈঠকে সেই ঔদার্যের কোনও খামতি রাখেননি কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী। সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ঘটনাকে ঘিরে কংগ্রেসের মধ্যে যে তিক্ততা তৈরি হয়েছিল, তা রাজ্য স্তরে বহাল থাকলেও কেন্দ্রীয় স্তরে কংগ্রেস-তৃণমূল সম্পর্ক ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হয়েছে। এমনকি গত মাসে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ ও প্রাক্তন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী ওড়িশার রেল দুর্ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধলে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ মমতার দলের পাশে দাঁড়ান। পাল্টা জয়রামের টুইটকে সমর্থন করেন তৃণমূলের সাকেত গোখলে। তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য ছিল, কংগ্রেস এবং তৃণমূলের সমন্বয় নিছক কাকতালীয় বিষয় নয়।

সূত্রের খবর, আপ এবং কংগ্রেসের মধ্যে পঞ্জাবে যে তিক্ততা চলছে তা যাতে বেঙ্গালুরুর আলোচনাকে ব্যাহত করতে না পারে, সেই জন্যও দৌত্য করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আসন্ন বাদল অধিবেশনে কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লির আমলাদের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত অধ্যাদেশটি আইনে পরিণত করতে যদি বিল আনে, তা হলে আপ-এর পাশে দাঁড়িয়ে বিরোধিতাই করবে কংগ্রেস। যদিও এই নিয়ে আগে কোনও কথা বলতে চাইছে না তারা।

তৃণমূলের দাবি, বেঙ্গালুরুর বৈঠকে বিজেপি-বিরোধিতায় সবাই ঐক্যবদ্ধ মন নিয়েই বসবেন। ১৭ জুলাই পৌঁছে যাবেন সব দলের নেতারা, এই দিন সন্ধ্যায় নেতারা ঘণ্টাখানেকের জন্য সৌজন্যমূলক আলাপচারিতা সারবেন। পরের দিন বৈঠকের জন্য নির্ধারিত রয়েছে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Saket Gokhale P Chidamabaram TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy