Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পদ্মাবত নিয়ে বিক্ষোভে রাশ

করণী সেনার জাতীয় সচিব সেই সুরজ পাল আমুকে আজ গ্রেফতার করেছে গুরুগ্রামের পুলিশ। গুরুগ্রাম পুলিশের জনসংযোগ আধিকারিক রবীন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, আগাম আরও ঝামেলা রুখতে গত কালই আটক করে রাখা হয়েছিল তাঁকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪২
Share: Save:

সঞ্জয় লীলা ভন্সালী আর দীপিকা পাড়ুকোনের মাথার দাম দশ কোটি টাকা ধার্য করে হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। গত কয়েক দিন ধরে দিল্লি ও আশপাশের এলাকায় ‘পদ্মাবত’-এর মুক্তি আটকাতে তাঁর নির্দেশেই চলেছে প্রবল তাণ্ডব। করণী সেনার জাতীয় সচিব সেই সুরজ পাল আমুকে আজ গ্রেফতার করেছে গুরুগ্রামের পুলিশ। গুরুগ্রাম পুলিশের জনসংযোগ আধিকারিক রবীন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, আগাম আরও ঝামেলা রুখতে গত কালই আটক করে রাখা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু গুরুগ্রাম শহরের শান্তি শৃঙ্খলা নষ্টের অভিযোগে আজ সকালে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। আপাতত চার দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে তাঁকে। এ দিকে পদ্মাবত নিয়ে বিক্ষোভ ক্রমশ কমতে শুরু করেছে অনেক জায়গাতেই।

গত বুধবার গুরুগ্রামের কাছে ওয়াজিরপুর-পটৌডি রোডে জিডি গোয়েঙ্কা ওয়ার্ল্ড স্কুলের একটি বাসে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় করণী সেনার সমর্থকেরা। বাসের ভিতরে থাকা কচিকাঁচাদের চিৎকার আর কান্নার ছবি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। গোটা এলাকায় সে দিন কার্যত তাণ্ডব চালিয়েছিল তারা। সারা দেশে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। সরব হয় কংগ্রেসও। পুলিশ জানিয়েছে, তার পরে গত কালও লোকজন জড়ো করে যে সব হলে ‘পদ্মাবত’ মুক্তি পাচ্ছে, সেখানে হাঙ্গামা বাধানোর পরিকল্পনা ছিল আমুর। গুরুগ্রামে হাঙ্গামায় অভিযুক্ত মোট ৩১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে স্কুলবাসে হামলা, সরকারি বাসে আগুন লাগানো আর ১৪৪ ধারা অমান্য করার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে ১৮ জন। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে কয়েক জন নাবালকও। তাদের হোমে পাঠানো হয়েছে।

যদিও বুধবার গুরুগ্রামে স্কুলবাসে হামলায় তাঁদের সমর্থেকরা জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করেছেন করণী সেনার সভাপতি লোকেন্দ্র সিংহ কালভি। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘‘স্কুলের ছোট ছোট শিশুদের উপর হামলা চালানোর কথা আমরা ভাবতেই পারি না।’’ সে দিনের ঘটনার দায়ও পরিচালক ভন্সালীর ওপর চাপাতে চেয়েছেন তিনি।

এরই মধ্যে বিতর্ক বেড়েছে এক বিজেপি নেতাকে নিয়ে করা টেলিভিশন চ্যানেলের একটি ‘স্টিং অপারেশন’ নিয়ে। মহারাষ্ট্রে বিজেপির মুখ্য সচেতক রাজপুরোহিত সেখানে ক্যামেরার সামনে বলছেন, ‘‘রাজপুতদের আঘাত দেওয়ার কোনও ইচ্ছা সরকারের নেই। গাড়ি জ্বললে জ্বলুক!’’ দেশের নানা প্রান্তে তাণ্ডব চালানো করণী সেনার নেতাদের সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন বিজেপির ওই নেতা। গোড়া থেকেই অবশ্য কংগ্রেস অভিযোগ করে আসছে, বিজেপির মদতে হিংসা ছড়ানো হচ্ছে।

তবে রাজস্থান হোক বা গুরুগ্রাম— ‘পদ্মাবত’ নিয়ে আজ মোটামুটি শান্তই ছিল দেশের নানা প্রান্ত। কোথাও তেমন বিক্ষোভ-কর্মসূচি নেয়নি করণী সেনা। প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে এমনিতেই দেশ জুড়ে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। তবে রাজস্থানে প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে করণী সেনা বিক্ষোভ স্থগিত রেখেছে বলে জানিয়েছে সেখানকার প্রশাসন।

তবে পশ্চিমবঙ্গে ছেঁড়া হয়েছে ‘পদ্মাবত’-এর পোস্টার। গত দু’দিন ছবিটি নিয়ে আসানসোলে হাঙ্গামা বাধিয়েছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যরা। এ বার গোলমাল জলপাইগুড়িতে। শহরের কদমতলা মোড়ে কাল পোস্টারটি ছেঁড়া হয় বলে অভিযোগ৷ জলপাইগুড়ির সিনেমা হলগুলিতে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে পুলিশ৷ পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘কারা এই কাজে জড়িত তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷ পাশাপাশি হলগুলিতে নজরদারিও বাড়ানো হচ্ছে৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE