আন্তর্জাতিক আদালত চূড়ান্ত রায় ঘোষণা না করা পর্যন্ত কুলভূষণ যাদবকে ফাঁসিতে ঝোলাতে পারবে না পাকিস্তান।
এই স্থগিতাদেশ কার্যকর করতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হল, ইসলামাবাদকে তা জানাতে হবে।
কুলভূষণের সঙ্গে ভারতীয় দূতাবাস কর্মীদের দেখা করতে দেয়নি পাকিস্তান। ফলে ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘিত হয়েছে।
আদালতে শুনানি শেষের আগেই কুলভূষণের প্রাণসংশয়ের আশঙ্কা রয়েছে।
একের পর এক অস্বস্তি। দ্য হেগ-এর আন্তর্জাতিক আদালতে আজ এ ভাবেই ধাক্কা খেল পাকিস্তান। অন্তর্বর্তী রায়ে আদালতের প্রেসিডেন্ট-বিচারপতি রনি আব্রাহাম যা বললেন, তার নির্যাস উপরের লাইনগুলো। যেখানে কুলভূষণের ফাঁসির উপরে শুধু যে স্থগিতাদেশ বসেছে তা-ই নয়, মান্যতা পেয়েছে ভারতের যাবতীয় অভিযোগ। এই রায়ে উৎফুল্ল নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রশংসা করেছেন ভারতের আইনজীবী হরিশ সালভের। টুইটারে সুষমা লিখেছেন, ‘‘কুলভূষণকে বাঁচাতে চেষ্টার কসুর করব না আমরা। আন্তর্জাতিক আদালতের ঘোষণা পাকিস্তানের স্বরূপ চিনিয়ে দিয়েছে। আমি নিশ্চিত, চূড়ান্ত রায়ও আমাদের পক্ষে যাবে।’’
ভারতের অভিযোগ, ১৬ বার আর্জি সত্ত্বেও কুলভূষণের সঙ্গে তাঁর দেশের কূটনীতিকদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি। সেই অভিযোগে সিলমোহর দিয়ে আজ আন্তর্জাতিক আদালতের ১১ জন বিচারক একমত হয়েছেন যে, এই মামলার আশু শুনানির প্রয়োজন ছিল। কারণ পাকিস্তান কোথাও বলেনি, আন্তর্জাতিক আদালতে রায় ঘোষণার আগে কুলভূষণকে ফাঁসি দেওয়া হবে না। তা ছাড়া, বিতর্ক আছে তাঁর গ্রেফতারি নিয়েও।
আরও পড়ুন:তিন তালাক প্রথা মানি না, আদালতেই বলল মেয়েরা
পাকিস্তানের যদিও যুক্তি, গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ধৃতকে কূটনৈতিক সাহায্য দেওয়া যায় না। পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নাফিস জাকারিয়া বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়ে ভারত নিজের আসল চেহারাটা লুকোতে চাইছে।’’ জাকারিয়া আরও বলেছেন, এই রায় তাঁরা মানেন না। বিষয়টি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার। তা আন্তর্জাতিক আদালতের এক্তিয়ারে পড়ে না। আদালতের পাল্টা দাবি, ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী সেই এক্তিয়ার তাদের রয়েছে।
পাকিস্তান কি রায় অগ্রাহ্য করবে? কূটনীতিকরা বলছেন, সম্ভাবনা কম। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান। তারা জানে, কুলভূষণকে তড়িঘড়ি ফাঁসি দেওয়া হলে সেই পথ বন্ধ হতে পারে। তা ছাড়া নওয়াজ শরিফ সরকারের সঙ্গে তলায় তলায় কথা চালাচ্ছে মোদী সরকার। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পাকিস্তান আজ বলেছে, কুলভূষণের বিরুদ্ধে আরও জোরদার প্রমাণ দেবে তারা। অর্থাৎ, ভারত কিছুটা সময় পেল। আর রাজনীতিতে মুখরক্ষা হল মোদীর।
স্বস্তিতে কুলভূষণের পরিবার-বন্ধুরাও। আজ মুম্বইয়ে বাজি ফাটিয়ে আনন্দ উদ্যাপন করেন তাঁরা।