Advertisement
E-Paper

করতারপুরে আস্থার বার্তা, তবু সতর্ক দিল্লি

তারই মধ্যে কিছুটা নিচু সুরে হলেও দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগের একটি সেতু বাঁধা হল পঞ্জাব সীমান্তে। 

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ০২:১৯
বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। —ফাইল চিত্র।

বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। —ফাইল চিত্র।

কাশ্মীর পরিস্থিতি, অনুপ্রবেশ, আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসের মতো বিষয়গুলি নিয়ে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে বিবাদ চলছেই। কিন্তু তারই মধ্যে কিছুটা নিচু সুরে হলেও দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগের একটি সেতু বাঁধা হল পঞ্জাব সীমান্তে।

আগামী বুধবার ভারত-পাকিস্তান করতারপুর সীমান্ত করিডরের উদ্বোধনে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের উপস্থিতি চেয়েছিল ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মামুদ কুরেশি কূটনৈতিক প্রোটোকল মেনে নিজেই নিমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। দুই বিদেশমন্ত্রীর ফোনেও কথা হয়। কিন্তু তেলঙ্গানা বিধানসভা ভোটে প্রচারে ব্যস্ত থাকার কারণ দেখিয়ে সফর এড়িয়ে গেলেন সুষমা। তবে তিনি নিজে না গেলেও পাঠানো হচ্ছে দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ জানিয়েছেন, ‘‘২৬/১১-র হামলা এবং করতারপুর সাহিব করিডর—এই দু’টি বিষয়কে পৃথক ভাবে দেখা উচিত।’’ দুই মন্ত্রীকে পাঠানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে পাকিস্তান।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের ছাড়াও পাকিস্তানের তরফে নিমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছিল পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ এবং কংগ্রেস নেতা নভজ্যোত সিংহ সিধুকে। অমরেন্দ্র জানিয়ে দিয়েছেন, সন্ত্রাসের এই আবহে তিনি পাকিস্তান যেতে চান না। নভজ্যোত সিংহ সিধু (ইমরান খানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাঁকে এই করতারপুর করিডর খোলা নিয়ে প্রথম আশ্বাস দিয়েছিলেন পাক সেনাপ্রধান কমর বাজওয়া) অবশ্য জানাচ্ছেন, তিনি এই আমন্ত্রণে ‘সম্মানিত’।

রাজনৈতিক সূত্রের মতে, ভোটের ঠিক আগে সুষমা স্বরাজের মতো হেভিওয়েট নেতাকে পাকিস্তানে পাঠাতে চায়নি নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু সেইসঙ্গে আমন্ত্রণকে ফিরিয়েও দেওয়া হয়নি। দু’জন দ্বিতীয় সারির মন্ত্রীকে (খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী হরসিমরত কৌর বাদল এবং আবাসন মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী) পাঠিয়ে নিমন্ত্রণ রক্ষা করা হচ্ছে। বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ আজ এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘‘পাকিস্তান যে করিডর তৈরি করেছে প্রথমেই তাকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা ঠিক নয়। গোটা বিশ্বই চোখের সামনে দেখতে পাবে তারা কী করতে চাইছে। মুম্বই হামলা ও করতারপুর সাহিবকে পৃথক ভাবে দেখা উচিত।’’

কূটনীতিকদের মতে, বেশ কয়েকটি কারণে এই ক্ষীণ আস্থাবর্ধক অবস্থানটি রেখে দিতে চাইছে মোদী সরকার। প্রথমত, সাউথ ব্লক সব সময়েই মনে করে আলোচনার অন্তত একটা রাস্তা খোলা থাকা দরকার। যাতে সঙ্কটের সময়েও আলোচনার বাতাবরণ তৈরির মতো পরিস্থিতি থাকে। দক্ষিণ এশিয়ার এই অস্থির সময়ে ইমরান সরকারকে কিছুটা ঠেকিয়ে রাখতে পারলে দেশের সীমান্তেও তার প্রতিফলন হবে। ২০১৯ সালের ভোটের আগে যা জরুরি। কিন্তু পাশাপাশি আরও একটি কৌশলের কথাও উঠে আসছে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে। সেটি হল পাকিস্তানের এই আমন্ত্রণ রক্ষা করে এবং তাদের সঙ্গে যৌথ ভাবে ধর্মীয় কূটনীতির হাত ধরে আমেরিকা তথা পশ্চিমী বিশ্বের কাছে শান্তির বার্তা পাঠাল ভারত। সেইসঙ্গে বলটা ইসলামাবাদের কোর্টেও ঠেলে দেওয়া হল। সম্প্রতি কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে মুখ পুড়েছে মোদী সরকারের। ফলে এই মুহূর্তে পাকিস্তানের পাঠানো শান্তির বার্তাকে ফিরিয়ে দিলে ভুল ইঙ্গিত যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

India Pakistan Kartarpur Kartarpur corridor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy