Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
India-China Clash

চিন-ভারত কাঁটাতার নেই, বুটের শব্দ আর টানা টেনশনের কাঁটায় বিদ্ধ সুন্দরী প্যাংগং

সাম্প্রতিক ভারত-চিন সংঘর্ষে ফের একবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে এই হ্রদ। এর সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জেনে নিন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২০ ১৯:২৯
Share: Save:
০১ ১৫
বাদামি ধূসর পাহাড়ে ঘেরা গোটা এলাকা। চারিদিকে রুক্ষতার ছাপ স্পষ্ট। তার মধ্যেই একটুকরো প্রাণের স্পন্দন প্যাংগং হ্রদ, যার টানে ফি বছর লাদাখে গিয়ে হত্যে দেন হাজার হাজার মানুষ। সাম্প্রতিক ভারত-চিন সংঘর্ষে ফের একবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে এই হ্রদ। এর সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জেনে নিন।

বাদামি ধূসর পাহাড়ে ঘেরা গোটা এলাকা। চারিদিকে রুক্ষতার ছাপ স্পষ্ট। তার মধ্যেই একটুকরো প্রাণের স্পন্দন প্যাংগং হ্রদ, যার টানে ফি বছর লাদাখে গিয়ে হত্যে দেন হাজার হাজার মানুষ। সাম্প্রতিক ভারত-চিন সংঘর্ষে ফের একবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে এই হ্রদ। এর সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জেনে নিন।

০২ ১৫
পূর্ব লাদাখে প্রায় ১৪ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত প্যাংগং হ্রদ পৃথিবীর উচ্চতম লবণাক্ত জলের হ্রদ। কাঁকড়া ছাড়া মাছ বা জলজ প্রাণী এতে থাকে না। তবে বছরভর গাংচিল, রাজহাঁস এবং বিভিন্ন পরিযায়ী পাখি আনাগোনা লেগেই থাকে এখানে।

পূর্ব লাদাখে প্রায় ১৪ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত প্যাংগং হ্রদ পৃথিবীর উচ্চতম লবণাক্ত জলের হ্রদ। কাঁকড়া ছাড়া মাছ বা জলজ প্রাণী এতে থাকে না। তবে বছরভর গাংচিল, রাজহাঁস এবং বিভিন্ন পরিযায়ী পাখি আনাগোনা লেগেই থাকে এখানে।

০৩ ১৫
প্যাংগং হ্রদের জল আদতে লবণাক্ত হলেও, প্রচণ্ড ঠান্ডায় গোটা হ্রদই জমে যায়। তখন পর্যটক এবং স্থানীয়দের নিয়ে এর উপর আইস স্কেটিং প্রতিযোগিতার আয়োজনও করা হয়। বিলাসবহুল হোটেলে না থেকে, হ্রদের ধারে তাঁবু খাটিয়ে থাকতেও পছন্দ করেন পর্যটকরা।

প্যাংগং হ্রদের জল আদতে লবণাক্ত হলেও, প্রচণ্ড ঠান্ডায় গোটা হ্রদই জমে যায়। তখন পর্যটক এবং স্থানীয়দের নিয়ে এর উপর আইস স্কেটিং প্রতিযোগিতার আয়োজনও করা হয়। বিলাসবহুল হোটেলে না থেকে, হ্রদের ধারে তাঁবু খাটিয়ে থাকতেও পছন্দ করেন পর্যটকরা।

০৪ ১৫
তবে ১৩৪ কিলোমিটার লম্বা এবং ৫ কিলোমিটার চওড়া এই হ্রদের উপর দিয়েই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) গিয়েছে। এই হ্রদের এক তৃতীয়াংশ ভারতের মধ্যে পড়ে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে পূর্বের ২০ কিলোমিটার চিনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হ্রদের পূর্ব প্রান্তটি রয়েছে তিব্বতে।

তবে ১৩৪ কিলোমিটার লম্বা এবং ৫ কিলোমিটার চওড়া এই হ্রদের উপর দিয়েই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) গিয়েছে। এই হ্রদের এক তৃতীয়াংশ ভারতের মধ্যে পড়ে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে পূর্বের ২০ কিলোমিটার চিনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হ্রদের পূর্ব প্রান্তটি রয়েছে তিব্বতে।

০৫ ১৫
পাহাড়ের ঢাল যেখানে সরাসরি হ্রদের মধ্যে নেমে এসেছে, আঙুলের মতো দেখতে সেই পয়েন্টগুলোর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফিঙ্গার’। দেখলে মনে হবে, দিগন্ত বিস্তৃত এই জলরাশিকে যেন হাত দিয়ে ধরে রেখেছে পাহাড়গুলিকে।

পাহাড়ের ঢাল যেখানে সরাসরি হ্রদের মধ্যে নেমে এসেছে, আঙুলের মতো দেখতে সেই পয়েন্টগুলোর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফিঙ্গার’। দেখলে মনে হবে, দিগন্ত বিস্তৃত এই জলরাশিকে যেন হাত দিয়ে ধরে রেখেছে পাহাড়গুলিকে।

০৬ ১৫
সবমিলিয়ে এইরকম আটটি ‘ফিঙ্গার’ রয়েছে এখানে। এর মধ্যে ফিঙ্গার ৪ পর্যন্ত এলাকা ভারতের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানেই চিনের শেষ সেনা পোস্ট রয়েছে। কিন্তু চিনের দাবি, ফিঙ্গার ২-এর উপর দিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা গিয়েছে। টহল দিতে দিতে মাঝে মাঝেই ফিঙ্গার ২ পর্যন্ত চলে আসে তারা। তা নিয়ে প্রায়শই দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলা বাধে।

সবমিলিয়ে এইরকম আটটি ‘ফিঙ্গার’ রয়েছে এখানে। এর মধ্যে ফিঙ্গার ৪ পর্যন্ত এলাকা ভারতের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানেই চিনের শেষ সেনা পোস্ট রয়েছে। কিন্তু চিনের দাবি, ফিঙ্গার ২-এর উপর দিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা গিয়েছে। টহল দিতে দিতে মাঝে মাঝেই ফিঙ্গার ২ পর্যন্ত চলে আসে তারা। তা নিয়ে প্রায়শই দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলা বাধে।

০৭ ১৫
দু’বছর আগে ডোকালামে ভারতীয় সেনা ও চিনা বাহিনী যখন মুখোমুখি অবস্থান করছিল, তখনও এই প্যাংগং হ্রদের ধারেই হাতাহাতি হয়েছিল দু’পক্ষের মধ্যে। ২০১৭-র ১৯ অগস্ট যে ভিডিয়ো সামনে আসে, তাতে দেখা যায়, দুই তরফে এলোপাথাড়ি পাথর ছোড়াছুড়ি, ঘুষোঘুষি চলছে।

দু’বছর আগে ডোকালামে ভারতীয় সেনা ও চিনা বাহিনী যখন মুখোমুখি অবস্থান করছিল, তখনও এই প্যাংগং হ্রদের ধারেই হাতাহাতি হয়েছিল দু’পক্ষের মধ্যে। ২০১৭-র ১৯ অগস্ট যে ভিডিয়ো সামনে আসে, তাতে দেখা যায়, দুই তরফে এলোপাথাড়ি পাথর ছোড়াছুড়ি, ঘুষোঘুষি চলছে।

০৮ ১৫
শুধু তাই নয়, ১৯৬২-র যুদ্ধের সময় এখানেই সবচেয়ে বড় আক্রমণ চালিয়েছিল চিনা বাহিনী। দক্ষিণ-পূর্বে চুসুল উপত্যকায় ঢোকার আগে রেজাং লায় তাদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লড়াই করে ভারতীয় সেনা।

শুধু তাই নয়, ১৯৬২-র যুদ্ধের সময় এখানেই সবচেয়ে বড় আক্রমণ চালিয়েছিল চিনা বাহিনী। দক্ষিণ-পূর্বে চুসুল উপত্যকায় ঢোকার আগে রেজাং লায় তাদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লড়াই করে ভারতীয় সেনা।

০৯ ১৫
১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় লাদাখ থেকে সেনা সরিয়ে যখন কার্গিলে নিয়ে যাওয়া হয়, সেই সুযোগে প্যাংগং হ্রদের তীর বরাবর ৫ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করে ফেলে চিন। বছরের পর বছর ওই এলাকায় চিন এমন ভাবে রাস্তা তৈরির কাজ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে, যা জি২১৯ কারাকোরাম হাইওয়েকে সংযুক্ত করেছে।

১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় লাদাখ থেকে সেনা সরিয়ে যখন কার্গিলে নিয়ে যাওয়া হয়, সেই সুযোগে প্যাংগং হ্রদের তীর বরাবর ৫ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করে ফেলে চিন। বছরের পর বছর ওই এলাকায় চিন এমন ভাবে রাস্তা তৈরির কাজ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে, যা জি২১৯ কারাকোরাম হাইওয়েকে সংযুক্ত করেছে।

১০ ১৫
২০১৪-১৫ সালে ফিঙ্গার ৪-এ একটি স্থায়ী কাঠামো গড়ে তোলে চিন। তা নিয়ে ভারত প্রতিবাদ জানালে পরে কাঠামোটি ভেঙে দেওয়া হয়। ডোকালাম সঙ্ঘাতের সময়ও ফিঙ্গার ৪ পর্যন্ত এগিয়ে এসেছিল তারা।

২০১৪-১৫ সালে ফিঙ্গার ৪-এ একটি স্থায়ী কাঠামো গড়ে তোলে চিন। তা নিয়ে ভারত প্রতিবাদ জানালে পরে কাঠামোটি ভেঙে দেওয়া হয়। ডোকালাম সঙ্ঘাতের সময়ও ফিঙ্গার ৪ পর্যন্ত এগিয়ে এসেছিল তারা।

১১ ১৫
এ বছর মে মাসে চিনা বাহিনী ফিঙ্গার ৫ পর্যন্ত এগিয়ে এলে দু’পক্ষের মধ্যে নতুন করে ঝামেলা শুরু হয়। গালওয়ান উপত্যকায় সম্প্রতি চিনা বাহিনী ফিঙ্গার ৮ পর্যন্ত চলে আসাতেই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে বলে জানা গিয়েছে।

এ বছর মে মাসে চিনা বাহিনী ফিঙ্গার ৫ পর্যন্ত এগিয়ে এলে দু’পক্ষের মধ্যে নতুন করে ঝামেলা শুরু হয়। গালওয়ান উপত্যকায় সম্প্রতি চিনা বাহিনী ফিঙ্গার ৮ পর্যন্ত চলে আসাতেই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে বলে জানা গিয়েছে।

১২ ১৫
তবে যে প্যাংগং নিয় ভারত-চিনের টানাপড়েনের মধ্যেও বার বার সেখানে ছুটে গিয়েছেন পর্যটকরা।২০১৪-র আগে পর্যন্ত প্যাংগং হ্রদ পর্যন্ত যেতে গেলে ইনার লাইন পারমিট জোগাড় করত হত। কিন্তু বর্তমানে ভারতীয় নাগরিকদের সেখানে কোনও বিশেষ অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না।

তবে যে প্যাংগং নিয় ভারত-চিনের টানাপড়েনের মধ্যেও বার বার সেখানে ছুটে গিয়েছেন পর্যটকরা।২০১৪-র আগে পর্যন্ত প্যাংগং হ্রদ পর্যন্ত যেতে গেলে ইনার লাইন পারমিট জোগাড় করত হত। কিন্তু বর্তমানে ভারতীয় নাগরিকদের সেখানে কোনও বিশেষ অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না।

১৩ ১৫
প্যাংগংয়ের টানে ভ্রমণপিপাসু মানুষ বরাবরই লাদাখের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন, তবে বলিউডের দৌলতে প্যাংগংয়ের জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে গিয়েছে। সিনেমার শুটিংয়ের জন্য আগে যেখানে বিদেশ বিভুঁইয়ে ছুটে যেতেন পরিচালক-প্রযোজকরা, লাদাখ কিছুটা হলেও সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে পেরেছে।

প্যাংগংয়ের টানে ভ্রমণপিপাসু মানুষ বরাবরই লাদাখের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন, তবে বলিউডের দৌলতে প্যাংগংয়ের জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে গিয়েছে। সিনেমার শুটিংয়ের জন্য আগে যেখানে বিদেশ বিভুঁইয়ে ছুটে যেতেন পরিচালক-প্রযোজকরা, লাদাখ কিছুটা হলেও সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে পেরেছে।

১৪ ১৫
১৯৯৮ সালে ‘দিল সে’ ছবির ‘সাতরঙ্গি রে’ গানটির বেশ কিছু দৃশ্যের শুটিং হয় প্যাংগংয়ের তীরে। ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবিতে এই প্যাংগংয়ের তীরেই ঠোটে ঠোট ডোবান র‌্যাঞ্চো এব‌ং পিয়া।

১৯৯৮ সালে ‘দিল সে’ ছবির ‘সাতরঙ্গি রে’ গানটির বেশ কিছু দৃশ্যের শুটিং হয় প্যাংগংয়ের তীরে। ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবিতে এই প্যাংগংয়ের তীরেই ঠোটে ঠোট ডোবান র‌্যাঞ্চো এব‌ং পিয়া।

১৫ ১৫
এমনকি ‘তশন’ ছবির ‘দিল হারা রে’ গানের শুটিং চলাকালীন এই প্যাংগংয়ের তীরেই একে অপরের প্রেমে পড়েন করিনা কপূর এবং সইফ আলি খান।

এমনকি ‘তশন’ ছবির ‘দিল হারা রে’ গানের শুটিং চলাকালীন এই প্যাংগংয়ের তীরেই একে অপরের প্রেমে পড়েন করিনা কপূর এবং সইফ আলি খান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE