Advertisement
E-Paper

জোট বেঁধে ছুটি আদায় সংসদে

বছর শেষের দু’দিন এমনিতেই শনি-রবি। কিন্তু গুজরাত ভোটের জন্য সংসদের অধিবেশন পিছোনোর সময় নরেন্দ্র মোদী যেন পণ করেছিলেন, ১ জানুয়ারি সকলকে হাজিরা দিতেই হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৯

ভিড়টা পাতলা হচ্ছিল দুপুর থেকেই। বিকালে অধিবেশন শেষের ঘণ্টা বাজতেই ছুট। সংসদে টানা ছুটি তিন দিনের। আসছে বছর আবার হবে।

বছর শেষের দু’দিন এমনিতেই শনি-রবি। কিন্তু গুজরাত ভোটের জন্য সংসদের অধিবেশন পিছোনোর সময় নরেন্দ্র মোদী যেন পণ করেছিলেন, ১ জানুয়ারি সকলকে হাজিরা দিতেই হবে। ভাবটা অনেকটা হেডমাস্টারের মতো— দেখা যাক, বছরের প্রথম দিনটিতে কে সময়ে স্কুলে আসতে পারেন! বিজেপির অনেক মন্ত্রী তো খোশগল্পে চ্যালেঞ্জই ছুড়ে দিয়েছিলেন, অধিবেশন পিছোনোর জন্য কংগ্রেস এত হল্লা করছে, এ বারে দেখা যাক ১ জানুয়ারি রাহুল গাঁধী, সনিয়া গাঁধী আসেন কি না।

বিরোধীদের অনেকের বক্রোক্তি, ‘‘সব আরএসএসের এজেন্ডা! ঘটা করে শুধু হিন্দু নববর্ষ পালন হবে। ইংরাজি নতুন বছর অস্পৃশ্য!’’ ১ জানুয়ারি সংসদ চলবে, এমনটাই কথা ছিল। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে বিরোধী দলের নেতারা তো বটেই, বিজেপির সাংসদরাও সরকারের উপর চাপ বাড়াতে শুরু করেন— পয়লা জানুয়ারি ছুটি চাই। গত কাল পর্যন্ত সরকার গা করেনি। আজ সকালে তাই জোটবদ্ধ হয়ে লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন ও রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে চেপে ধরেন সাংসদরা।

বেঙ্কাইয়ার সামনে এক সাংসদ তো বলেই ফেলেন, ‘‘রাত তিনটে পর্যন্ত পার্টি করে পর দিন সকালে কী করে আসব বলুন তো?’’ কড়া চোখে তাকিয়ে বেঙ্কাইয়া বলেন, ‘‘সেটা আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। এখানকার আলোচনার বিষয়বস্তু নয়!’’ ১ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস। ছুটি দরকার ছিল মমতার দলের সাংসদদেরও। কিন্তু দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের কথাটি তাঁরা পাড়েননি। তবে অন্যদের সঙ্গে চাপটি বজায় রেখে আসছিলেন। উত্তর-পূর্বের সাংসদরাও বলেন, বছরের শেষ দিন আর নতুন বছরের প্রথম দিনে এলাকায় অনেক কর্মসূচি থাকে। দিল্লি আসব কী করে? দক্ষিণের সাংসদদেরও একই সুর।

চার দিক থেকে সাঁড়াশি চাপে শেষ পর্যন্ত বিষয়টি গড়াল প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত। শাসক-বিরোধী শিবিরের সাংসদদের মুখে একই রা শুনে অবশেষে সায় দিতে হল তাঁকে। সংসদে সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী বিজয় গয়াল ঘোষণা করলেন, ‘‘১ জানুয়ারি সংসদে আসতে অনেক সদস্যেরই আপত্তি। বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণের সাংসদদের। ফলে স্থির হয়েছে, ১ জানুয়ারি সংসদ হবে না। বাকি দিনগুলি বাড়তি কাজ করে পুষিয়ে দেওয়া হবে।’’

যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন সাংসদরা। সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ল ছুটির আমেজ। বিজেপির এক সাংসদ বললেন, ‘‘মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়ে বিদেশে ছুটি কাটানো বন্ধ করে দিয়েছেন। এ বারে ১ জানুয়ারি সংসদ করতে হলে খুবই চাপের হতো!’’ তৃণমূলও খুশি। এক তরুণ সাংসদ বেলা চারটেয় সংসদ থেকে হন্তদন্ত হয়ে বেরোতে বেরোতে চোখ মটকে বলে গেলেন— ‘‘পার্টি অভি বাকি হ্যায়!’’

Parliament Holiday MP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy