Advertisement
০৫ মে ২০২৪

পাতে সন্দেশ, তবুও হাত খালি শ্রমিক নেতাদের

‘চায়ে পে চর্চা’ ছিল। সঙ্গে যোগ হল সন্দেশও। মিষ্টিমুখ করালেও শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার কোনও প্রতিশ্রুতি দিলেন না নরেন্দ্র মোদী। তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরও ২ সেপ্টেম্বরের সাধারণ ধর্মঘটে এখনও খাতায়-কলমে অনড় থাকছে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি।

শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর। ছবি: পিটিআই।

শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর। ছবি: পিটিআই।

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৫ ০২:৫৯
Share: Save:

‘চায়ে পে চর্চা’ ছিল। সঙ্গে যোগ হল সন্দেশও। মিষ্টিমুখ করালেও শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার কোনও প্রতিশ্রুতি দিলেন না নরেন্দ্র মোদী। তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরও ২ সেপ্টেম্বরের সাধারণ ধর্মঘটে এখনও খাতায়-কলমে অনড় থাকছে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি।

তবে যে বিএমএস-কে নিয়ে সব থেকে অস্বস্তি ছিল মোদী সরকারের, বৈঠকের পর তাদের সুর অনেকটাই নরম। সঙ্ঘ পরিবারের শ্রমিক সংগঠন বিএমএস-এর সাধারণ সম্পাদক ব্রিজেশ উপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পর এই প্রথম কোনও প্রধানমন্ত্রী শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানালেন। এত দিন কোনও প্রধানমন্ত্রী এ ভাবে এগিয়ে আসেননি।’’

এক দিকে শ্রম আইনের সংস্কারের প্রস্তাব, অন্য দিকে শ্রমিকদের দাবিদাওয়া শুনে ধর্মঘট থেকে তাঁদের সরিয়ে আনার চেষ্টায় বৈঠকে বসেছিলেন মোদী। কোনও প্রধানমন্ত্রী শ্রমিক নেতাদের বাড়িতে ডেকে বৈঠক করছেন, এমন দৃষ্টান্ত বিরল। সঙ্ঘ-পরিবারের শ্রমিক সংগঠন বিএমএস ইউপিএ-জমানা থেকেই কংগ্রেস ও বাম শ্রমিক ইউনিয়নগুলির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছে। কিন্তু তারা মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মঘটে যোগ দেওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই সরকারের মধ্যে অস্বস্তি ছড়ায়। সেই কারণেই মোদী নিজেই আজ বৈঠকে বসেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী যে সরাসরি কোনও প্রতিশ্রুতি দেননি, তা মানলেও ব্রিজেশের যুক্তি, অরুণ জেটলির নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার কমিটি শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। সেই আলোচনা জারি থাকবে। তা হলে ধর্মঘট? বিএমএস নেতার জবাব, ‘‘সেপ্টেম্বরে ধর্মঘটের পরিকল্পনা। এখনও অনেক দেরি। আজ-কালের মধ্যে তো আর ধর্মঘট হচ্ছে না!’’

কংগ্রেস ও বাম শ্রমিক সংগঠনের নেতারা অবশ্য ধর্মঘট থেকে সরে আসার কারণ দেখছেন না। তাঁদের যুক্তি, প্রধানমন্ত্রী সওয়া ঘণ্টা ধরে তাঁদের দাবিদাওয়া মন দিয়ে শুনেছেন। কিন্তু কোনও আশ্বাস দেননি। শুধু বলেছেন, সরকারের সঙ্গে শ্রমিক সংগঠনের যোগাযোগের অভাব ছিল। সেই অভাব পূরণ করতেই তিনি জেটলির নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার পাঁচ সদস্যের কমিটি তৈরি করেছেন। এআইটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক গুরুদাস দাশগুপ্ত প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, দেরিতে হলেও বৈঠক ডাকার জন্য ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে বলেন, তাঁর সরকার সবেমাত্র ক্ষমতায় এসেছে। গুরুদাস যুক্তি দেন, গত ১৭ মাসে সরকার শিল্পমহলের সঙ্গে আলোচনা করলেও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে কথা না বলেই শ্রম আইনের সংস্কার করেছে।

পরে গুরুদাস বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কোনও আশার আলো দেখাননি। ধর্মঘট হবে।’’ সিটু নেতা তপন সেনেরও যুক্তি, ‘‘ধর্মঘট থেকে সরে আসার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।’’ ইউটিইউসি নেতা অশোক ঘোষের মন্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কোনও আশ্বাস দেননি।’’ আগামিকাল থেকে শ্রম সম্মেলন শুরু হচ্ছে। সেখানেও প্রধানমন্ত্রী যোগ দেবেন। তার আগে আজ মোদীকে তপনবাবু প্রশ্ন করেন, আগের শ্রম সম্মেলনের সুপারিশ কার্যকর হয়নি। তা হলে এই সম্মেলনের অর্থ কী? প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে বৈঠকের আগে জেটলির নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার কমিটি শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসে। সেই সংগঠনগুলির দশ দফা দাবি শোনার পরে জেটলি বলেন, কিছু দাবি মানা সম্ভব, কিছু নয়। কিন্তু কোন দাবি মানা হবে, তা স্পষ্ট করে জানাননি তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Labour Conference BMS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE