Advertisement
E-Paper

ফাইলের শম্বুক গতি, ক্ষুব্ধ মোদী

প্রধানমন্ত্রী এতটাই ক্ষুব্ধ যে, সম্প্রতি শীর্ষ আমলাদের বলেছেন, ‘‘কত দিন আর এমন চলবে? সব ফাইলে সবাইকে সিলমোহর বসাতে হবে কেন? আমাদের অভ্যাস বদলাতে পারে না?’’

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৮ ০৪:২০

বছর ঘুরতেই লোকসভার ভোট। সরকারি কাজে দ্রুত সিদ্ধান্ত চান প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সরকারি ফাইল ঘুরছে না সে গতিতে।

প্রধানমন্ত্রী এতটাই ক্ষুব্ধ যে, সম্প্রতি শীর্ষ আমলাদের বলেছেন, ‘‘কত দিন আর এমন চলবে? সব ফাইলে সবাইকে সিলমোহর বসাতে হবে কেন? আমাদের অভ্যাস বদলাতে পারে না?’’

এখানেই থামেননি। প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি নৃপেন্দ্র মিশ্র, ক্যাবিনেট সচিব পি কে সিন্‌হার সামনেই নরেন্দ্র মোদী অসন্তোষ ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘‘সত্যি-মিথ্যা জানি না, হিন্দু পুরাণে বলে চারধাম যাত্রা করলে মোক্ষলাভ হয়। কিন্তু সরকারি ফাইলের ৩২ যাত্রাতেও মোক্ষলাভ হয় না। কোনও সরল পথ বার করা যায় না?’’

চার বছর আগে কিন্তু এই মোদীই ‘ন্যূনতম সরকার, সর্বাধিক প্রশাসন’-এর স্লোগান দিতেন। ক্ষমতায় এসে ঢাক পেটাতেন— একই ফাইল, একই আমলা, একই সরকারিতন্ত্র নিয়ে তিনি আগের থেকে কত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে দেখাচ্ছেন! তাঁর পূর্বসূরিরা যা পারেননি। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের পর প্রশ্ন উঠছে, সরকারের শেষ বছরে কি নীতিপঙ্গুত্বই ফিরে এল? মনমোহন সরকারের বিরুদ্ধে ঠিক যে অভিযোগটি করেই মোদী ক্ষমতায় এসেছিলেন!

কংগ্রেসের বক্তব্য, ‘‘আসলে ২০১৪ সালে মিথ্যা প্রচার করে মোদী ক্ষমতায় এসেছিলেন। বুক বাজিয়ে ৫৬ ইঞ্চি ছাতির জোর দেখিয়েছিলেন। এখন পাকিস্তান-চিন সঙ্কট মেটাতেও সেই ছাতির জোর দেখা যাচ্ছে না, সরকারের ভিতরেও যে তাঁর কোনও দখল নেই, সেটাও স্পষ্ট। প্রধানমন্ত্রীর কথায় তাঁর অসহায়তাই প্রকট।’’

কিন্তু এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হল কেন? আমলামহলে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী যতই অভয় দিন, বাবুরা ভয় পাচ্ছেন। নিয়োগ, বদলির মতো ফাইলও এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে এগোচ্ছে না। মনমোহন জমানায় একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ আসার পর অর্থ মন্ত্রকে স্পর্শকাতর ফাইল সই করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন অনেক আমলা। ব্যাঙ্ক থেকে প্রতিরক্ষা, মোদী জমানাতেও অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। পাছে আমলারা কেউ ফেঁসে যান, তার জন্য ভয়ে ফাইল এগোচ্ছেন না। উন্নয়নের অনেক কাজও দেরি হয়ে যাচ্ছে।

এ দিকে ভোটের মুখে দাঁড়িয়ে তাড়া দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। শীর্ষ কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, কেন্দ্রের প্রতিটি মন্ত্রকের অধীনে বিভাগ ধরে ধরে পর্যালোচনা করতে, কারা প্রকৃত অর্থে ‘ন্যূনতম সরকার, সর্বাধিক প্রশাসন’-এর সূত্র ভাল করে পালন করছে। কারা প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার করে প্রক্রিয়াকে সরল করছে। প্রধানমন্ত্রীর অসন্তোষ, এ ভাবে সরকার চললে গোটা দুনিয়ায় ভারত পিছিয়ে পড়বে। থমকে যাবে উন্নয়ন।

Narendra Modi Work Culture নরেন্দ্র মোদী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy