Advertisement
E-Paper

সরস্বতী পুজোয় মাতলেন জেলবন্দিরা

বাণীবন্দনায় মেতে উঠলেন শিলচর কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরাও।৫৭৬ কয়েদির কেউ এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী নন। উচ্চমাধ্যমিকে বসারও কেউ নেই। অধিকাংশই পড়াশোনার পাঠ কবে চুকিয়ে নিয়েছেন। তবু তাঁরা আজ চার দেওয়ালের ভিতরে মেতে ওঠেন সরস্বতী পূজায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৭

বাণীবন্দনায় মেতে উঠলেন শিলচর কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরাও।

৫৭৬ কয়েদির কেউ এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী নন। উচ্চমাধ্যমিকে বসারও কেউ নেই। অধিকাংশই পড়াশোনার পাঠ কবে চুকিয়ে নিয়েছেন। তবু তাঁরা আজ চার দেওয়ালের ভিতরে মেতে ওঠেন সরস্বতী পূজায়। নাম সই করতে পারেন না, এমন কয়েদিরাও সমস্বরে আওয়াজ তোলেন— ‘নমো সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমল লোচনে।’

কেন, তোমরা কেন— এমন প্রশ্নের আগেই সাত বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত এক প্রৌঢ়ের স্বগতোক্তি, ‘‘আমরা জেলে থাকলেও অনেকেরই বাড়িঘরে ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে। জেলে বসেই তাদের জন্য একটু প্রার্থনা করলাম।’’

দেবীভক্তদের সঙ্গে পুজোর আনন্দে মাতোয়ারা মুসলমান বন্দিরাও। বাসনপত্র ধোয়া-মোছা, প্রসাদ বিতরণে শরিক হয়েছেন তাঁরাও। যাবজ্জীবন কারাবাসের রায়ে দুই দশক জেলে কাটিয়ে দেওয়া এক বন্দি জানান, জেলের ভিতরে হিন্দু-মুসলমান ভেদাভেদ নেই। একঘেয়েমি জীবন থেকে একটু আলাদা হওয়ার সুযোগ এনে দেয় সরস্বতী পূজা, দুর্গা পূজা, ইদুজ্জোহা, ইদ-উল-ফিতর।

জেল সুপার হরেনচন্দ্র কলিতা বললেন, ‘‘জেলের সঙ্গে বাণীবন্দনার সম্পর্ক নেই, এমন বলা যায় না। এখানে একটি স্কুল রয়েছে, তাতে এক জন শিক্ষক রয়েছেন। বন্দিদের স্বাক্ষর করে তোলা, আগ্রহীদের বর্ণের সঙ্গে পরিচয় করানোর কাজ লেগেই রয়েছে।’’ তিনি জানান, তার সঙ্গে এ বার যোগ হয়েছে, কে কে সন্দিকৈ রাজ্য মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯ জন বন্দি তাতে বিভিন্ন পাঠ্যক্রমে নাম লিখিয়েছেন। বইপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে। নিয়মিত তাঁরা পড়াশোনা করছেন। হরেনবাবু জানান, বন্দিরাই মূল উদ্যোক্তা। প্রতিমা আনা, বাজার করেন জেলকর্মীরা।

আজ সকালে এক দল কয়েদি যখন পুজোর নৈবেদ্য তৈরিতে ব্যস্ত, আরেক দল বসে পড়েন কীর্তনে। খোল-করতাল বাজিয়ে নাগাড়ে গেয়ে যান ঠাকুরের গান। কারাবাসের পর থেকেই কাটিগড়ার প্রমোদরঞ্জন গোস্বামী জেলের মন্দির সামলান। সকাল-সন্ধ্যায় পূজার্চনা করেন। তবে সরস্বতী পূজার জন্য আজ বাইরে থেকে পুরোহিত আনা হয়। শতকণ্ঠে অঞ্জলির গমগম আওয়াজে জেলের বাইরে ভিড় জমে যায়। অনেকে আশায় ছিলেন, পুজো দেখার নামে জেলের ভেতর একবার দেখে আসবেন। হরেনবাবু বলেন, ‘‘তাঁদের বিনম্র ভাবে ফিরিয়ে দিতে হয়। পুজো হলেও জেল বলে কথা!’’

Saraswati Puja Vasant Panchami Prisoners
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy