সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-বিরোধী বিক্ষোভ দমনে সব চেয়ে সক্রিয় উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার। গো বলয়ের বৃহত্তম রাজ্যে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে প্রাণহানির সংখ্যা যেমন সর্বাধিক, তেমনই নির্বিচারে চলছে ধরপাকড়। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এই সক্রিয়তাই এ বার প্রশ্নের মুখে পড়ল। দিন দুয়েক আগে বিজনৌরে জামিন পেয়েছেন সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ৪৮ জন অভিযুক্ত। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণই আদালতে জমা দিতে পারেনি পুলিশ। অথচ, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের উপরে হামলা-সহ বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছিল।
এ সব নিয়ে অবশ্য যোগীর পুলিশের কোনও হেলদোল নেই! সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভে দেড় মাস আগে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করার অভিযোগে গত কাল গ্রেফতার করা হয়েছে গোরক্ষপুরের হাসপাতালে শিশুমৃত্যু-কাণ্ডে অভিযুক্ত চিকিৎসক কাফিল খানকে। আজ তিনি বলেছেন, ‘‘গোরক্ষপুরের ঘটনায় ক্লিনচিট পেয়েছি। তাই আমাকে নতুন করে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে বিশ্বাস করি না। তাই মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে এ রাজ্যে থেকে যাওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।’’ যদিও মুম্বই থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে তাঁকে আলিগড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের অন্য এলাকাগুলির মতো গত ২০ ডিসেম্বর সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছিল বিজনৌরের নাগিনা শহর। প্রাণ হারিয়েছিলেন দু’জন। ঘটনায় ৮৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি, সরকারি ও বেসরকারি গাড়ি ভাঙচুর, দোকানগুলিতে অগ্নিসংযোগ-সহ বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছিল। ৪৮ জন জামিনের আবেদন করেন। দিন দুয়েক আগে বিজনৌরের জেলা দায়রা আদালতের বিচারক সঞ্জীব পাণ্ডে সকলের জামিন মঞ্জুর করেন। তিনি বলেন, ‘‘বেসরকারি গাড়ি ও দোকানে হামলার কোনও প্রমাণ আদালতে পুলিশ জমা দিতে পারেনি। ঘটনার ২০ দিন পরে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। তাতে উল্লেখ, একটি সরকারি গাড়ির ক্ষতি করেছেন বিক্ষোভকারীরা।’’ সরকারি আইনজীবী অভিযোগ করেছিলেন, বিক্ষোভকারীদের হামলায় ১৩ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছিলেন। সেই বিষয়টি উল্লেখ করে বিচারক পাণ্ডে বলেন, ‘‘মেডিক্যাল রিপোর্ট বলছে, ওই পুলিশকর্মীদের আঘাত নিতান্তই নগণ্য।’’