চকচকে মসৃণ সড়ক বা নতুন রাস্তা নির্মাণের দাবি নয়। ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কে রংপুর থেকে কাশীপুর অংশ শুধুমাত্র চলাচলের যোগ্য করে তোলার দাবিতে চার দিন ধরে অনশন করছেন ‘অল বরাক ইয়ুথ-স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’ (অবিসা)-র চার সদস্য। দু’দিন আগে ভাল সড়ক আর যাতায়াতের উপযোগী সড়ক নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছিলেন পূর্তমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য। গত কাল রংপুরের অনশনস্থলের সামনে দিয়ে ছুটে গিয়েছে তাঁর কনভয়।
ভোটের আগে রাস্তার দাবিতে অনশনে বসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বিধায়ক (বর্তমানে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকারও) দিলীপকুমার পাল। তিনিও গত কাল ওই পথ ধরে গিয়েছেন। কিন্তু কেউ অনশনকারীদের দিকে ফিরেও তাকাননি। পূর্ত বিভাগের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার মলয় দেব এক বার গিয়েছিলেন বিভাগীয় অবস্থান জানানোর জন্য। তিনি অনশনকারীদের বলেন, ‘‘এই রাস্তায় এখনই কিছু করা সম্ভব নয়। টাকা নেই।’’ তবে কয়েক গাড়ি পাথর গর্তগুলিতে ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। তিনি অনশন প্রত্যাহারের জন্য তাঁদের অনুরোধ জানান। অনশনকারীরা তাতে রাজি হননি।
আজ অনশন ভাঙানোর জন্য ঠাণ্ডা পানীয় নিয়ে হাজির হন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক মিহিরকান্তি সোম। রাস্তার কী হবে, তা নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলতে না পারায় অনশনকারীরা সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন মিহিরবাবু।
এ দিকে, অন্য দিনের মতো এ দিন সকালেও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা গিয়ে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তীব্র দাবদাহের মধ্যে চার দিন থেকে নাওয়া-খাওয়া বন্ধ থাকায় রক্তচাপ কমছে চার জনেরই। তাঁদের মধ্যে আক্রামউদ্দিন বড়ভুঁইঞা, নাজির হোসেন লস্কর ও ফারুক হোসেন বড়লস্কর অবিসা-র পদাধিকারী। কবীর আহমেদ লস্কর সংগঠনের সক্রিয় সদস্য নন। সমাজকর্মী হিসেবেই অনশনে সামিল হয়েছেন।
প্রতি দিন বিভিন্ন সংস্থা-সংগঠনের কর্মকর্তারা তাঁদের সমর্থনে অনশনস্থলে গিয়ে বসছেন। রয়েছেন উধারবন্দ-লক্ষ্মীপুরের সাধারণ মানুষও। গত কাল কিছু সময় বসে যান লক্ষ্মীপুরের কংগ্রেস বিধায়ক রাজদীপ গোয়ালাও। মূলত তাঁর এলাকার মানুষেরই ওই রাস্তার জন্য বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয়। কংগ্রেস আমলেও গর্তভরা রাস্তা দিয়েই চলাচল করতে হয়েছে মানুষকে। এখনও ‘পাশে আছি’ বলেই দায় সারেন রাজদীপবাবু।
আজ মিহিরকান্তি সোম যে ভাবে দিল্লি-দিসপুর দেখিয়ে পূর্বতন কংগ্রেস সরকারকে দোষারোপ করলেন, একই কায়দায় গত কাল রাজদীপ গোয়ালা বিজেপি সরকার ও নতুন পূর্তমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যর মুণ্ডপাত করেন।
অবিসা-র মুখ্য আহ্বায়ক বাহারুল ইসলাম বড়ভুঁইঞা বলেন, ‘‘দু’মাস আগের সরকার যা ছিল, আজও তাই। জনস্বার্থে কাজের ক্ষেত্রে কংগ্রেস-বিজেপি একই মুদ্রার ওপিঠ-ওপিঠ।’’ তাঁরা কোনও ধরনের রাজনৈতিক প্ররোচনায় আন্দোলনে নামেননি বলে দাবি করেন বাহারুল। তিনি জেলাশাসক এস বিশ্বনাথনকে রাস্তা চলাচলযোগ্য করে তোলার ব্যাপারে ব্যক্তিগত ভাবে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করেন।
এ দিকে, অনশনকারীদের অবস্থা যত সঙ্গীন হচ্ছে, স্থানীয় জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ততই বাড়ছে। চার জন আমরণ অনশন ঘোষণা করলেও শতাধিক লোক সারাক্ষণ থাকছেন অনশনস্থলে। পুলিশ জানিয়েছে, নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy