Advertisement
E-Paper

কাজ দিয়ে দেশের শিখরে রঘুনাথপুর

মূলত এই দুয়ের নিরিখে দেশের সেরা সরকারি শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিরোপা জুটল রঘুনাথপুর শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (আইটিআই)। 

হাতেকলমে: রঘুনাথপুর আইটিআইতে প্রশিক্ষণ। ছবি: সঙ্গীত নাগ

হাতেকলমে: রঘুনাথপুর আইটিআইতে প্রশিক্ষণ। ছবি: সঙ্গীত নাগ

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১১
Share
Save

পড়া শেষে চাকরির সুযোগ করে দেওয়া ও উন্নত পরিকাঠামো— মূলত এই দুয়ের নিরিখে দেশের সেরা সরকারি শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিরোপা জুটল রঘুনাথপুর শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (আইটিআই)।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে সেরা আইটিআই-এর পুরস্কার নিয়ে এসে অধ্যক্ষ আশিসকুমার মণ্ডল দাবি করেছেন, ‘‘আমরা সারা দেশের সরকারি আইটিআইগুলির মধ্যে সেরা। আর সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে তালিকায় রঘুনাথপুরের স্থান পঞ্চম।’’ দিল্লি থেকে পুরস্কার ও শংসাপত্র নিয়ে ফিরেই তিনি দেখা করেছেন রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর সঙ্গে। মন্ত্রী তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে শীঘ্রই রঘুনাথপুরে আসবেন বলে জানিয়েছেন।

বস্তুত, দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় ১৯৬৪ সালে রঘুনাথপুর-আদ্রা রাস্তার পাশে তৈরি হয়েছিল এই শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। রঘুনাথপুরের আগে এ রাজ্যের দুর্গাপুর, হাওড়া হোমস, কল্যাণী, গড়িয়াহাট ও কোচবিহারের শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু হয়েছিল। সেই নিরিখে পিছিয়ে থেকেও ধাপেধাপে পরিকাঠামো-সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে নিজেদের উন্নতি করে দেশের সেরার শিরোপা ছিনিয়ে আনতে পেরেছে রঘুনাথপুর আইটিআই।

কারিগরি শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ৪৩টি বিষয়ের উপরে সমীক্ষা করে কেন্দ্রের স্কিল ডেভেলপমেন্ট মন্ত্রক। তার মধ্যে মূল বিষয়গুলি ছিল পড়া শেষে চাকরির সুযোগ, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিকাঠামো, আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, ট্রেডের অনুমোদনের মতো বিষয়গুলি। অধ্যক্ষ জানান, মন্ত্রক ৪৩টি বিষয়ের উপরে আত্ম-সমীক্ষার (সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট) রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল। জানুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রতিনিধি দল আইটিআই পরিদর্শনে আসেন। তারপরেই শিক্ষক দিবসের দু’দিন আগে দিল্লি থেকে তাঁকে ফোন করে দেশের সেরা হওয়ার খবর দেওয়া হয়।

এখানকার পড়ুয়ারা জানাচ্ছেন, শিক্ষা শেষে এখান থেকে চাকরির সুযোগ রয়েছে বলেই তাঁদের প্রথম পছন্দ ছিল রঘুনাথপুরের আইটিআই। শুধু পুরুলিয়ারই নয়, পড়শি বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান জেলার কয়েকটি এলাকার ছাত্রছাত্রীরাও এখানেই ভর্তি হতে চান। শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের দাবি, পাঠ শেষে ২৫ শতাংশ ছাত্রছাত্রী সরকারি সংস্থায় কাজ পাচ্ছেন। বাকি ছেলেমেয়েরাও বেসরকারি সংস্থায় কাজের সুযোগ পাচ্ছেন।

তাদের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত তিন বছরে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থায় শিক্ষানবীশের কাজ পেয়েছে ৭৭ শতাংশ পড়ুয়া। ওই তিন বছরে এ রাজ্য ও ভিন রাজ্যের সরকারি, বেসরকারি সংস্থায় চাকরি পেয়েছে ৮৫ শতাংশ পড়ুয়া। পড়া শেষ করেই চাকরি সুযোগ পড়ুয়াদের কাছে এই শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে জনপ্রিয় করে তুলেছে।

পরিকাঠামোগত দিকেও সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে। মূলত স্মার্ট ক্লাসরুম, ডিজিটাল ক্লাসরুম, কম্পিউটার ল্যাবরেটরি, উন্নতমানের গ্রন্থাগারের ব্যবস্থা করে এই শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পড়াশোনার মানের অনেকটাই উন্নতি তাঁরা করতে পেরেছেন বলে জানাচ্ছেন অধ্যক্ষ। এ ছাড়া, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বৃত্তি যেমন রয়েছে, তেমনই আইটিআই কর্তৃপক্ষ দুঃস্থ মেধাবি পড়ুয়াদের জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলির মাধ্যমে বৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থাও চালু করেছে। অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘জিন্দাল গ্রুপ ও এসিসি সিমেন্ট আমাদের আইটিআই-এর বেশ কিছু দুঃস্থ মেধাবি পড়ুয়াদের বছরে ১২ হাজার ও ২৫ হাজার টাকা করে বৃত্তি দেয়।”

দেশের সেরার তকমা জুটলেও কিন্তু এই আইটিআই-তে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন কর্মীরা। বিশেষ করে বহু সংখ্যক শূন্য পদ থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী বিশেষ করে পিওন, ওয়ার্কশপ সহযোগীর মতো বেশ কিছু ক্ষেত্রে শূন্যপদ আছে। গ্রন্থাগারে আরও বেশি সংখ্যক বইয়ের চাহিদাও আছে। আশিসবাবু সমস্যাগুলির কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘‘দফতরের মন্ত্রী অভিনন্দন জানানোর সঙ্গেই সমস্যার কথাও জানতে চেয়েছিলেন। শূন্য পদে কর্মী নিয়োগ ও গ্রন্থাগারে বইয়ের ব্যবস্থা করার আবেদন জানিয়েছি।”

Raghunathpur ITI রঘুনাথপুর

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}