রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে নতুন অস্ত্র শানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
গত কাল অসুস্থ অটলবিহারী বাজপেয়ীকে দেখতে সবার আগে পৌঁছেছিলেন এইমসে। আর আজ অটল, আডবাণীকে সামনে রেখেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দিকে টুইট-বোমা ছুড়লেন রাহুল গাঁধী। তাঁর দাবি, শিষ্য হয়ে গুরুর সম্মানই রাখেন না মোদী। টুইটারে রাহুল লিখেছেন, ‘‘গুরুকে সম্মান দিতে নিজের হাতের আঙুল কেটে দিয়েছিল একলব্য। আর বিজেপিতে গুরুদেরই কেটে ফেলা হচ্ছে। বাজপেয়ী, আডবাণী, যশবন্ত সিন্হারা অপমানিত। মোদীর কাছে এটাই ভারতীয় সংস্কৃতির নমুনা।’’
এইমসে ভর্তি অটলের শারীরিক অবস্থা এই মুহূর্তে স্থিতিশীল, চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছেন। কিন্তু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালেই থাকবেন তিনি। গত কাল অটলকে দেখতে রাহুল হাসপাতালে পৌঁছনোর পরেই ছুটে যান মোদী, অমিত শাহ, গোটা মন্ত্রিসভা। আজও সেই ছবি। এইমসে পৌঁছন মোহন ভাগবত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। মনমোহন সিংহ, এইচ ডি দেবগৌড়ার মতো প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীরাও যান। খোঁজ নেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। দেশের নানা প্রান্তে যজ্ঞও হচ্ছে বাজপেয়ীর দ্রুত আরোগ্য কামনায়। এরই মধ্যে মোদী ক্ষমতায় আসার পরে আডবাণীর সঙ্গে মার্গদর্শক মন্ডলীতে যাওয়া বিজেপির প্রবীণ নেতা মুরলীমনোহর জোশী আজ বাজপেয়ীকে দেখে এসে বলেন, ‘‘অটলজি সুস্থ হচ্ছেন। তবে প্রকৃতিও যেন অটলজিকে চুপ করিয়ে দিয়েছে। তা না হলে আজকের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কী-ই বা বলতেন তিনি?’’ রাতে রাহুলের জবাব দিতে নামে বিজেপি। দলের মুখপাত্র অনিল বালুনি বলেন, ‘‘প্রবীণদের সম্মানের পাঠ রাহুল গাঁধীর থেকে নেওয়ার দরকার নেই। তিনি জবাব দিন, নরসিংহ রাও, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কংগ্রেস কী করেছে?’’
মুম্বইয়ে দলের কর্মসূচিতেও আজ গুগলি ছোড়েন রাহুল। বলেন, ‘‘অটলজির বিরুদ্ধে লড়েছি। কিন্তু উনি যখন অসুস্থ, সবার আগে আমি গিয়েছি। কারণ, আমি কংগ্রেসের সিপাহি। আমি বুঝি, তিনি ভারতের জন্য কাজ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সে পদের সম্মান করি। তাঁর অসুস্থতায় পাশে আছি। এটাই আমাদের ইতিহাস, ধর্ম।’’ এর পরেই টুইট-বোমা ফাটান। সঙ্গে সংক্ষিপ্ত ভিডিয়ো। প্রথম দৃশ্যে দেখা যাচ্ছে, মোদীকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছেন আডবাণী। তাঁকে প্রণাম করছেন মোদী। দ্বিতীয় দৃশ্যে ২০১৮-র ছবি। মঞ্চে আডবাণী। সামনে এগিয়ে গেলেও এক সময়ের গুরুর দিকে ফিরেও তাকালেন না প্রধানমন্ত্রী মোদী।
আরও পড়ুন: মডেল থেকে ধর্মগুরু, আত্মঘাতী ভাইয়ুজি
মুম্বইয়েও রাহুল টেনে এনেছিলেন আডবাণী প্রসঙ্গ। বলেন, ‘‘২০০৪ ও ২০০৯ সালে আডবাণীর বিরুদ্ধে লড়ে আমরা তাঁকে হারিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদী) হিন্দু ধর্মের কথা বলেন। কিন্তু তাঁর গুরু কে? লালকৃষ্ণ আডবাণী। কিন্তু তিনি নিজের গুরুকে কী করছেন? প্রকাশ্য অনুষ্ঠানেও সম্মান রাখেন না। দেখে খারাপ লাগে।’’ রাহুলের কথায়, ‘‘শিষ্যের কাছে গুরুর থেকে বড় কেউ হন না। সংসদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যখন যাই, আডবাণীর সম্মান রক্ষা করি, তাঁর পাশে দাঁড়াই। এটাই আমাদের সঙ্গে ফারাক।’’ বাজপেয়ীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করে কংগ্রেস আজ বিবৃতিও দিয়েছে।
বিজেপি নেতারা মানছেন, আগেও বাজপেয়ীকে এইমসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু গত কাল থেকে রাহুল মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন। ক্ষিপ্রতার সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে বার্তা দিতে চেয়েছেন, মোদী গুরুকে কী ভাবে উপেক্ষা করেন। আজ সেটিই বলেছেন। বাজপেয়ী যত দিন হাসপাতাল থেকে বাড়ি না ফিরছেন, এই বিতর্ক চলবে। এইমসের সূত্র বলছে, সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন বাজপেয়ী। এখন সব দিক থেকেই পরিস্থিতি স্থিতিশীল। তবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে হাসপাতালেই রাখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy