Advertisement
E-Paper

অঙ্কের ভুলে তাল কাটল রাহুলের সফরে

অসমে সূচনাতেই হোঁচট খেল রাহুলের পদযাত্রা নিজস্ব সংবাদদাতা, গুয়াহাটি, ১২ ডিসেম্বর: ‘হোমওয়র্ক’ ভালই করেছিলেন। বিস্তর অঙ্ক কষে বাছাই করা হয়েছিল প্রথম ভোট প্রচারের এলাকাও। কিন্তু শেষ মুহূর্তে রাস্তা বদল করে তরী ডুবল যুবরাজের। যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিতে সাত কিলোমিটার হাঁটলেন রাহুল, সেই পদযাত্রার সূচনায় বরপেটা সত্রকে বাদ দেওয়ায় উল্টে রাহুলের বিরুদ্ধেই সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগে সরব হলেন স্থানীয় মানুষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:১৪
পদযাত্রার ফাঁকে। সাংসদ সুস্মিতা দেব ও মৌসম বেনজির নুরের সঙ্গে খোশমেজাজে রাহুল গাঁধী। ছবি: উজ্জ্বল দেব।

পদযাত্রার ফাঁকে। সাংসদ সুস্মিতা দেব ও মৌসম বেনজির নুরের সঙ্গে খোশমেজাজে রাহুল গাঁধী। ছবি: উজ্জ্বল দেব।

অসমে সূচনাতেই হোঁচট খেল রাহুলের পদযাত্রা

নিজস্ব সংবাদদাতা, গুয়াহাটি, ১২ ডিসেম্বর: ‘হোমওয়র্ক’ ভালই করেছিলেন। বিস্তর অঙ্ক কষে বাছাই করা হয়েছিল প্রথম ভোট প্রচারের এলাকাও। কিন্তু শেষ মুহূর্তে রাস্তা বদল করে তরী ডুবল যুবরাজের। যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিতে সাত কিলোমিটার হাঁটলেন রাহুল, সেই পদযাত্রার সূচনায় বরপেটা সত্রকে বাদ দেওয়ায় উল্টে রাহুলের বিরুদ্ধেই সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগে সরব হলেন স্থানীয় মানুষ।

রাহুলের সভার জন্য বরপেটাকে বেছে নেওয়ার প্রধান কারণ দু’টি। প্রথমত, এই জেলায় ৫০ শতাংশ মুসলিম ভোট। জেলার পাঁচটি কেন্দ্রের চারটিই এআইইউডিএফের হাতে। যে দু’টি এলাকায় (গাজিয়া ও মেধেরটারিতে) রাহুল মত বিনিময় ও জনসভা করলেন— সেই দু’টি আসনই এআইইউডিএফের হাতে। এআইইউডিএফের সঙ্গে মিত্রতা নিয়ে আলোচনা অমীমাংসিত। তাই বরপেটায় ভিত শক্ত করা কংগ্রেসের আশু প্রয়োজন ছিল। অন্য দিকে গোটা অসমেই বরপেটার গুরুত্ব বৈষ্ণবসন্ত শঙ্করদেবের কর্মভূমি হিসেবে। তাই চিত্রনাট্য অনুযায়ী ‘সদ্ভাবনা পদযাত্রা’র সূচনার কথা ছিল বরপেটা সত্র থেকে। সেখান থেকে সংখ্যালঘু প্রধান এলাকা দিয়ে হেঁটে তাঁর যাওয়ার কথা ছিল মেধেরটারি।

কিন্তু সকালে মেঘলা আকাশে রাহুলের কপ্টার উড়তে দেরি হয়। বরপেটার রাম রায় স্টে়ডিয়ামের অস্থায়ী হেলিপ্যা়ডে নেমে রাহুল সিদ্ধান্ত নেন, সত্রের রাস্তায় না গিয়ে নহাটি থেকে যাত্রা শুরু করবেন। সকাল থেকে সত্রে দাঁড়িয়েছিলেন সত্র-প্রধান ৭৪ বছরের বশিষ্ঠ দেব শর্মা। সত্রের সামনেই রাহুলকে দেখার জন্য ভিড়ও ছিল। অনেকেই ছিলেন বয়স্ক। কিন্তু শেষ অবধি রাহুল সত্রে না আসায় বৃদ্ধা মহিলারা চেঁচামেচি শুরু করেন। অস্ত্র লুফে নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সর্বানন্দ সোনোয়াল বলেন, ‘‘বরপেটায় এসে সত্রে না যাওয়া কত বড় অন্যায় সকলেই জানে। রাহুল সংখ্যালঘু ভোটের দিকেই তাকিয়ে। ৭ কিলোমিটার কেন হাজার কিলোমিটার হেঁটেও তিনি দলকে জেতাতে পারবেন না।’’

রাহুল হাঁটার ফাঁকে গাজিয়া সত্র ও অন্য একটি স্থানে মহিলা, স্কুলছুট কিশোর ও কংগ্রেসের বুথ ভিত্তিক ‘মাইক্রো ম্যানেজমেন্ট কমিটি’ ১২৬ জন কর্মীর সঙ্গে কথা বলেন। গাজিয়ায় স্কুলছুটদের সঙ্গেই মাছে-ভাতে সেরে নেন দুপুরের খাবার। তাঁর হাঁটার সঙ্গী ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীপুত্র তথা কলিয়াবরের সাংসদ গৌরব গগৈ, শিলচরের সাংসদ সুস্মিতা দেব এবং উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নূর। মেধেরটারির জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেন, ‘‘বিদেশি অপবাদে ভারতীয়দের উপরে অত্যাচার হতে দেবে না কংগ্রেস। সংখ্যালঘুদের জন্য হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হবে। ধর্ম নির্বিশেষে দরিদ্রসেবাই কংগ্রেসের আদর্শ। আমরা ধর্মের নামে রাজ্যকে ভাগ হতে দেব না।’’

ভাষণে রাহুল গাঁধীকে দেশের ভাবী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সম্বোধন করেন গগৈ। ভাষণ দিতে উঠে রাহুল জানান, তরুণ গগৈই আসন্ন নির্বাচনে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী। তিনি বলেন, ‘‘বিহার, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, রাজস্থানে মোদীজি মনগড়া প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছেন। কোনও কথা রাখেননি। এখানে সভা করতে এলে তাঁকে প্রশ্ন করবেন, কেন অসম বিশেষ সাহায্যপ্রাপ্ত রাজ্যের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হল?’’ রাহুল বলেন, ‘‘বিজেপি জানে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ না বাধালে তারা জিতবে না। দেশের কোথাও গোষ্ঠী সংঘর্ষ হলেই বিজেপির হাত থাকে। অসমে তাদের চক্রান্ত সফল হতে দেবেন না।’’ রাহুল আরও বলেন, ‘‘১৫ বছরে হিংসা জর্জরিত রাজ্যকে শান্ত, উন্নত রাজ্যে পরিণত করেছেন গগৈ। সব প্রতিশ্রুতিকে কাজে করে দেখিয়েছেন। তাই, দরিদ্রদের উন্নতি, রাজ্যের উন্নয়ন চাইলে কংগ্রেসকেই জেতাতে হবে।’’

বিহার ভোট নিয়ে রাহুল জানান, বিহারের মানুষ মোদীর স্বরূপ বুঝে তাঁকে যে ধাক্কা দিয়েছেন— তাতে মোদী কাবু। সভা চলার সময়ই রাহুল খবর পান তাঁর সত্রে না যাওয়া নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। সভা সেরে ফেরার পথে তিনি বরপেটা সত্র ঘুরে যান। কিন্তু ততক্ষণে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে।

rahul gandhi padayatra barapeta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy