সোহরাবুদ্দিন মামলা নিয়ে রাহুল গাঁধীর খোঁচার মোকাবিলায় ফের ব্লগ লিখলেন অরুণ জেটলি। যাঁকে এখন ‘ব্লগমন্ত্রী’ বলেই ডাকে কংগ্রেস। কিন্তু প্রবীণ এই আইনজীবী সুকৌশলে ছুঁলেনই না বিচারক বি এইচ লোয়ার মৃত্যুর প্রসঙ্গ।
সোহরাবুদ্দিন শেখ ভুয়ো হত্যা মামলায় ২২ জন অভিযুক্তকে গত সপ্তাহে বেকসুর খালাস করেছে মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত। ওই মামলার অভিযুক্তদের মধ্যে ছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তিনি অবশ্য আগেই মুক্তি পেয়েছিলেন। সোহরাবুদ্দিনের মৃত্যু বুলেটেই হয়েছে সে কথা স্বীকার করে নিয়েছে আদালত। কিন্তু সেই খুনের সঙ্গে অভিযুক্তরা জড়িত কি না, তার কোনও প্রমাণ পাননি বিচারক। এক সময়ে সোহরাবুদ্দিন মামলার শুনানি হয়েছিল বিচারক লোয়ার এজলাসে। ওই বিচারকের মৃত্যুর পরেও অমিত শাহের দিকে আঙুল তুলেছিল বিভিন্ন শিবির।
সোহরাবুদ্দিন-রায়ের পরে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী একটি টুইট করেছিলেন, ‘‘সোহরাবুদ্দিন, কওসর বি, তুলসীরাম প্রজাপতি, হরেন পাণ্ড্য, বিচারক লোয়া, প্রকাশ থম্বড়ে, শ্রীকান্ত খান্ডালকর- এঁদের কেউ মারেনি। এঁরা এমনি এমনিই মারা গিয়েছেন।’’
রাহুলের টুইটের ন’দিন পরে আজ তার উত্তর দিতে ব্লগ লেখেন জেটলি। শিরোনাম দেন, ‘সোহরাবুদ্দিন তদন্তকে কে হত্যা করেছে?’ জেটলির দাবি, গোড়া থেকেই তিনি বলে আসছেন তদন্তকারী সংস্থা পেশাদারিত্বের সঙ্গে সত্য অনুসন্ধান করেনি। বদলে কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিকে নিশানা করা হয়েছে। কে সোহরাবুদ্দিন তদন্তকে হত্যা করেছে, রাহুল গাঁধী বরং সেটা জানতে চাইলে ভাল করতেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আজ যাঁরা প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন, তাঁরা ক্ষমতায় থাকার সময়ে সেটি করেননি কেন?’’
এরপরেই জেটলি উদ্ধৃত করেছেন ২০১৩ সালে এই বিষয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে লেখা তাঁর চিঠি। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে সেই সময়ে সোহরাবুদ্দিন, তুলসী প্রজাপতি, ইশরাত জহান, হরেন পাণ্ড্য, রাজেন্দ্র রাঠৌর মামলায় সিবিআই তদন্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন জেটলি। কিন্তু রাহুল গাঁধীর একটি টুইট নিয়ে ন’দিন পর জেটলি এত বড় একটি ব্লগ লিখে ফেললেও বিচারক লোয়ার মৃত্যু নিয়ে একটিও কথা বলেননি তিনি। কংগ্রেসের অভিযোগ, শুধু লোয়া নন, তাঁর মৃত্যুর সঙ্গেই আইনজীবী শ্রীকান্ত খান্ডালকর ও জেলা আদালতের বিচারক প্রকাশ থম্বড়েরও রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। রাহুল গাঁধী সেটিও নিজের টুইটে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু জেটলি সেই প্রসঙ্গ সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন।
বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক বি এইচ লোয়ার রহস্যজনক মৃত্যুর পরে তাঁর পরিবারের একাংশ অভিযোগের আঙুল তুলেছিল অমিত শাহের বিরুদ্ধে। চলতি বছরে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে চার বিচারপতি সরব হওয়ার সময়েও লোয়া মামলার কথা উঠে এসেছিল। কপিল সিব্বলের মতো কংগ্রেসের আইনজীবী নেতারাও অভিযোগ করেন, শ্রীকান্ত ও প্রকাশ থম্বড়ের রহস্যজনক মৃত্যুর সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে লোয়া-মৃত্যুর। যদিও অমিত শাহ যাবতীয় অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছেন। কংগ্রেসের প্রশ্ন, তা সত্ত্বেও আজ জেটলি কেন লোয়া-বিতর্ক এড়ালেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy