Advertisement
E-Paper

সেপ্টেম্বরেই বিদায়, কেন্দ্রকে জানালেন রাজন

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর পদ থেকে তাঁকে সরানোর দাবিতে মাত্রাছাড়া ব্যক্তিগত আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর কার্যকালের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে ফের তাঁকেই গভর্নর পদে নিয়োগ করা হবে কি না, প্রকাশ্যে স্পষ্ট করেননি খোদ প্রধানমন্ত্রীও।

জয়ন্ত ঘোষাল

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৬ ০৩:৫৪

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর পদ থেকে তাঁকে সরানোর দাবিতে মাত্রাছাড়া ব্যক্তিগত আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর কার্যকালের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে ফের তাঁকেই গভর্নর পদে নিয়োগ করা হবে কি না, প্রকাশ্যে স্পষ্ট করেননি খোদ প্রধানমন্ত্রীও। এই অবস্থায় রঘুরাম রাজন নিজেই এ বার কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়ে দিলেন, সেপ্টেম্বরের পর আর গভর্নর পদে থাকতে চান না তিনি।

রাজনের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়াদ শেষের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যেতে চান তিনি। কোনও একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ভারতের সাম্প্রতিক অর্থনীতি নিয়ে সুনির্দিষ্ট গবেষণা শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। এর আগে আমেরিকার একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ৫৩ বছরের এই অর্থনীতিবিদ। দীর্ঘ ছুটির পর অধ্যাপকদের পুরনো পদে ফিরে আসার সুযোগ রয়েছে বহু বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাজনও একই ভাবে শিক্ষাজগতে ফেরার কথা ভাবছেন। স্বাভাবিক ভাবেই মনে করা হচ্ছে, দেশে তাঁকে ঘিরে যে রাজনৈতিক জলঘোলা শুরু হয়েছে, রাজন নিজেই এ বার তাতে দাঁড়ি টানতে চান। বস্তুত, তাঁর পরিবার ইতিমধ্যেই আমেরিকা পাড়ি দিয়েছে। তবে রাজনকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অবশ্য সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর বিদ্রোহ সত্ত্বেও রাজনকে জানিয়েছেন, তিনি তাঁকে গভর্নরের পদ থেকে অব্যাহতি দিতে রাজি নন। সাধারণত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নররা কার্যকালের দু’টি মেয়াদ পেয়ে থাকেন। এটি একটি প্রথা। বাধ্যতামূলক কোনও নিয়ম নয়। কিন্তু স্বামীর প্রকাশ্য বিরোধিতায় সমস্যায় পড়েছেন মোদী। তিনি জানেন, সেপ্টেম্বরের পরেও রাজনকে রাখা হলে স্বামী প্রকাশ্যে এমন গোলযোগ শুরু করে দেবেন, যাতে সরকারের অস্বস্তি আরও বাড়বে। আর সঙ্ঘ পরিবারের একাংশও স্বামীর পিছনে রয়েছে।

তবে রাজনের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। প্রথম দিকে সুদের হার না কমানোর অনমনীয় অবস্থানে রাজনের উপরে একটু চটেছিলেন তিনি। কিন্তু এখন স্বামীর আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মোদীকে জানিয়েছেন— প্রথমত, রাজনকে সরালে দেশে-বিদেশে ভুল বার্তা যাবে। কারণ গোটা দেশের শিল্পপতিরা, এমনকী বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক লবি ও সংস্থাগুলি রাজনকে ধরে রাখার পক্ষেই মত দিতে শুরু করেছেন। দ্বিতীয়ত, রাজন যে আর্থিক নীতি নিয়েছেন, তাতে বৃদ্ধির হার বেড়েছে। তুলনামূলক ভাবে বাজার তেজি হয়েছে। সুদের হার না কমানোর অনমনীয় অবস্থানে নেতাদের সাময়িক অসুবিধে হয় বটে, কিন্তু রাজন সংস্কারের পথ না ছেড়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

বিজেপির কিছু নেতা প্রশ্ন তুলেছেন, আরবিআই গভর্নরকে সরাতে প্রকাশ্যে এত কথা বলার সাহস স্বামী পান কী করে! তবে কি প্রধানমন্ত্রী বা দলীয় সভাপতি অমিত শাহের প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে তাঁর পিছনে? প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল বলছে, স্বামী কারও কথা শুনে চলেন না। আর এই ভ্রান্ত ধারণা রোখার জন্যই সেপ্টেম্বরের পরে রাজনকে আমেরিকা ফিরে যেতে দিতে চান না প্রধানমন্ত্রী। ‘প্রথা’ মেনেই আরও এক দফা গভর্নরের পদে তিনি রেখে দিতে চান রঘুরাম গোবিন্দ রাজনকে।

Raghuram Rajan Narendra Modi RBI Governor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy