জগন্নাথ মন্দির। —ফাইল চিত্র।
ভোগ খেয়েছেন জগন্নাথ। কিন্তু মন্দিরের সুমহান খাজাগজা ভক্তদের বরাতে নেই। বুধবারও এই আক্ষেপ ঘনিয়ে উঠল পুরীর মন্দিরে।
সেই সঙ্গে ভোগ পেতে দেরির জেরে জগন্নাথের রোজকার রুটিনে নড়চড় হচ্ছে বলে ব্যথিত মন্দিরের পোড়খাওয়া সেবায়েতরা। সব মিলিয়ে গত তিন দিন ধরে এখনও পর্যন্ত পুরীর মন্দিরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারল না। মন্দিরে জগন্নাথের ‘ভ্রাতৃকুল’ বলে পরিচিত দয়িতাপতিরা বলছিলেন, ভোগ রান্নার দায়িত্বে থাকা সুতারদের একাংশ ভক্তদের জন্য পর্যাপ্ত প্রসাদী ভোগ রাঁধতে রাজি হননি। শ্রীক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পারিবারিক পান্ডা বলে পরিচিত রঘুনন্দন গোচিকার বলেন, ভক্তদের বরাতেও অন্নভোগ প্রসাদ বা খাজাগজা কিছুই জোটেনি।
সমস্যার সূত্রপাত অবশ্য, ওড়িশা হাইকোর্টের একটি রায়ের জেরে। তাতে বলা হয়েছে, সেবায়েতরা হুটহাট প্রভুর গর্ভগৃহে ঢুকতে পারবেন না। যখন যাঁর কাজ থাকবে, সেই সেবায়েতই শুধু যাবেন। গত সোমবার এক সেবায়েতের মাতৃবিয়োগের জেরে অশৌচে তিনি পিছিয়ে আসেন। অন্য সেবায়েতরাও বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করে প্রভুর কাজ তাঁরা করতে পারবেন না। ফলে, রান্না করা ভোগ জগন্নাথদেবকে নিবেদন করা যায়নি। বিপুল পরিমাণ ভোগ পরে মাটির নীচে চাপা দেওয়া হয়। মন্দিরের মুখ্য প্রশাসক, আইএএস-কর্তা প্রদীপকুমার জেনার হস্থক্ষেপে রাতে কোনওমতে জগন্নাথদেবের একবেলা ভোগের ব্যবস্থা হয়। এত সব ডামাডোলে এবং প্রভুর সেবা নিয়ে সেবায়েতদের ‘সংশয়’ বা নানা ওজর-আপত্তিতে মঙ্গলবারও প্রভুর ভোগ হয়েছে দেরিতেই। ইতিমধ্যে ক্ষোভে উত্তাল ওডিশা বিধানসভা। এ দিন প্রভুর ভোগের বন্দোবস্ত হলেও আগের ভোগ নষ্ট হওয়ার বিহিত চেয়ে ভক্তদের জন্য রাঁধতে রাজি হননি তাঁরা। তবে মন্দিরের মুখ্য দয়িতাপতি জগন্নাথ সোয়াঁই মহাপাত্রের কথায়, ‘‘তাও প্রভুর ভোগ নিবেদন হয়েছে, এই রক্ষে! এক দিন অন্নভোগ না-হলে
অনর্থ ঘটত।’’ মন্দিরের সেবায়েতদের ভূমিকা নিয়ে হাইকোর্টে মামলার পরবর্তী শুনানি অবধি ডামাডোলের আশঙ্কা করছেন মন্দিরের অভিজ্ঞ সেবায়েতরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy