স্যাম পিত্রোদা। —ফাইল চিত্র।
ভারতের সংবিধান রচনায় বি আর অম্বেডকরের তুলনায় দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর অবদান বেশি ছিল বলে মন্তব্য করে আগেই বিতর্কে জড়িয়েছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী তথা প্রাক্তন বিজেপি নেতা সুধীন্দ্র কুলকার্নি। তাঁর সেই মতামত নিজের এক্স-হ্যান্ডলে শেয়ার করেও তা পরে মুছে দেন কংগ্রেসের ওভারসিজ শাখার প্রধান স্যাম পিত্রোদা। কিন্তু তাতে বিজেপির আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পায়নি কংগ্রেস। বিজেপি নেতাদের বক্তব্য কংগ্রেস দলিত-বিরোধী বলেই তারা এই মতকে সমর্থন করে। তারা অম্বেডকরকে অপমান করতে চায়।
শ্যাম পিত্রোদা যে লেখাটি নিজের এক্স-হ্যান্ডলে প্রকাশ করেছিলেন, সেটি সুধীন্দ্রর লেখা একটি নিবন্ধের অংশ। তাতে বলা হয়েছিল যে, সংবিধান এবং এর প্রস্তাবনায় নেহরু বেশি অবদান রেখেছিলেন, অম্বেডকর নয়। এই মন্তব্যের জন্য আগেই সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন সুধীন্দ্র। কিন্তু তিনি ক্ষমা চাইতে অস্বীকার করেছিলেন।
সুধীন্দ্র এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘‘আমি ডক্টর অম্বেডকরকে গভীর শ্রদ্ধা করি, কারণ তিনি হিন্দু সমাজে ন্যায়বিচার ও সাম্যের জন্য লড়াই করেছিলেন। তিনি বহু সমাজ সংস্কারের পথিকৃৎ ছিলেন। তথ্যের উপর ভিত্তি করে আমি একটি নিবন্ধ লিখেছিলাম যে, অম্বেডকরের চেয়ে নেহরুর অবদান বেশি ছিল। যাঁরা ইতিহাস পড়েছেন, তাঁরা এটা মেনে নেবেন। কারণ কংগ্রেস সংবিধান লেখার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি কংগ্রেস ‘পূর্ণ স্বরাজ’ প্রস্তাব পাস করে। তখন থেকেই নেহরুজি সংবিধান নিয়ে কাজ করেছেন।’’ তিনি আরও বলেন, অম্বেডকর নিজেই বলেছিলেন যে এটি তাঁর সংবিধান নয়। একই সঙ্গে কুলকার্নি জানিয়েছিলেন, ‘‘আমি এখন কোনও রাজনৈতিক দলে নেই। এক সময় বিজেপির সঙ্গে ছিলাম। আমার কথার রাজনৈতিক ব্যবহার বা অপব্যবহার করা উচিত নয়।’’
সুধীন্দ্রর এই লেখাটি সমাজমাধ্যমে শেয়ার করেও পিত্রোদা তা মুছে ফেলেন। কিন্তু কুলকার্নির মতকে সমর্থন করার জন্য কংগ্রেসের বিদেশ শাখার নেতা পিত্রোদার সমালোচনায় নেমে পড়ে গোটা গেরুয়া শিবির। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, বিজেপির কোনও নেতাই আডবাণীর অতি ঘনিষ্ঠ এই প্রাক্তন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী-সহ একাধিক বিজেপি নেতার অভিযোগ, অম্বেডকরের প্রতি কংগ্রেসের ‘বিদ্বেষ’ নতুন নয় এবং তারা এখনও এই নিবন্ধটিকে ‘সমর্থন’ করে তাঁর উত্তরাধিকার মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়ালের কথায়, ‘‘আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং কংগ্রেসকে প্রশ্ন করি যে, তারা এই মন্তব্যকে সমর্থন করে কি না।’’ মেঘওয়ালের কথায়, ‘‘পিত্রোদার মন্তব্য বাবাসাহেবকে অপমান করার ব্যাপারে কংগ্রেসের মানসিকতার প্রতিফলন।’’ বিজেপি নেতা শেহজাদ পুনাওয়ালা বলেন, ‘‘কংগ্রেসের মধ্যে অম্বেডকর-বিরোধী, দলিত-বিরোধী ডিএনএ রয়েছে। এই কথাগুলি স্যাম পিত্রোদার হতে পারে, কিন্তু এর পিছনে আবেগ সনিয়া এবং রাহুল গান্ধী দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy