উনিশের লোকসভা ভোট পর্যন্ত রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান বা উপ-সভাপতি পদের নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছে বিজেপি। রাজ্যসভা পরিচালনার এই ভোটকে ঘিরে লোকসভা ভোটের আগে বিরোধী ঐক্য যাতে গড়ে উঠতে না পারে, সে জন্যই নরেন্দ্র মোদী শিবির এই কৌশল নিচ্ছে।
শুরুতে বিজেপির তরফে সমঝোতার বিভিন্ন সূত্র দেওয়া হয়েছিল। প্রথমে অকালি নেতা, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দ্রকুমার গুজরালের ছেলে নরেশ গুজরালের নাম বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির কাছে রেখেছিল বিজেপি। কিন্তু সেই প্রস্তাবে এনডিএ-র বাইরের কোনও দলের সমর্থন পায়নি তারা। মোদী শিবিরের দ্বিতীয় প্রস্তাব ছিল, অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি কোনও আঞ্চলিক দল প্রার্থী দিলে বিজেপি তাকে সমর্থন করতে পারে। এমনকি, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা গুলাম নবি আজাদকে জানান, বিজেপি ও কংগ্রেস— দু’পক্ষই সমর্থন করতে পারে, এমন কোনও প্রার্থীর কথা ভাবে যেতে পারে। তবে ২০১৯-এর আগে কোনও বিরোধী দলই প্রকাশ্যে বিজেপির সঙ্গে যেতে চাইছে না। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের রণকৌশল হল, ডেপুটি চেয়ারম্যানের এই ভোট কিংবা মনোনয়নের প্রক্রিয়া শিকেয় তুলে রাখা।
সংবিধানে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যানের ভোট নিয়ে সবিস্তার সময়সীমার কথা বলা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের একজন সহকারী প্রয়োজন। রাজ্যসভা সূত্র বলছে, হামিদ আনসারি উপরাষ্ট্রপতি হয়ে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের পদে বসলেও সঙ্গে সঙ্গে ডেপুটি চেয়ারম্যানের নাম ঠিক হয়নি। কংগ্রেস নেতা পি জে কুরিয়েন দায়িত্ব নেন কয়েক মাস পরে। ফলে এ বার ওই পদে এই মুহূর্তে কাউকে বসানো না হলে অসুবিধা নেই।
আরও পড়ুন: আলোচনা কম বলেই দুর্নীতি স্বাস্থ্যে: অমর্ত্য
১৮ জুলাই বাদল অধিবেশন শুরু হয়ে চলবে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। শীতকালীন অধিবেশনও সংক্ষিপ্ত। পূর্ণ বাজেট হবে নাকি ভোট অন অ্যাকাউন্ট হবে, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে। এমনকি, প্রশ্ন উঠছে, বাজেট অধিবেশন আদৌ হবে নাকি শীতকালীন অধিবেশনের পরেই ভোটের দিন ক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাবে?
ডেপুটি চেয়ারম্যানের ভোটের সঙ্গে লোকসভা ভোটের সমীকরণ জড়িয়ে রয়েছে। কংগ্রেস নিজেদের প্রার্থী দিতে গিয়ে যদি দেখে অন্য কোনও বিরোধী দলের সমর্থন মিলছে না, সে ক্ষেত্রে মোদী-বিরোধী ঐক্য জোরদার করতে কোনও আঞ্চলিক দলকে সমর্থন করতে পারে।
মমতা বন্দোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়েছেন, কংগ্রেস এখনও কোনও প্রস্তাব দেয়নি। মমতা চাইছেন, কংগ্রেস কাকে চায়, তা আগে জানাক। বিজেডির প্রবীণ সাংসদ প্রসন্ন আচার্যের নামও তোলা হচ্ছে, যাতে বিজেপি তথা এনডিএ তাঁকে সমর্থন করতে পারে। কিন্তু বিজেডি এখনও এ প্রস্তাবে রাজি হয়নি। তাদের যুক্তি, এত দিন নবীন পট্টনায়ক সমদূরত্ব নীতি রক্ষা করেছেন। তাই লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির সমর্থন নিয়ে রাজ্যসভার পদে বসা তাঁর জন্য ভুল সিদ্ধান্ত হবে । টানাপড়েনে পুরো বিষয়টিই বিশ বাঁও জলে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy