নীরব মোদী।—ফাইল চিত্র।
দেশে ফিরলে জনরোষের শিকার হতে পারেন, এমনকি তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হতে পারে। তাই তিনি দেশে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন বলে দাবি করলেন আর্থিক কেলেঙ্কারি মামলায় অভিযুক্ত রত্ন ব্যবসায়ী নীরব মোদী। সিবিআই এবং ইডি-কে লেখা চিঠিতে এমনই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন নীরব।
১৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে নীরব মোদীর বিরুদ্ধে। জালিয়াতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার আগেই বছরের শুরুতে দেশ ছেড়ে চম্পট দেন তিনি। বিদেশে বসেই তদন্তে সব রকম সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কিছুতেই তাঁকে দেশে ফেরানো সম্ভব হয়নি। আদালতে কাছে তাই তাঁকে পলাতক ঘোষণা করার আর্জি জানিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। শনিবার মুম্বইয়ের বিশেষ আর্থিক তছরুপ আদালতে আবেদনটির শুনানি চলছিল। সেখানে হাজির ছিলেন নীরবের আইনজীবী বিজয় অগ্রবাল। নীরবের হয়ে সেখানেই এই কথা বলেন তিনি।
তিনি জানান, “সিবিআই এবং ইডি, দুই সংস্থাকেই চিঠি দিয়েছেন নীরব মোদী। নিরাপত্তার কারণে তদন্তে সহযোগিতা করতে পারছেন না বলে তাতে জানিয়েছেন। কারণ ইতিমধ্যেই তাঁর ৫০ ফুট লম্বা কুশপুতুল পোড়ানো হয়েছে। তুলনা করা হয়েছে রাবণের সঙ্গে। যেন ব্যাঙ্ক দুর্নীতির হর্তাকর্তা তিনি একাই। তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্রের প্রমাণও মিলেছে। এমনকি এখনও পর্যন্ত যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন তাঁদের পরিবার, ঋণদাতা এবং যে সকল গ্রাহকের গয়নাগাটি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি, তাঁদের তরফেও হুমকি পেয়েছেন তিনি। গোয়েন্দাদের সে কথা সরাসরি জানিয়েছেন আমার মক্কেল।”
আরও পড়ুন: ৪৮ ঘণ্টা পর ইভিএম পৌঁছল কালেকশন সেন্টারে! মধ্যপ্রদেশে ভোট কারচুপির অভিযোগ কংগ্রেসে
পলাতক ঋণ খেলাপিদের জন্য দেশে বিশেষ আইন রয়েছে (এফইও)। তার আওতায় নানা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় গোয়েন্দাদের। দেখাতে হয় গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। বিজয়ের অভিযোগ, ইডি-র তরফে তার কোনওটাই পূরণ করা হয়নি। তাই এ ভাবে তাঁর মক্কেলকে পলাতক ঘোষণা করা উচিত নয় বলে দাবি করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, “এ বছর ১ জানুয়ারি দেশ ছাড়েন নীরব মোদী। সেই সময় তাঁর বিরুদ্ধে একটাও অপরাধমূলক মামলা ছিল না। শুধুমাত্র সন্দেহজনক পরিস্থিতির দোহাই দেখিয়ে তাঁকে পলাতক ঘোষণা করতে উঠেপড়ে লেগেছেন গোয়েন্দারা। আমার মক্কেল কোনও ভাবেই দেশে ফিরতে চান না, সেটা কি প্রমাণ করতে পারবেন গোয়েন্দারা?”
তাঁর আরও দাবি, নীরব মোদী শিল্পী মানুষ। গয়না তৈরিতেই মগ্ন থাকতেন সারা ক্ষণ। টাকা পয়সার হিসাব সে ভাবে রাখতেন না। তাঁর অধীনে কর্মরত লোকজনই সে সব দেখতেন। যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই এখন গোয়েন্দাদের হেফাজতে। যা তথ্য দরকার তাঁদের কাছ থেকেই সংগ্রহ করতে পারেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: কুম্ভমেলা, তাই মার্চ পর্যন্ত প্রয়াগরাজে সব বিয়ে বাতিল করলেন যোগী!
বিজয়ের এই দাবি অবশ্য মানতে নারাজ ইডি। আদালতে তাঁদের প্রতিনিধি হিতেন বেনেগাঁওকর বলেন, “এফইও আইনের সঙ্গে ওঁর বক্তব্যের কোনও যোগ নেই। প্রাণের ভয় থাকলে পুলিশে অভিযোগ জানাতে পারতেন! কিন্তু তা তো করেননি! তাই এ সব কথা অযৌক্তিক।”
তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি যে নথিপত্র হাতে পেয়েছে, সেগুলি অনুযায়ী কিছু অসাধু ব্যাঙ্ককর্মীর মদতে ভুয়ো নথিপত্র দেখিয়ে পঞ্জাব ব্যাঙ্কের প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন নীরব মোদী ও তাঁর মামা মেহুল চোক্সি। বিষয়টি জনসমক্ষে আসার আগেই সুযোগ বুঝে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy