Advertisement
E-Paper

ফাঁকি ঠেকাতে ঘণ্টায় ঘণ্টায় হোয়্যাটসঅ্যাপে শিক্ষকদের ছবি

জেলার মাধ্যমিক স্কুলগুলির প্রধানশিক্ষকদের অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং তাতে হোয়াটসঅ্যাপ বাধ্যতামূলক ভাবে রাখার নির্দেশ দিল স্কুল দফতর। অসমের পাহাড়ি জেলা ডিমা হাসাওয়ের স্কুল পরিদর্শক গায়ত্রী নাইডিংয়ের এমন নির্দেশ কেন দিলেন তার ব্যাখ্যাতিনি নিজেই দিয়েছেন।

বিপ্লব দেব

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:২৩

জেলার মাধ্যমিক স্কুলগুলির প্রধানশিক্ষকদের অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং তাতে হোয়াটসঅ্যাপ বাধ্যতামূলক ভাবে রাখার নির্দেশ দিল স্কুল দফতর। অসমের পাহাড়ি জেলা ডিমা হাসাওয়ের স্কুল পরিদর্শক গায়ত্রী নাইডিংয়ের এমন নির্দেশ কেন দিলেন তার ব্যাখ্যাতিনি নিজেই দিয়েছেন।

তাঁর কথায়, দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযোগ আসছিল, অধিকাংশ শিক্ষক গ্রামের স্কুলগুলিতে পড়াতেই যাচ্ছেন না। শহরের বাড়িতেই বসে থাকছেন। সপ্তাহে একদিন বা দু’সপ্তাহে একদিন গিয়ে খাতায় সই করে আসছেন। এর সঙ্গে প্রধানশিক্ষকদের একাংশেরও যোগসাজশ রয়েছে। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে গায়ত্রী দেবী সব স্কুলের প্রধানশিক্ষকদের নিয়ে একটি হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছেন। স্কুল পরিদর্শকের নির্দেশ, প্রতিদিন স্কুলের সকালের প্রার্থনা থেকে শুরু করে ক্লাসে ক্লাসে শিক্ষকরা পড়াচ্ছেন কিনা তার ছবি তুলে গ্রুপে ঘণ্টায় ঘণ্টায় আপলোড করতে হবে। পাঠাতে হবে শিক্ষকদের হাজিরা খাতার ছবিও। অন্যথা হলে সরাসরি দায় বর্তাবে সংশ্লিষ্ট প্রধানশিক্ষকের উপর।

অসমের প্রত্যন্ত এই পাহাড়ি জেলার সরকারি স্কুলগুলির অবস্থা শোচনীয়। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকার স্কুলগুলিতে পড়াশোনা কার্যত কিছুই হচ্ছিল না। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটি বড় অংশ স্কুলে না গিয়ে শহরে বসেই দিন কাটাতেন। এর ফলে শিক্ষার গুণমান নামতে শুরু করে। প্রভাব পড়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে। গত বার মাধ্যমিকে বেসরকারি জেলার স্কুলগুলিতে পাশের হার ছিল ১০০ শতাংশ। সেই জায়গায় ১৫টি সরকারি স্কুলে পাশের হার ৩০ শতাংশেরও নীচে নেমে যায়। ৬টি স্কুলে এই হার ছিল শূন্য। সেখানে একজন ছাত্রছাত্রীও পাশ করতে পারেনি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে দেখা যায়, দিনের পর দিন শিক্ষকরা স্কুলে যাচ্ছেন না। পড়াচ্ছেন না।

পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা পাহাড়ি জেলার শিক্ষার হাল ফেরাতে এবং ফাঁকিবাজ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে স্কুল পরিদর্শক গায়ত্রীদেবীকে নির্দেশ দেন। এরপরই নড়েচড়ে বসেন স্কুল পরিদর্শক। প্রথমে ওই ২১টি স্কুলের শিক্ষকদের বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করার নির্দেশ দেন। গরমের ছুটি থেকে শুরু করে শীতের সময়, স্কুলগুলির ইংরাজি, বিজ্ঞান ও গনিত শিক্ষকদের ছুটি বাতিল করে তাঁদের স্পেশাল ক্লাস নেওয়ার নির্দেশ দেন। এমনি যাঁরা ক্লাস করেন না, তাঁদের আবার স্পেশাল ক্লাস! কার্যত তাতেও বিশেষ কাজ হয়নি।

এ বার গায়ত্রী দেবী ডিমা হাসাও জেলার সব সরকারি হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষকদের হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপে সামিল করেছেন। জানিয়ে রেখেছেন, পরের শাস্তি কিন্তু আরও কড়া। একেবারে চাকরি পর্যন্ত যেতে পারে। তবে গায়ত্রীদেবী জানিয়েছেন, এ বার কাজ হচ্ছে। স্কুলে শিক্ষকদের উপস্থিতির উন্নতি হয়েছে। হচ্ছে ক্লাসও।

WhatsApp Teachers Classroom
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy