Advertisement
০৪ মে ২০২৪

স্কুলে ছাত্রের গুলিতে জখম সহপাঠী

স্কুলের ব্যাগে বই খাতার সঙ্গেই অমিত বর্মা নিয়ে এসেছিল গুলি ভরা দু’টি দেশি পিস্তল। এক বন্ধুকে সেই পিস্তল দেখাতে দেখাতে একটি পিস্তল থেকে গুলি ছিটকে গেল। এই ঘটনায় সুধাংশু গুপ্ত নামে এক একাদশ শ্রেণির ছাত্র গুরুতর জখম হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রাঁচি শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৬ ০৮:৫৯
Share: Save:

স্কুলের ব্যাগে বই খাতার সঙ্গেই অমিত বর্মা নিয়ে এসেছিল গুলি ভরা দু’টি দেশি পিস্তল। এক বন্ধুকে সেই পিস্তল দেখাতে দেখাতে একটি পিস্তল থেকে গুলি ছিটকে গেল। এই ঘটনায় সুধাংশু গুপ্ত নামে এক একাদশ শ্রেণির ছাত্র গুরুতর জখম হয়েছে। আজ সকালে জামশেদপুরের একটি স্কুলের এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় অমিত বর্মা নামে ওই ছাত্রটিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কারণ অমিতই ব্যাগে করে দুটি দেশি পিস্তল এনেছিল এবং ওর হাত থেকেই গুলি চলে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জামশেদপুরের সাকচির একটি বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের এই ঘটনায় অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরে স্কুলের বাইরেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওই স্কুলের অন্যান্য ছাত্রের অভিভাবকরা খবর শুনে স্কুলে চলে আসেন। কে গুলি চালালো ও কী ভাবে গুলি চললো জানতে চান তারা। রাহুল মিশ্র নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘প্রথমে ভেবেছিলাম কোনও বন্দুকবাজ স্কুলে ঢুকে এলোপাথারি গুলি চালাতে শুরু করল নাকি? আমেরিকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্দুকবাজদের গুলি চালানোর ঘটনার কথা খবরের কাগজ পড়েছি। সেরকম কিছু আশঙ্কা করেছিলাম প্রথমে। আমার ছেলেকে সুস্থ না দেখা পর্যন্ত মনে শান্তি পাচ্ছিলাম না।’’

পুলিশ ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ সকালে তখনও ক্লাস শুরু হয়নি। সাড়ে সাতটায় স্কুলের মাঠে প্রার্থনা হয়। প্রার্থনার ঠিক আগে সবাই যখন মাঠে জমায়েত হতে যাচ্ছিল তখনই একাদশ শ্রেণ্র এ-সেকশন থেকে গুলির আওয়াজ শোনা যায়। স্কুলেরই এক শিক্ষক জানান, আওয়াজ শুনে তারা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি যে ক্লাসে গুলি চলেছে। তাঁরা ভেবেছিলেন ক্লাসে কেউ দুষ্টুমি করে বাজি ফাটিয়েছে। দৌড়ে এ-সেকশনে গিয়ে তাঁরা দেখেন, ক্লাসরুমের ভিতরে এক ছাত্র পড়ে মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছে। মেঝেতে রক্ত। অন্যান্য ছেলেরা আতঙ্কে ক্লাস থেকে পালাচ্ছে। ওই ছাত্ররাই অমিতের গুলি চালানোর কথা বলে। শিক্ষকরা সঙ্গে সঙ্গে অমিতকে পিস্তল-সহ ধরে ফেলেন। সুধাংশুকে টাটা মেন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সুধাংশুর কাঁধে গুলি লেগেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

প্রশ্ন উঠেছে অমিত কেন দু’টি গুলি ভর্তি পিস্তল নিয়ে স্কুলে এসেছিল? সত্যিই কী পিস্তল দেখাতে দেখাতে হঠাৎ গুলি চলেছে, নাকি অমিত ইচ্ছে করেই গুলি চালিয়েছে? স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা, স্বর্ণ মিশ্রের অবশ্য দাবি, ‘‘আহত ছাত্র সুধাংশু আমাদের সঙ্গে একটু কথা বলতে পেরেছে। ও জানিয়েছে বন্দুক দেখতে দেখতে আচমকাই গুলি ছুটে গিয়েছে। তবে এর পিছনে অন্য কিছু আছে কিনা তা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।’’ জামশেদপুরের এসএসপি অনুপ টি ম্যাথু জানান, ক্লাসে উপস্থিত অন্যান্য ছাত্রদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অমিতের সঙ্গে সুধাংশুর কোনও শক্রতা ছিল কিনা তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত অমিত নিম্ন মধ্যবিত্ত বাড়ির ছেলে। অমিতের বাবা উপেন্দ্র কুমার একটি বেসরকারি সংস্থায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন। অপরাধ জগতের সঙ্গে অমিতের কোনও যোগসূত্র এখনও পায়নি পুলিশ। তবে অমিত মানগোর যে এলাকায় থাকে, সেই এলাকায় বেশ কয়েকজন দাগি দুষ্কৃতীর আস্তানা আছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন: অমিত কাদের সঙ্গে মেলামেশা করত ও কোনও দুষ্কৃতী অমিতকে ওই দুই পিস্তল কোনও কারণে রাখতে দিয়েছিল কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, প্রধানশিক্ষিকা বলেন, ‘‘অমিতের বিরুদ্ধে গুণ্ডামি করার আগে কোনও অভিযোগ কখনও ছিল না। তবে পড়াশোনায় সে খুব ভাল নয়। এবার একাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় সে পাশ করতে পারেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

classmate shot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE