Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Ration Card

আধার সংযুক্ত না থাকায় ৩ কোটি রেশন কার্ড বাতিল অত্যন্ত গুরুতর বিষয়, বলল সুপ্রিম কোর্ট

অভিযোগ, রেশন না পাওয়ায় অভুক্ত থেকে ক্ষুধামৃত্যু হয়েছে কৌলি দেবীর মেয়ে সন্তোষীর। এ নিয়ে শীর্ষ আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা রুজু করেন তাঁরা।

ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২১ ২৩:৩৫
Share: Save:

আধার নম্বরের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযুক্তিকরণ না করার জন্য প্রায় ৩ কোটি কার্ড বাতিলের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বুধবার এমনটাই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। এ বিষয়ে কেন্দ্র ছাড়াও রাজ্য সরকারগুলির কাছে জবাব তলব করে নোটিস পাঠানোর নির্দেশ দিল দেশের শীর্ষ আদালত। বুধবার আদালত জানিয়েছে, আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে এই নোটিসের জবাব দিতে হবে।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এস বোবডের নেতৃত্বে বিচারপতি এএস বোপান্না এবং বিচারপতি ভি রামসুব্রহ্মণ্যমের বেঞ্চে আবেদনকারী ঝাড়খণ্ডের দুই দলিত মহিলা কৌলি দেবী এবং তাঁর বোন গুড়িয়া দেবীর দাবি ছিল, আধারের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযুক্তিকরণ না করার জন্য রেশন পাননি তাঁদের পরিবার। এমনকি অভুক্ত থেকে ক্ষুধামৃত্যু হয়েছে কৌলি দেবীর মেয়ে সন্তোষীর। এ নিয়ে শীর্ষ আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা রুজু করেন তাঁরা।

শীর্ষ আদালতের কাছে ওই দলিত পরিবারের তরফে আইনজীবী কলিন গঞ্জালভেসের আর্জি, রেশন কার্ড বাতিল করাটা মুখ্য বিষয় হলেও এর ফলে সামগ্রিক প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে আদালতের নজর দেওয়া উচিত। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল আমন লেখির পাল্টা দাবি, গঞ্জালভেস ভুল দাবি করছেন। রেশন কার্ড বাতিলের ফলে দেশে ক্ষুধামৃত্যুর মতো কোনও ঘটনা ঘটেনি। কাউকে বৈধ আধার ছাড়া রেশন দেওয়া থেকেও বঞ্চিত করা হয়নি। এ নিয়ে কেন্দ্র ইতিমধ্যেই তার বক্তব্য পেশ করেছে। তবে কৌলি দেবীদের আইনজীবী মতে, গোটা বিষয়টি একটি বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে দেখা উচিত।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বোবডের বক্তব্য, “আমরা কেন্দ্রের জবাব চাইছি। কারণ এতে আধার নম্বরের বিষয়টি জড়িত রয়েছে। এটা কোনও অন্য মামলা নয়। এ নিয়ে চূড়ান্ত শুনানি হবে। ৪ সপ্তাহের মধ্যে নোটিসের জবাব দিতে হবে।” আদালত জানিয়েছে, ২০১৩ সালের জাতীয় খাদ্যসুরক্ষা আইনের ১৪, ১৫ এবং ১৬ ধারার আওতায় এ ধরনের অভিযোগ নিষ্পত্তিতে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা ৪ সপ্তাহের মধ্যে জানাতে হবে।

প্রসঙ্গত, বৈধ আধার নম্বর না থাকায় ক্ষুধামৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে সমস্ত রাজ্য সরকারের কাছে ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর জবাব তলব করেছিল শীর্ষ আদালত। এ নিয়ে কেন্দ্রের দাবি ছিল যে রিপোর্ট প্রকাশিত, রেশনে খাদ্যসামগ্রী না পেয়ে অনাহারে মৃত্যুর ঘটনাগুলি ঘটেনি। তবে ঝাড়খণ্ডের সিমদেগা জেলার বাসিন্দা কৌলি দেবী এবং গুড়িয়া দেবীর দাবি, কৌলির পরিবারের কাছে বৈধ আধার নম্বর না থাকার জন্য ২০১৭ সাল মার্চ থেকে রেশন দিতে অস্বীকার করা হয়েছিল। যার জেরে ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর অনাহারে মারা যায় কৈলির ১১ বছরের মেয়ে সন্তোষী। তাঁদের আইনজীবীর দাবি, আধারের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযুক্তিকরণ না করার জন্যই ওই গরিব দলিত পরিবারেকে রেশনে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়নি। প্রধান বিচারপতি বোবডে বলেন, “আমাদের কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, তা বুঝতে পারছি। এ ধরনের মামলা বম্বে হাইকোর্টে উঠেছে। আমার মনে হয়, সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টে এ বিষয়ে মামলা রুজু করা উচিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE